টাইগ্রেসদের উড়ন্ত সূচনা পাকিস্তানকে হারিয়ে

আগের সংবাদ

খুনোখুনি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পুলিশ : অবৈধ অস্ত্রের পাশাপশি বেড়েছে বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার > চলছে পুলিশের বিশেষ অভিযান

পরের সংবাদ

কুমিল্লায় কার্যালয়ে ঢুকে গুলি, সিটি কাউন্সিলরসহ নিহত ২

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক, কুমিল্লা : কুমিল্লায় সন্ত্রাসীদের এলোপাতাড়ি গুলিতে ১৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সৈয়দ মো. সোহেল এবং আওয়ামী লীগ নেতা হরিপদ সাহা নিহত হয়েছেন। অতর্কিত এই হামলায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন আরো পাঁচজন। পূর্ব বিরোধকে কেন্দ্র করে গতকাল সোমবার বিকালে নগরীর পাথুরিয়াপাড়ার থ্রি স্টার এন্টারপ্রাইজে ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয়ে এই হামলা চালানো হয়। এরপর থেকেই ওই এলাকাসহ পুরো নগরীতে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
নিহত কাউন্সিলর সৈয়দ মো. সোহেল (৫২) কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য ও ১৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। ২০১২ ও ২০১৭ সালে তিনি কাউন্সিলর পদে নির্বাচিত হন। দ্বিতীয় মেয়াদে তিনি প্যানেল মেয়রও ছিলেন। নগরের সুজানগর এলাকার শাহজাহান মিয়ার ছেলে সোহেল ছিলেন ছয় ভাই ও চার বোনের মধ্যে দ্বিতীয়। তার স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়ে আছে। অন্যদিকে নবগ্রাম এলাকার বাসিন্দা হরিপদ সাহা (৫০) ছিলেন ১৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বিকালে কাউন্সিলর সৈয়দ মো. সোহেল নিজ কার্যালয়ে বসে রাজনৈতিক কর্মীদের নিয়ে একটি বৈঠক করছিলেন। এরই মধ্যে ৪টি মোটরসাইকেলযোগে আসা ৭-৮ জন মুখোশধারী সন্ত্রাসী তাকে লক্ষ্য

করে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে। এতে সোহেলের পেটে, বুকে, মাথায় কমপক্ষে ১০টি এবং হরিপদ সাহার পেটে এবং বুকে দুটি গুলি বিদ্ধ হয়। এছাড়া ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক মো. সোহেল চৌধুরী (৩৮), সদস্য মো. বাদল (২৮), কাউন্সিলরের সহযোগী রিজু (২৩), জুয়েল (৪০) এবং রাসেলও (৩২) গুলিবিদ্ধ হন। গুলির শব্দ শুনে আশপাশের মানুষ ঘটনাস্থলে গেলে হামলাকারীরা সীমান্তবর্তী বউবাজার এলাকার দিকে পালিয়ে যায়। আহতদের উদ্ধার করে কুমেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা ৬টার দিকে কাউন্সিলর সৈয়দ মো. সোহেল এবং হরিপদ সাহা মারা যান। বাকি চারজন কুমেকে চিকিৎসাধীন রয়েছে। কুমেক হাসপাতালের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ময়নাতদন্তের জন্য লাশ দুটি হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।
ঘটনার পর পর কাউন্সিলর কার্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, শত শত মানুষ পাথরিয়াপাড়া সড়কে বিক্ষোভ করছেন। র?্যাব ও পুলিশ ক্ষুব্ধ জনতাকে সরানোর চেষ্টা করছে। কাউন্সিলর কার্যালয়ের ভেতরে সোহেলের বসার স্থানে রক্তের ছোপ ছোপ দাগ। কার্যালয়ের চেয়ার ভাঙা।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জুয়েল বলেন, গুলির আওয়াজ শুনে রাস্তায় বের হয়ে দেখি সন্ত্রাসীরা এলোপাতাড়ি গুলি চালাচ্ছে। এ সময় আমার পায়ে গুলি লাগে। তারপর কী হয়েছে বলতে পারছি না।
কাউন্সিলর সোহেলের ভাগনে মোহাম্মদ হানিফ বলেন, সবাই আসরের নামাজ পড়ছিলেন। এ সময় প্রচণ্ড গোলাগুলির আওয়াজ কানে আসে। গিয়ে দেখি মামা রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন। আমি নিজে মামাকে কাঁধে করে বের করি।
স্থানীয়রা জানান, হামলাকারীরা ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের হতে পারে। চাঁদাবাজি ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ওই ওয়ার্ডের একটি সন্ত্রাসী গ্রুপের সঙ্গে বিরোধ চলছিল কাউন্সিলরের। আর ১৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হানিফ মিয়া বলেন, সন্ত্রাসী শাহ আলমের মাদক ব্যবসাসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ডের বিরোধিতা করে আসছিলেন কাউন্সিলর সোহেল। এ নিয়ে পূর্ব শত্রæতার জের ধরে সন্ত্রাসী শাহ আলম ও সুমনের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী এ হামলা চালিয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি।
কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরফানুল হক রিফাত বলেন, সোহেলের শরীরে অন্তত ১০টি গুলি লেগেছে। তিনি এলাকায় একজন জনপ্রিয় ব্যক্তি ছিলেন। আমরা এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আনওয়ারুল আজিম জানান, এ ঘটনায় জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি। এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তিনি বলেন, এ হামলার ঘটনায় যারা জড়িত তাদের অতি দ্রুতই গ্রেপ্তার করা হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়