কাগজ ডেস্ক : গত অক্টোবরে সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিক্রিয়ায় কয়েক সপ্তাহের রাজনৈতিক অস্থিরতার পর সুদানের সামরিক বাহিনী এখন ক্ষমতাচ্যুত আবদাল্লা হামদককে ফের প্রধানমন্ত্রী পদে বহাল করার পরিকল্পনা করছে। উম্মা পার্টির প্রধান ফাদলাল্লাহ বার্মা নাসির এমনটা জানিয়েছেন বলে গত রবিবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানা গেছে।
নাসির বলেন, সামরিক বাহিনীর সঙ্গে বেসামরিক রাজনৈতিক দলগুলোর এক চুক্তি অনুযায়ী রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দেয়া হবে এবং হামদক টেকনোক্র্যাটদের নিয়ে একটি স্বতন্ত্র মন্ত্রিপরিষদ গঠন করবেন।
যে আলোচনায় চুক্তিটি হয়েছে, সেখানে উম্মা পার্টির এ শীর্ষ নেতা হাজির ছিলেন। চুক্তির ঘোষণা দেয়ার আগে রবিবার সুদানের সার্বভৌম কাউন্সিল একটি জরুরি বৈঠক করবে বলে আলোচনার বিষয়ে অবগত একটি সূত্র রয়টার্সকে জানায়।
দীর্ঘদিনের শাসক ওমর আল বশিরকে উৎখাত করার পর সামরিক বাহিনীর সঙ্গে ক্ষমতা ভাগাভাগি করে নেয়া বেসামরিক জোট ফোর্সেস অব ফ্রিডম অ্যান্ড চেঞ্জের (এফএফসি) সবাই, নাকি শুধু কিয়দংশ এই চুক্তির অংশীদার, তা স্পষ্ট হওয়া যায়নি। অক্টোবরের অভ্যুত্থানের পর থেকে বিক্ষোভ করে যাওয়া বেসামরিক বিভিন্ন গোষ্ঠী সামরিক বাহিনী যেন রাজনীতি থেকে পুরোপুরি সরে যায় সেই দাবিও জানিয়ে আসছিল।
বেসামরিক রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে চুক্তির বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে সামরিক বাহিনীর প্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহানের গণমাধ্যম উপদেষ্টার কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। ২০১৯ সালে স্বৈরশাসক ওমর আল-বশিরকে উৎখাতের পর গণতন্ত্রের পথে অগ্রযাত্রাকে লাইনচ্যুত করে গত ২৫ অক্টোবর সুদানের সেনাবাহিনী ক্ষমতা পুরোপুরি নিজেদের হাতে তুলে নেয় ও হামদককে গৃহবন্দি করে। সামরিক বাহিনী হামদকের মন্ত্রিপরিষদকে বিলুপ্ত ঘোষণা করে এবং বশিরকে উৎখাতের পর সামরিক বাহিনীর সঙ্গে ক্ষমতা ভাগাভাগি চুক্তির আওতায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা বেসামরিক কর্মকর্তাদের অনেককে গ্রেপ্তার করে। ওই অভ্যুত্থানের পর হামদক সামরিক বাহিনীর সঙ্গে যে কোনো আলোচনার পূর্বশর্ত হিসেবে রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি ও অভ্যুত্থান-পূর্ববর্তী ক্ষমতা-ভাগাভাগি পুনর্বহাল চান বলে তার ঘনিষ্ঠ বেশ কয়েকটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছিল।
অক্টোবরের অভ্যুত্থানের পর দেশটিতে সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ হয়েছে। আন্দোলনকারীরা গতকাল রবিবারও বিক্ষোভের ডাক দেন। সুদানের গণতন্ত্রে উত্তরণে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে আসা পশ্চিমা দেশগুলো অক্টোবরের অভ্যুত্থানের নিন্দা জানিয়েছিল। তারা উত্তর আফ্রিকার দেশটিকে যে অর্থনৈতিক সহায়তা দিয়ে আসছে, তার কিছু অংশ স্থগিতও করে দেয়।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।