গুলশানের ইউনিমার্ট ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে

আগের সংবাদ

ধাক্কা কাটিয়ে চাঙ্গা অর্থনীতি

পরের সংবাদ

দ্বিধাদ্ব›েদ্ব বিশেষজ্ঞরা : টিকা কম আফ্রিকায় কোভিডও কম মৃত্যুও!

প্রকাশিত: নভেম্বর ২২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : বিশ্বের দরিদ্রতম মহাদেশ আফ্রিকা। আলোঝলসিত সভ্যতা থেকে দূরে। মজবুত স্বাস্থ্য পরিকাঠামো নেই। চিকিৎসক-নার্সও কম। টিকার জোগান নেই। কোভিড মহামারিতে আফ্রিকার গরিব দেশগুলোর কী হবে, তাই নিয়ে শুরু থেকেই বিশেষ চিন্তায় ছিল বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু আফ্রিকার বাস্তব পরিস্থিতি অন্য কথা বলছে। রহস্যজনকভাবে টিকা, চিকিৎসার বর্মহীন আফ্রিকায় সংক্রমণের প্রকোপ বেশ কম। আরো কম মৃত্যু। এ দেখে খোদ বিশেষজ্ঞরাও ধাঁধাঁর মধ্যে পড়ে গেছেন। খবর আনন্দবাজার।
সরজমিন, জিম্বাবুয়ের হারারের ব্যস্ত বাজার এলাকা। পকেটে মাস্ক নিয়ে ঘুরছিলেন ন্যাশা নদৌউ। তার আশপাশের সবারই হয়তো পকেটে মাস্ক পাওয়া যাবে, কিন্তু মুখে কিছু নেই। কেউ ফল-সবজি কিনতে এসেছেন, কেউ বেচতে এসেছেন।
নদৌউ বলেন, কোভিড-১৯ চলে গেছে। কবে শেষবার কোভিডে মারা যাওয়ার খবর শুনেছেন এখানে? তাহলে সঙ্গে মাস্ক রেখেছেন কেন? জবাব তৈরি ছিল নদৌউয়ের। বললেন, ও তো পকেট বাঁচাতে। পুলিশ ধরলে মাস্ক না থাকলেই ঘুষ নেবে। এই সপ্তাহে গোটা জিম্বাবুয়েতে নতুন করে করোনা সংক্রমণের খবর মিলেছে মাত্র ৩৩টি। মৃত্যুর কোনো খবর নেই। গোটা আফ্রিকা মহাদেশেই কোভিড সংক্রমণ কমেছে অনেকটাই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) জানিয়েছে, জুলাই মাস থেকে করোনা সংক্রমণ কমতে শুরু করেছে এই মহাদেশে। তবে কোনো দিনই সেখানে ঘরে-ঘরে কোভিড দেখা যায়নি।
গত বছর যখন করোনা-আতঙ্ক শুরু হয়, স্বাস্থ্য বিশারদরা আফ্রিকা নিয়ে প্রবল চিন্তায় পড়েন। আশঙ্কা করেন, লাখ লাখ মানুষ মারা পড়বেন এ মহাদেশে। যদিও এখন পর্যন্ত সুস্পষ্ট কারো জানা নেই, কতজন সেখানে সংক্রমিত হয়েছেন, কিংবা কতজন মারা গেছেন?
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, আফ্রিকার দেশগুলোতে যথাযথ পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা নেই, সরকারি নজরদারি নেই। ফলে বাস্তব পরিস্থিতি কী, তা কেউ জানে না। তবে সংক্রমণ বা মৃত্যু মারাত্মক বাড়লে আশপাশে চোখ রাখলেই বোঝা যায়। বিশেষজ্ঞরা স্বীকারও করেন, এখন কোভিড সংক্রমণ আরো কমেছে। কিন্তু যে কোনো সময়ে পরিস্থিতি ঘুরে যেতে পারে বলে সতর্কবার্তা উচ্চারণ করেন তারা।
কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্ব স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান ওয়াফা এল-সাদর বলেন, আফ্রিকা নিয়ে বিজ্ঞানীরা ধন্দে। রহস্যজনক ব্যাপার। আফ্রিকার কাছে টিকা নেই। কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পরিকাঠামো নেই। ইউরোপ-আমেরিকায় এ সবই রয়েছে, অথচ ওদের থেকে আফ্রিকার অবস্থা অনেক ভাল। গড়ে ৬ শতাংশেরও কম টিকাকরণ হয়েছে আফ্রিকায়। সেখানে ইউরোপ-আমেরিকায় টিকাকরণ হয়েছে ৭০-৮০ শতাংশ। কিন্তু গোটা ইউরোপের হালই ফের খারাপ; বিশেষ করে নাস্তানাবুদ হচ্ছে জার্মানি, অস্ট্রিয়া ও রাশিয়া।
কিছু বিশেষজ্ঞের বক্তব্য, আফ্রিকায় অল্পবয়সিদের সংখ্যা বেশি। গড় বয়স ২০ বছর। পশ্চিম ইউরোপের তরুণ প্রজন্মের গড় বয়স ৪৩। তাছাড়া আফ্রিকায় আধুনিক জীবনযাপন কম। তারা বাড়ির বাইরে খোলা আকাশের নিচে বেশি সময় কাটান, বদ্ধ জায়গায় থাকেন কম। তবে নি¤œ সংক্রমণ হারের পিছনে আরো কোনো কারণ থাকতে পারে কিনা যেমন- জেনেটিক, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের অনেকে আবার বলছেন, আফ্রিকায় ম্যালেরিয়া ও ইবোলার প্রকোপ বেশি। এই রোগে যারা আগে আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের কোভিড কাবু করতে পারছে না। আর এক দল প্রশাসনের কৃতিত্বও তুলে ধরতে চান। তাদের বক্তব্য, মালির মতো দেশও মহামারির আঁচ পেতেই সীমান্ত বন্ধ করে দেয়। ফলে বাইরে থেকে ভাইরাস দেশের মধ্যে ঢুকতে পারেনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়