গুলশানের ইউনিমার্ট ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে

আগের সংবাদ

ধাক্কা কাটিয়ে চাঙ্গা অর্থনীতি

পরের সংবাদ

খালেদাকে বিদেশ পাঠাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দুয়ারে জোট শরিকরা

প্রকাশিত: নভেম্বর ২২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মাধ্যমে সরকারপ্রধানের কাছে আবেদন করেছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের পাঁচ শরিক দল। কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহিমের (বীরপ্রতীক) নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের এই প্রতিনিধিদল গতকাল রবিবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দপ্তরে যায়।
ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপির) চেয়ারম্যান কে এম আবু তাহের, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) মহাসচিব শাহাদাৎ হোসেন সেলিম ছিলেন এই প্রতিনিধিদলে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সৈয়দ ইবরাহিম বলেন, আমাদের আসার উদ্দেশ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মাধ্যমে খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা, তাকে বিদেশে পাঠানোর বিষয়ে আবেদন করা। তিনি বলেন, লিখিত আবেদন জমা দিয়েছি, মুখেও ব্যাখ্যা করেছি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তরিকতার সঙ্গে কথাগুলো শুনেছেন। তিনি তা প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দেবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন। পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের বলেন, তাদের (বিএনপি জোট নেতাদের) আবেদন আমি যথাযথভাবে যেখানে প্রয়োজন, সেখানে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়ে দেব।
সৈয়দ ইবরাহিম এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, জোটের পক্ষ থেকে নয়, রাজনৈতিক দল হিসেবে নিজস্ব চিন্তা থেকে তারা খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর আবেদন নিয়ে সরকারের দ্বারস্থ হয়েছেন। বিএনপির ঊর্ধ্বতন মহলও বিষয়টি জানে। খালেদা জিয়া এত বেশি গুরুতরভাবে অসুস্থ যে দেশে চিকিৎসার মাধ্যমে তার সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা কম। সব প্রকার রাজনৈতিক মতপার্থক্যের ঊর্ধ্বে উঠে, রাজনীতির অতীতের ভুলভ্রান্তি ভুলে গিয়ে একান্তভাবে মানবিকতার দৃষ্টান্তস্বরূপ, সহমর্মিতা দেখিয়ে সরকার যেন খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি দেয়।
বিএনপি জোটের এ নেতা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছে ব্যক্তিগতভাবে আবেদন, তিনি অনুমতি দিলে হয় সরকার বন্দোবস্ত করে পাঠাবে বা দল বন্দোবস্ত করে পাঠাবে। এই কাজটি যদি করা হয়, আমরা মনে করি, বাংলাদেশের ইতিহাসে এটা সর্বশ্রেষ্ঠ মানবিকতা, উদারতা ও সৌজন্যবোধের দৃষ্টান্ত হিসেবে লিপিবদ্ধ থাকবে।
২০ দলের এ শরিক নেতা বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে এটাও বলেছি, ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত আমি ব্যক্তিগতভাবে সাক্ষী, বঙ্গবন্ধু কত উদার ও মহৎ ছিলেন। বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের ভুলভ্রান্তি তিনি কীরূপভাবে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখতেন। তাই আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেছি, প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি, আপনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা, বঙ্গবন্ধুর দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে মহানুভবতা দেখান।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, তাদের আবেদনটি ছিল যে, খালেদা জিয়া অসুস্থ, তিনি চিকিৎসা নিচ্ছেন, তিনি একদম জীবনের শেষ প্রান্তে এসেছেন, কাজেই তাকে আরো উন্নত চিকিৎসা দেয়ার জন্য বিদেশে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়া যায় কিনা। প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাদের একটি আবেদন এখানে নিয়ে এসেছেন।
আমি তাদেরকে যথার্থই বলেছি যে, এর আগেও প্রধানমন্ত্রীর কাছে খালেদা জিয়ার ছোট ভাই একটা আবেদন করেছিলেন। সেটাও আমি আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের জন্য পাঠিয়েছিলাম। আইনমন্ত্রী যথাযথভাবে পার্লামেন্টের প্রশ্নোত্তরের সময় বিস্তারিত বলেছেন। আমি এটা বলার পর তারা বলেছেন, এটা মানবিক কারণে দেয়া যায় কিনা, সেটা বিবেচনা করার জন্য আমার কাছে তারা পত্র দিয়েছেন। এটা আমি যথাযথভাবে যেখানে প্রয়োজন, সেখানে পাঠিয়ে দিব। বিএনপি চাইলে বিদেশ থেকে ডাক্তার বা কনসাল্ট্যান্ট আনতে পারে আবারো বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি আরো বলেন, বিদেশ থেকে যে কোনো বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এখানে আসতে পারে। বিদেশি ডাক্তার এলে যে চিকিৎসা ওখানে করা যায়, সেই চিকিৎসা এখানেও করতে পারেন। কিছুক্ষণ আগে ইউনাইটেড হাসপাতালের একজন ডাক্তার আমার এখানে এসেছিলেন, তিনিও আমাকে একই কথা বলেছেন। আবেদনকারীরা আইনের বাইরে গিয়ে কেবল মানবিক দিক বিবেচনায় নিয়েই খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর আবেদন নিয়ে এসেছেন বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়