মাদকবিরোধী অভিযান : রাজধানীতে গ্রেপ্তার ১২৪

আগের সংবাদ

যোগ্যরা নৌকা পাননি যে কারণে : ‘বিদ্রোহী’ তকমায় মনোনয়ন পাচ্ছেন না জনপ্রিয়রা, আর্থিক কারণেও যোগ্যদের নাম আসছে না কেন্দ্রে

পরের সংবাদ

পরিত্যক্ত পড়ে আছে জামালগঞ্জের সাচনা চিকিৎসালয় : সংস্কার করে ফের চালু দাবি

প্রকাশিত: নভেম্বর ২১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

অঞ্জন পুরকায়স্থ, জামালগঞ্জ (সুনামগঞ্জ) থেকে : হাওরবেষ্টিত সুনামগঞ্জের অবহেলিত জনপদ জামালগঞ্জ উপজেলা। ৩৩৮.৭৪ বর্গকিমি আয়তনে ৬টি ইউনিয়নের ২০০ গ্রামে ২ লক্ষাধিক জনগোষ্ঠী বাস করে। এই উপজেলায় স্বাধীনতার আগে থেকে সুরমা নদীর উত্তর পাড়ে সাবেক পিআইন নদীর মোহনায় সাচনা লামা বাজার দাতব্য চিকিৎসালয় ও সেলিমগঞ্জ বর্তমান সোনার বাংলা উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি ছিল চিকিৎসার একমাত্র অবলম্বন। স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে বঙ্গবন্ধুর দেয়া সোনার বাংলা উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটির অবকাঠামো নির্মিত হলেও ব্রিটিশ আমলের পরিত্যক্ত সাচনা দাতব্য চিকিৎসালয়টির অব্যবহৃত টিনশেড ঘরগুলো পরিত্যক্ত পড়ে আছে। উপজেলার মধ্যবর্তী সুরমা নদী প্রবাহিত হওয়ায় নদীর পূর্ব ও উত্তর প্রান্তে বেহেলী, জামালগঞ্জ উত্তর ও সাচনা বাজার ইউনিয়ন অবস্থিত। ৩টি ইউনিয়নে বাস করে সোয়া লাখ জনগোষ্ঠী। এছাড়াও বাংলাদেশের হাওরাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন বাণিজ্য কেন্দ্র হিসেবে খ্যাত সাচনাবাজার। বাজারের পাশেই এই দাতব্য চিকিৎসালয়টি ৪৬ শতক ভূমি নিয়ে কামলাবাজ মৌজায় অবস্থিত। পুরো জায়গায় বাজারের সব ময়লা আবর্জনার স্তূপ ফেলে পাহাড় করে রেখেছেন ছোট বড় ব্যবসায়ী ও পার্শ্ববর্তী বাসিন্দারা। ৩টি ইউনিয়নের লক্ষাধিক জনগোষ্ঠীর মা ও শিশু সেবাসহ সাধারণ প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। একজন গর্ভবতী মা সুরমা নদী পাড়ি দিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যেতে যেমন সময়ের প্রয়োজন তেমনি নদী পাড়াপাড়ে জীবনের ঝুঁকির আশঙ্কাও বেশি। ৩টি ইউনিয়নের সচেতন জনগোষ্ঠীর দাবি পুরাতন এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসার সেবায় একটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গড়ে উঠুক। এ ব্যাপারে উপকার ভোগী উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রজব আলী বলেন, সাচনা দাতব্য চিকিৎসালয়টি পরিত্যক্ত থাকায় বাজারের সব ময়লা আর্বজনা ফেলে ভয়ানক পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। নীরবে বখাটেদের আনাগোনা বেশি থাকে। তৎকালীন জেলা প্রশাসক সাবের হোসেন চৌধুরী ও আব্দুল আহাদ মহোদয়ের কাছে সাচনা দাতব্য চিকিৎসালয়টি চালু করে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে উপযুক্ত করার আবেদন করেছিলাম। উভয়েই আশ্বাস দিয়েছিলেন, কিন্তু এখনো আমরা বঞ্চিত, তবুও আশায় রইলাম।
বেহেলী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান অসীম তালুকদার বলেন, আমার ইউনিয়ন হাওরের দুর্গম এলাকায় অবস্থিত। জনগণের স্বাস্থ্যসেবা পেতে হলে সুরমা নদী পাড়ি দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যেতে হয়, সাচনা দাতব্য চিকিৎসালয়টি যদি চালু হয় কিছুটা হলেও হয়রানি ও জীবনের ঝুঁকি থেকে রেহাই পাব। সাচনা বাজার ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আতাউর রহমান বলেন, ৩টি ইউনিয়নের সব জনগোষ্ঠীর একমাত্র স্বাস্থ্যসেবার কেন্দ্র ছিল, পাক-ব্রিটিশ আমলে অনুন্নত স্বাস্থ্যসেবা পেলেও ডিজিটাল যুগে এসে আমরা স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মঈন উদ্দিন আলমগীর বলেন, স্বাস্থ্য সেবার জন্য অত্যন্ত জরুরি সাচনা চিকিৎসালয়। এটির সংস্কার ও পুনর্নির্মাণের জন্য আমাদের পক্ষ থেকে অনেক প্রতিবেদন পাঠিয়েছি। এটা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিষয়। উপজেলা চেয়ারম্যান ইকবাল আল আজাদ বলেন, স্বাধীনতার পর থেকেই জামালগঞ্জের সুরমার উত্তর পাড়ের মানুষ স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। অথচ উপজেলার একমাত্র স্বাস্থ্যকেন্দ্র ছিল সাচনা এই দাতব্য চিকিৎসালয়টি। শুনেছি এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি চালুর জন্য উপজেলা পরিষদ ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ থেকে অনেক আবেদন নিবেদন দেয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগের অবহেলা ও সুদৃষ্টি না থাকার কারণে বঞ্চিত হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা থেকে। এ সরকার স্বাস্থ্যসেবায় আন্তরিক, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে এই চিকিৎসালয়টি চালু করার জন্য আমি অচিরেই স্বাস্থ্য বিভাগীয় দপ্তরে আবেদন পাঠাব।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. শামস উদ্দিন বলেন, সাচনা হাসপাতালটি স্বাস্থ্য উপযোগী করতে সংস্কারের জন্য অনেক চেষ্টা করছি। এটা স্বাস্থ্য বিভাগীয় বিষয়, কর্তৃপক্ষের নজরে আছে, এলাকার পক্ষ থেকে এমপি মহোদয়ের মাধ্যমে তদবির করান। আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, যে বা যারা বিচ্ছিন্নভাবে দখল করার চেষ্টা করছে কর্তৃপক্ষের আদেশ পেলেই সব পরিষ্কার করে দেব।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়