মাদকবিরোধী অভিযান : রাজধানীতে গ্রেপ্তার ১২৪

আগের সংবাদ

যোগ্যরা নৌকা পাননি যে কারণে : ‘বিদ্রোহী’ তকমায় মনোনয়ন পাচ্ছেন না জনপ্রিয়রা, আর্থিক কারণেও যোগ্যদের নাম আসছে না কেন্দ্রে

পরের সংবাদ

কবে ছন্দে ফিরবেন মাহমুদউল্লাহ

প্রকাশিত: নভেম্বর ২১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে না দল, না তিনি ছন্দে আছেন। আরব আমিরাতের বিশ্বকাপে আট ম্যাচের মধ্যে একটি ফিফটি ছাড়া সব ম্যাচে ছন্দহীন ছিলেন টাইগার অধিনায়ক। পাকিস্তানের বিপক্ষে চলতি সিরিজেও তার ব্যাট হাসছে না। গত পাঁচ মাসে ২৩টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচের মধ্যে তার অর্ধশতক ২টি, ডাক মেরেছেন ২টি, চার ম্যাচে আবার পৌঁছাতে পারেননি দুই অঙ্কের ঘরে। বিশ্বকাপে পারফরম্যান্সের ভরাডুবির পর চলতি পাকিস্তান সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৬ এবং দ্বিতীয় ম্যাচে ১২ রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি।
কবে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ছন্দে ফিরবেন আর দলকে ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে বের করে নিয়ে আসবেন, সে অপেক্ষায় ১৮ কোটি ক্রিকেটপ্রেমী। গত পাঁচ মাসে জিম্বাবুয়ে, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এবং সর্বশেষ পাকিস্তানের বিপক্ষে চলমান টি-টোয়েন্টি সিরিজ। এসব ম্যাচের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ঘরের মাঠে দুর্দান্ত ছিল বাংলাদেশ। দুর্দান্ত ছিল ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ড সিরিজেও। বিদেশের মাটি বলতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচের মধ্যে দুই ম্যাচ জিতে সিরিজ জয়। কিছু ম্যাচে বাংলাদেশ সফলতা পেলেও ব্যর্থ ছিলেন টাইগার ব্যাটসম্যানরা। সফল ছিলেন না মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ নিজেও। গত ২৩ ম্যাচের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ঘরের মাঠে ৫২ এবং বিশ্বকাপে পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে ৫০ রানের ইনিংস ছাড়া তার বলার মতো কোনো ইনিংস নেই। যদি ৩০ কেও ভালো ইনিংসের কাতারে ফেলা হয়, তাহলে সঙ্গে আরো ৪টি ইনিংস যোগ করা যায়।
টাইগার অধিনায়কের ছন্দপতনের বিষয়ে খুব বেশি দূরে না গিয়ে পাকিস্তান সিরিজ নিয়েই আলোচনায় আসা যাক। তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ১২৭ রান সংগ্রহ করে। ম্যাচ-পরবর্তী সাক্ষাৎকারে মাহমুদউল্লাহ নিজেই জানান পিচ ভালো থাকায় প্রথমে ব্যাট নিয়েছেন তারা। সুতরাং এখানে মন্থর উইকেটের প্রশ্ন আসছে না। টাইগার ব্যাটসম্যানরা তো ব্যর্থই, ব্যর্থ টাইগার দলপতি নিজেও। নিজেদের ঘরের মাঠে রিয়াদ ১১ বল খেলে ম্যাচটিতে মাত্র ৬ রান তুলতে সক্ষম হন। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে টাইগার অধিনায়ক ১৫ বলে করেন মাত্র ১২ রান। পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের শেষ ম্যাচে হয়তো সাইলেন্ট কিলার জ¦লে উঠবেন, সে প্রত্যাশায় ১৮ কোটি ক্রিকেটপ্রেমী।
এর আগে বিশ্বকাপে আট ম্যাচে খেলে বাংলাদেশ। সবকটি ম্যাচে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এসব ম্যাচে বাংলাদেশ মাত্র জয় পায় ২টি ম্যাচে। এর মধ্যে সুপার টুয়েলভের পাঁচ ম্যাচের সবকটিতে ব্যর্থ লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। ব্যর্থ টাইগার দলপতিও। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের ট্রাম্প কার্ড ছিলেন তিনি। কিন্তু আরব আমিরাতে আট ম্যাচে তার রান সংখ্যা ছিল মাত্র ১৬৯ রান। আসরে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ব্যাটসম্যানদের তালিকায় তার অবস্থান ছিল ১৮তম। অথচ স্কটল্যান্ড, নামিবিয়া, আফগানিস্তানের ব্যাটসম্যানরাও তার তুলনায় বেশ এগিয়ে ছিলেন। নামিবিয়ার ডেবিড ভিসা ছিল তালিকার ছয়ে। বিশ্বকাপে তার বলার মতো ইনিংস ছিল পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে বাছাইপর্বের ম্যাচ। ওই ম্যাচে তিনি ২৮ বলে ৫০ রানের ইনিংস খেলেন। ৩০ রানের ঘরে তার ইনিংস ছিল একটি, বাকি ম্যাচগুলোতে জ¦লে ওঠেনি তার ব্যাট। বিশ্বকাপের মূলপর্বে তার পাঁচ ইনিংসের রান সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ১০*, ১৯, ৩১*, ৩, ১৬।
রান খরায় মাহমুদউল্লাহ ভুগছেন গত পাঁচ মাস ধরে। যার শুরুটা জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে গত জুলাইয়ে তিন ম্যাচের সিরিজ দিয়ে। ওই সিরিজের প্রথম ম্যাচে ১৫ রান করেন। দ্বিতীয় ম্যাচে পূরণ করতে পারেননি দুই অঙ্কের ঘর। আউট হন ৪ রান করে। তৃতীয় ম্যাচে অবশ্য ৩৪ রানের একটি ইনিংস খেলেন তিনি। এরপর ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া সিরিজ। এই সিরিজে যদিও তিনি একটি অর্ধশতক রানের ইনিংস খেলেন। কিন্তু ডাক মারেন দুই ম্যাচে। বাকি দুই ম্যাচের কোনো ইনিংসে পার করতে পারেননি ২০ রানের ঘর। অজিদের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ সিরিজে তার ইনিংসগুলো যথাক্রমে ২০, ০, ৫২, ০ এবং ১৯। আবার ৫২ রানের ইনিংসটি খেলতে তিনি খেলেন ৫৩টি বল। টি-টোয়েন্টিকে এমন বেমানান স্কোরের নিয়ে সমালোচনা করতে গেলে প্রশ্ন উঠতে পারে মিরপুরের মন্থর উইকেট নিয়ে। একই ম্যাচে সাকিব আল হাসান ১৭ বলে ২৬ এবং আফিফ হোসেন ১৩ বলে ১৯ রানের ইনিংস খেলেন। ফিফটি পর্যন্ত যেতে স্ট্রাইক রেট নিশ্চয় আরো বাড়ার কথা। এরপর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে কিছুটা উন্নতি লক্ষ্য করা যায় তার ব্যাটিংয়ে। তবে তেমন কোনো বড় ইনিংসের মার দেখা যায়নি তার ব্যাট থেকে। সিরিজে তিনি ১২০ রান তোলেন। বড় ইনিংস বলতে ওই সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে রিয়াদ ৩৭ রানে অপরাজিত থাকেন। সিরিজের চতুর্থ ম্যাচে তিনি অপরাজিত থাকেন ৪৩ রানে। মিডল অর্ডারে মাহমুদউল্লাহ বাংলাদেশের আশা ভরসার প্রতীক। ভক্তরা তাকে ভালোবেসে নাম দিয়েছেন সাইলেন্ট কিলার। তিনি জ¦লে উঠবেন, বাংলাদেশকে রান খরা থেকে বের করে নিয়ে আসবেন। মাহমুদউল্লাহ ১৮ কোটি ভক্তের প্রত্যাশা পূরণ করে আবার নিদাহাস ট্রফির মতো শেষ দিকে ওভার বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দলকে জিতিয়ে বুক উঁচু করে মাঠ ছাড়বেন।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের অভিষেক ২০০৭ সালে কেনিয়ার বিপক্ষে। এরপর তিনি একে একে খেলে ফেলেছেন ১১২টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। যেখানে তার মোট সংগ্রহ ১৯৫৮ রান। টি-টোয়েন্টিতে তার ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের ইনিংস ৬৪* রার, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২০১২ সালে। ২০১৮ সাল থেকে তিনি বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক। তার অধীনে বাংলাদেশ ৩৮ ম্যাচের মধ্যে জয়ের দেখা পেয়েছে ১৫টিতে, বিপরীতে হেরেছে ২৩ ম্যাচে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়