যে কারণে টিকায় ব্যয়ের হিসাব দিতে নারাজ মন্ত্রী

আগের সংবাদ

কঠিন বার্তা দিল আওয়ামী লীগ : বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্নে আপস নয় > শেখ হাসিনা ছাড়া কেউ অপরিহার্য নয় > শৃঙ্খলা ভঙ্গকারীদের জন্য অশনি সংকেত

পরের সংবাদ

মিরপুরে দুর্দান্ত তাসকিন

প্রকাশিত: নভেম্বর ২০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : পাকিস্তানের বিপক্ষে ব্যাটসম্যানদের স্বল্প রানের সংগ্রহ। জয় পেতে বোলারদের করতে হবে সর্বাত্মক চেষ্টা। টি-টোয়েন্টির সেরা ব্যাটসম্যান বাবর আজমকে শিকার করে তাসকিন আহমেদ বাংলাদেশকে ফেরালেন লড়াইয়ে। বিপদে পড়া সফরকারীদের একটু একটু করে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন দ্বিতীয় উইকেটে নামা ফখর জামান। তাকেও শিকার করে দলকে ফের জয়ের আশা দেখান তাসকিন। কিন্তু শেষ দিকে অন্য দুই পেসার মোস্তাফিজুর রহমান ও শরিফুল ইসলামের বোলিং ব্যর্থতায় ম্যাচটি হারে বাংলাদেশ। ৪ ওভারে ৩১ রানের বিনিময়ে ২ উইকেট শিকার করেন তাসকিন। উইকেট নেয়ার পাশাপাশি ব্যাট হাতেও জ¦লে ওঠেন এই টাইগার। এর আগে বিশ্বকাপের শেষ কিছু ম্যাচে দুর্দান্ত ছিল তাসকিন।
ইনিংসের শুরুতে বাংলাদেশকে আশার আলো দেখান মোস্তাফিজুর রহমান। তার বলে বোল্ড হয়ে মাঠ ছাড়েন মোহাম্মদ রিজওয়ান। কিন্তু তখনো মাঠে ছিলেন পাকিস্তানের বড় তারকা বাবর আজম। তাকে দুর্দান্ত বোলিংয়ে ফেরান তাসকিন আহমেদ। ইনিংসে চতুর্থ ওভারে তার বল পুল করতে গিয়ে টাইমিং মেলাতে পারেননি বাবর আজম। কিন্তু তার ব্যাটের কানায় বল লেগে চলে যায় উইকেটরক্ষক সোহানের হাতে। তাসকিন আউটের জন্য আবেদন করলেও, রিভিউয়ের জন্য আপিল করেননি। এর দুই বল পর তাসকিন নিজেই উইকেট আদায় করে নেন। পাকিস্তানের অধিনায়ক বোল্ড তাসকিনের বলে। তার বল কাট করতে গিয়ে উইকেটে টেনে আনেন। ১০ বলে ৮ রান করে ফেরেন টি-টোয়েন্টির নম্বর ওয়ান ব্যাটসম্যান।
দুই ওপেনার বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ান সাজঘরের ফেরার পর শূন্য হাতে মাঠ ছাড়েন শোয়েব মালিক ও হায়দার আলী। ২৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে পাকিস্তান। সেখান থেকে দলকে উদ্ধার করেন দ্বিতীয় উইকেটে মাঠে নামা ফখর জামান। তাকে সঙ্গ দেন খুশদিল শাহ। দুজনে গড়ে তোলেন ৫৬ রানের জুটি। এরপরই দলের ত্রাতা হয়ে আসেন তাসকিন। বাউন্সি বলে কট বিহাইন্ডের ফাঁদে ফেলেন ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিতে থাকা ফখর জামানকে। বল কিছুটা নিচু হয়ে এলেও গø্যাভস বন্দি করতে ভুল করেননি টাইগার উইকেটরক্ষক তাসকিন আহমেদ। বোলিং নয় ব্যাটিং ব্যর্থতার দিনে দলের হয়ে শেষ দিকে ৩ বলে এক ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে ৮ রান করেন তাসকিন। পাকিস্তানের বিপক্ষে ব্যাট হাতে রান পান মাত্র তিন ব্যাটসম্যান। আফিফ হোসেনের ৩৬, সোহানের ২৮ এবং মেহেদী হাসানের ৩০ রানের ওপর ভর করে ১২৭ রান সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। অবশ্য তাসকিনের ৮ রানের ইনিংস না থাকলে সংগ্রহটা ১২০-এর ঘরের থেকে যেত।
এর আগে গত আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড সিরিজে প্যাভিলিয়নে বসে সময় কাটিয়েছেন তাসকিন। সুযোগ পেয়েছিলেন অবশ্য নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে একটি ম্যাচে। সে ম্যাচে তিনি ৩৪ রানের বিনিময়ে শিকার করেন ১ উইকেট। দুই সিরিজে প্যাভিলিয়নে বসে এক ম্যাচের প্রস্তুতি দিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সপ্তম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যাত্রা করেন তাসকিন। অংশ নেন বাছাইপর্বের সবকটি ম্যাচে। স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি তিনি। উইকেট পেলেও ম্যাচটিতে বেশ খরুচে ছিলেন তিনি। ৩ ওভারে ২৮ রান খরচা করে তুলে নেন ১ উইকেট।
বাছাইপর্বের দ্বিতীয় ম্যাচে ওমানের বিপক্ষেও একাদশে মাঠে ছিলেন তাসকিন। এই ম্যাচে ৪ ওভারে ৩১ রান দিলেও কোনো উইকেটের দেখা পাননি তিনি। ম্যাচটিতে প্রথমে বেশ খরুচে থাকলেও পরে ভালো বল করেন বাংলাদেশের গতির স্টার। তবে বাছাইপর্বের তৃতীয় ম্যাচে পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে দুর্দান্ত ছিলেন তিনি। ৩.৩ ওভার বল করে ১২ রান দিয়ে তুলে নেন ২ উইকেট। কিন্তু মূলপর্বের প্রথম দুই ম্যাচে শ্রীলঙ্কা ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে একাদশে রাখা হয়নি তাকে। বাংলাদেশও সাফল্যের দেখা পায়নি ওই দুই ম্যাচে। তৃতীয় ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে একাদশে আবার ডাকা হয় গতির স্টারকে। উইকেট না পেলেও ৪ ওভারে মাত্র ১৭ রান দেন তিনি। বাংলাদেশও ক্যারিবীয়দের ১৪২ রানে বেঁধে রাখতে সক্ষম হয়। কিন্তু ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ম্যাচটি হারে ৩ রানের ব্যবধানে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সুপার টুয়েলভের চতুর্থ ম্যাচেও হারে বাংলাদেশ। তবে এই ম্যাচে কিছুই করার ছিল না তার। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ সবকটি উইকেট হারিয়ে মাত্র ৮৪ রান তুলে নেয়। বোলারদের আর কিবা করার ছিল এই ম্যাচে। তাও যথসাধ্য চেষ্টা করেছেন তাসকিন। ৪ ওভারে ১৮ রান দিয়ে তুলে নিয়েছেন ২ উইকেট। বিশ্বকাপে নিজেদের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে ঝড় তুলতে থাকা অসট্রেলিয়ার অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চকে বোল্ড আউট করেন তিনি।
টি-টোয়েন্টিতে তাসকিনের অভিষেক হয় ২০১৪ সালে বিশ্বকাপ আসরে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সে ম্যাচে দুর্দান্ত বল করে তিনি ২৪ রানের বিনিময়ে তুলে নেন ১ উইকেট। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তাসকিন ১১টি ম্যাচ খেলেছেন। শিকার করেছেন ১০ উইকেট। বিশ্বকাপে তাসকিনের এটি তৃতীয় আসর। তবে তার সেরা বোলিং স্পেল (১২/২) চলতি আসরেই, পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত তাসকিন খেলেছেন ৩১টি টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ। এসব ম্যাচে তিনি শিকার করেছেন ২৩ উইকেট।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়