যে কারণে টিকায় ব্যয়ের হিসাব দিতে নারাজ মন্ত্রী

আগের সংবাদ

কঠিন বার্তা দিল আওয়ামী লীগ : বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্নে আপস নয় > শেখ হাসিনা ছাড়া কেউ অপরিহার্য নয় > শৃঙ্খলা ভঙ্গকারীদের জন্য অশনি সংকেত

পরের সংবাদ

জন্মদিনের অনুষ্ঠানে চসিক মেয়র : বঙ্গবন্ধুর কারামুক্তিতে ইন্দিরা গান্ধী কঠোর পদক্ষেপ নেন

প্রকাশিত: নভেম্বর ২০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : মুক্তিযুদ্ধ এবং তৎপরবর্তী সময়ে বাংলাদেশকে সর্বোচ্চ সহায়তাকারী ভারতের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর ১০৫তম জন্মদিন বর্ণাঢ্যভাবে পালন করেছে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব। ইন্দিরা গান্ধীর প্রতি সম্মান জানাতে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে ‘ইন্দিরা গান্ধী কর্নার’ করারও ঘোষণা দেন প্রেস ক্লাব সভাপতি আলী আব্বাস। গতকাল শুক্রবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। এতে প্রধান আলোচক ছিলেন ভারতের সহকারী হাইকমিশনার অনিন্দ্য ব্যানার্জি। ইন্দিরা গান্ধী শুধু স্বাধীনতা যুদ্ধে সহযোগিতা নয়, স্বাধীনতার পর পাকিস্তানের কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধুকে মুক্ত করতে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। তা না হলে এই মহান নেতাকে ফিরে পাওয়া যেত না বলে মন্তব্য করেন মেয়র।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিটি মেয়র রেজাউল করিম বলেন, বাঙালি জাতির স্বাধীনতার কাণ্ডারি বঙ্গবন্ধুর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর যোগ্য নেতৃত্বকে শানিত করেছেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বাঙালির পরম বন্ধু শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী। তিনি যদি এক কোটির বেশি বাঙালিকে আশ্রয় না দিতেন, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ না দিতেন, প্রবাসী সরকার গঠনের সুযোগ করে না দিতেন তাহলে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য আরো অনেক বেশি রক্ত প্রবাহিত হতো। তিনি আরো বলেন, শুধু স্বাধীনতা যুদ্ধে সহযোগিতা নয়, স্বাধীনতার পর পাকিস্তান কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধুকে মুক্ত করতে তিনি কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। তা না হলে আমরা হয়তো আমাদের এই মহান নেতাকে ফিরে পেতাম না। প্রকৃত বন্ধুত্বের প্রমাণ হয় সুখে-দুঃখে রাজার আলয়ে। ভারত আমাদের চুক্তিকৃত বন্ধু নয়, দুর্দিনে বন্ধুত্বের প্রমাণ দিয়ে চির আপন হয়েছেন।
প্রধান আলোচকের বক্তব্যে অনিন্দ্য ব্যানার্জি বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালরাতে স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে স্বাধীনতাকামী বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। তারা নারকীয় হত্যাযজ্ঞ শুরু করে।
কোটি মানুষ প্রাণের ভয়ে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতে আশ্রয় নেয়। তখন ইন্দিরা সরকার তাদের খাদ্য ও জীবনের নিরাপত্তা দেয়। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরের আ¤্রকাননে গঠিত বাংলাদেশ সরকার তখন পাকিস্তানি বাহিনীর ক্রমাগত আক্রমণে সরকার পরিচালনা কঠিন হয়ে পড়লে এগিয়ে আসেন ইন্দিরা গান্ধী। তিনি ভারতের কলকাতায় অবস্থান করে অস্থায়ীভাবে সরকার পরিচালনার সব ব্যবস্থা করে দেন। কলকাতা অবস্থান করেই প্রবাসী সরকার পৃথিবীব্যাপী স্বাধীন বাংলাদেশের পক্ষে জনমত গড়ে তোলে।
তিনি বলেন, শুধু তাই নয়, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র গঠন করে বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগের পাশাপাশি সংবাদ, গান, আবৃত্তির মাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রেরণার ব্যবস্থা করেন শ্রীমতি গান্ধী। এই সময় দিল্লিতে দিনব্যাপী ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অব বাংলাদেশের আয়োজনের ব্যবস্থা করেন তিনি। এই সম্মেলনে ৮০ দেশের ৭০০ জনপ্রতিনিধি অংশ নেয়। পরবর্তী সময়ে তিনি বিশ্ব জনমত গঠন ও বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন দেশে চিঠি পাঠান। তিনি ’৭১-এ পূর্ববঙ্গ থেকে আশ্রয় নেয়া সব বাঙালিদের ভারতে আশ্রয় দিয়ে তাদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করেন। ১৯৭১ এর সেপ্টেম্বরে সব সমস্যা মোকাবিলা করে তিনিই স্বীকৃতি দেন বাংলাদেশকে। তিনি একজন মহীয়সী নারী।
চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব সভাপতি আলী আব্বাসের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাশেম, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সহসভাপতি সালাউদ্দিন মো. রেজা, বিএফইউজের সহসভাপতি শহীদুল আলম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহসিন কাজী, সিইউজের সাধারণ সম্পাদক ম শামসুল ইসলাম। সভাপতির বক্তব্যে আলী আব্বাস আগামীতে চট্টগ্রামে প্রেস ক্লাবে ইন্দিরা গান্ধী কর্নার স্থাপনের উদ্যোগ নেয়ার ঘোষণা দিয়ে বলেন, ইন্দিরা গান্ধী এগিয়ে না এলে দেশ স্বাধীন হতো কিনা তা নিয়ে আলোচনার অবকাশ আছে। চট্টগ্রাম শহরে একটি ইন্দিরা গান্ধী স্কয়ার বা কর্নার করার জন্য তিনি সিটি মেয়রকে অনুরোধ জানান।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়