মানিলন্ডারিং মামলা : হাইকোর্টে জামিন পাননি এসপিসি ওয়ার্ল্ডের শারমিন

আগের সংবাদ

জাহাঙ্গীর আজীবন বহিষ্কার : আ.লীগের সভায় সিদ্ধান্ত, মেয়র পদ হারাতে পারেন জাহাঙ্গীর > খালেদার টার্গেট আমি : প্রধানমন্ত্রী

পরের সংবাদ

বিয়ের জন্য চাপ : গর্ভবতী প্রেমিকাকে হত্যা করে নদীতে ভাসায় প্রেমিক

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বিয়ের পরে পুরনো প্রেমিক আমিনুল ইসলামের (৩০) সঙ্গে আবারো যোগাযোগ হয় নিপা আক্তারের (২২)। তবে প্রেমের বিষয়টি স্বামী জেনে গেলে ছেলেসহ নিপাকে বাবার বাড়িতে রেখে আসে। এর মধ্যে আবারো দুজন প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে সন্তান সম্ভবা হয়ে পড়েন নিপা। এ সময় প্রেমিককে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকেন। একপর্যায়ে নিপার হাত থেকে নিস্তার পেতে তাকে খুনের সিদ্ধান্ত নেয় আমিনুল। এরই ধারাবাহিকতায় প্রেমিকাকে নৌকায় মেঘনা নদীতে নিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে লাশ নদীতে ফেলে দেয়া হয়।
চাঞ্চল্যকর নিপা আক্তারের হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত আমিনুলের বন্ধু সুজন মিয়াকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গতকাল বৃহস্পতিবার বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেন পিবিআইয়ের নরসিংদী জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) এনায়েত হোসেন মান্নান। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে তদন্ত সংস্থাটির রাজধানীর ধানমন্ডির প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। আমিনুলসহ এই কিলিং মিশনে অংশ নেন মোট ৭ জন। এর মধ্যে আমিনুলের বন্ধু সুজন মিয়া ছাড়াও চাচাতো ভাই জহিরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই। আর বাকি ৪ আসামি বর্তমানে উচ্চ আদালত থেকে জামিনে রয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত দুজনের আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তির পরিপ্রেক্ষিতে পিবিআই নরসিংদী জেলার এসপি এনায়েত হোসেন বলেন, আমিনুলের সঙ্গে নিপার দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু আমিনুলের বাবা তাদের সম্পর্ক মেনে নেননি, বরং নিপার বাবাকে দিয়ে অন্যত্র বিয়ে দিতে সহায়তা করেন। সেখানে নিপা এক বছর সংসার করার পর তার একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয়।
একপর্যায়ে আমিনুল নিপার স্বামীকে তাদের অতীতের প্রেমের কাহিনী বলে দেয়। এতে স্বামী ক্ষিপ্ত হয়ে নিপাকে সন্তানসহ বাবার বাড়িতে রেখে আসেন। এর মধ্যে নিপার স্বামী অন্যত্র বিয়ে করে ফেলেন ও তার সঙ্গে আমিনুলের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সম্পর্কের একপর্যায়ে নিপা গর্ভবতী হয়ে পড়েন। আমিনুল নিপার বাচ্চাটি নষ্ট করার জন্য চিকিৎসকের কাছে গেলে, এটি সম্ভব হবে না বলে জানায় চিকিৎসক। পরে আমিনুলকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকে নিপা। এর থেকে মুক্তি পেতে আমিনুল অন্য সহযোগীদের নিয়ে নিপাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। সে অনুযায়ী, গত বছরের ২৪ এপ্রিল সন্ধ্যার পর নিপাকে বিয়ের কথা বলে নৌকাযোগে মেঘনা নদীতে নিয়ে যায়। মাঝ নদীতে নিয়ে গামছা দিয়ে শ্বাসরোধ করে ও কাঠ দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে নিপার মৃত্যু নিশ্চিত করে আমিনুল ও তার সহযোগীরা। পিবিআইর এ কর্মকর্তা বলেন, নিপাকে হত্যার পর চরের কোথাও লাশটি চাপা দেয়ার পরিকল্পনা ছিল তাদের। কিন্তু নদীর সব দিকে জেলেদের উপস্থিতি থাকায় উপায় না দেখে নিপার মরদেহ নদীতে ভাসিয়ে দেয় তারা। হত্যায় ব্যবহৃত গামছা ও তাদের সঙ্গে থাকা কোদাল নদীতে ফেলে দেয়। এমনকি নৌকাটিও অন্যত্র বিক্রি করে দেয় জড়িতরা। পরে যদিও নৌকাটিকে আলামত হিসেবে সংগ্রহ করতে পেরেছে পিবিআই। ৪০ কিলোমিটার দূর থেকে অজ্ঞাত হিসেবে ভাসমান মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। ময়নাতদন্ত শেষে আঞ্জুমানে মফিদুলের সহায়তায় মরদেহটি দাফন করা হয়। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখে পরিবার গিয়ে নিপাকে শনাক্ত করে। এ ঘটনায় হত্যা মামলা করতে গিয়ে পরিবার নানা ধরনের ভয়ভীতির সম্মুখীন হয়। পরে নিপার মা কোহিনুর বেগমের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী নরসিংদী সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়।
এক প্রশ্নের জবাবে পিবিআইর এসপি এনায়েত হোসেন মান্নান বলেন, প্রধান অভিযুক্ত আমিনুল বিদেশে পলাতক বলে শোনা যাচ্ছে কিন্তু বিষয়টি আমরা এখনো নিশ্চিত নই, আমরা তাকে খুঁজছি। এছাড়া গত বছরের ৬ জানুয়ারি কিলিং মিশনে অংশ নেয়া জহিরুল ইসলামকে রমনা থানাধীন মগবাজার টিএনটি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া আসামি সেলিম, খাইরুল ইসলাম, নুরুল ইসলাম ও আতিক উচ্চ আদালত থেকে জামিনে রয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়