মানিলন্ডারিং মামলা : হাইকোর্টে জামিন পাননি এসপিসি ওয়ার্ল্ডের শারমিন

আগের সংবাদ

জাহাঙ্গীর আজীবন বহিষ্কার : আ.লীগের সভায় সিদ্ধান্ত, মেয়র পদ হারাতে পারেন জাহাঙ্গীর > খালেদার টার্গেট আমি : প্রধানমন্ত্রী

পরের সংবাদ

জয়পুরহাটের ছনের তৈরি পণ্য যাচ্ছে বিদেশে

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক, জয়পুরহাট : সদর উপজেলার হেলকুন্ডা গ্রামের মাহবুব আলম ডলার ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন দেখতেন গরিব, অসহায় ও অবহেলিত নারীদের জন্য কিছু করার। এজন্য একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফ্যাশন ডিজাইন ও মার্চেন্ডাইজিংয়ের ওপর পড়াশোনা করেন। এরপর ২০১৮ সালে ম্যানেজার পদে যোগ দেন বিডি ক্রিয়েশন নামে একটি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের পাবনা ইউনিটে।
সেই প্রতিষ্ঠানের কাজের অভিজ্ঞতা ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাওয়া জ্ঞানের সমন্বয়ে নিজ গ্রামে ছোট ভাইকে নিয়ে গড়ে তোলেন ‘মা হ্যান্ডিক্রাফটস’ নামে একটি সংগঠন। প্রথমে ২০ জন নারীকে প্রশিক্ষণ দিয়ে ছন ও খড় দিয়ে তৈরি করেন শৌখিন কিছু পণ্য।
এসব পণ্য বাসার সৌন্দর্য বৃদ্ধির পাশাপাশি ব্যবহার করা যায় ঝুড়ি, বালতি, ডাইনিং ও ফুলের টব হিসেবে। বিদেশে এসব পণ্যের বেশ চাহিদা রয়েছে। সেই চাহিদাকে কাজে লাগিয়ে এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি দেশে এসব পণ্য রপ্তানি করেছেন মাহবুব। আর এ পণ্য তৈরির কাজ করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন আশপাশের গ্রামের অনেক নারী।
সরজমিন সদর উপজেলার হেলকুন্ডা, পাইকপাড়া, বামনপুর, সগুনা, টুকুরমোড়, পারুলিয়া, হানাইল, আধাইল, পাঁচুর চক, মুজিবনগর, কেশবপুর, নতুনহাট, জলাটুলা গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি গ্রামেই একজন নারীকে সুপারভাইজার করে ১৫-২০ জনের টিম তৈরি করছে নানান পণ্য। তাদের হাতে তৈরি হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন ছনের ঝুড়ি, ফুলদানি, ফুলের টব। এসব পণ্য তৈরিতে গ্রামের অসচ্ছল নারীদের যেমন কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে তেমনি শৈল্পিক কাজে তাদের মর্যাদাও বৃদ্ধি পাচ্ছে সমাজে। হেলকুন্ডা গ্রামের রোকসানা বেগম, টুকুর মোড় এলাকার অর্চনা রানী, কেশবপুর গ্রামের নাজমা আক্তার জানান, ‘মা হ্যান্ডিক্রাফটস’ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে তারা বাড়ির কাজের ফাঁকে বিভিন্ন গৃহস্থালি পণ্য তৈরি করেন। এতে বাড়িতে বসেই অর্থ উপার্জনের সুযোগ তৈরি হয়েছে। পরিবারকে অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করতে পারছেন। একটি পণ্য তৈরি করে ২০-৫০ টাকা পর্যন্ত আয় করা যায়। বেশি পণ্য তৈরি করলে বেশি আয়।
উদ্যোক্তা মাহবুব আলম বলেন, আশা করছি কয়েক হাজার নারীকে এ কাজে সম্পৃক্ত করতে পারব। লক্ষাধিক টাকা খরচ করে পর্যায়ক্রমে কয়েকশ নারীকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। তারপর তাদের উৎপাদিত পণ্য ইউরোপ, আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। এতে গ্রামের অসচ্ছল নারীরা বাড়ির কাজের ফাঁকে আয় করছেন এবং তাদের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার খরচসহ পরিবারকে সহযোগিতা করতে পারছেন। সরকার থেকে ঋণ সহযোগিতা দিলে আরো অনেক নারীর কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারব। পুরানাপৈল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম সৈকত বলেন, অনেক নারীর কর্মস্থান হয়েছে এখানে। এ উদ্যোগে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
জয়পুরহাট জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সাবিনা সুলতানা বলেন, ব্যক্তিগত উদ্যোগে নারীরা এসব কাজ করায় তাদের অর্থনৈতিক দৈন্যতা কমছে। সেই সঙ্গে কমছে ঝগড়া-বিবাদ ও নারী নির্যাতন। এ কারণে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর থেকে তাদের আরো প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়