মানিলন্ডারিং মামলা : হাইকোর্টে জামিন পাননি এসপিসি ওয়ার্ল্ডের শারমিন

আগের সংবাদ

জাহাঙ্গীর আজীবন বহিষ্কার : আ.লীগের সভায় সিদ্ধান্ত, মেয়র পদ হারাতে পারেন জাহাঙ্গীর > খালেদার টার্গেট আমি : প্রধানমন্ত্রী

পরের সংবাদ

খালেদা জিয়ার কী অসুখ সবার মুখে কুলুপ কেন? জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে : ফখরুল > শনিবার গণঅনশন বিএনপির

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল জানিয়েছেন, তিনি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। কিন্তু কী তার অসুখ- অসুস্থতা কোন পর্যায়ে, নতুন কোনো জটিলতা নাকি আগের রোগের ধারাবাহিকতা- এসব বিষয়ে স্পষ্ট করেননি ফখরুল। এ নিয়ে মুখ খুলছেন না খালেদার পরিবারের কোনো সদস্য বা সংশ্লিষ্ট চিকিৎকরাও। সবাই শুধু বলছেন, ‘বিএনপি নেত্রীকে বিদেশে নিয়ে যেতে হবে, বিদেশে নিলেই সুস্থ হয়ে যাবেন তিনি’। এ ক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠেছে, খালেদার অসুস্থতা নিয়ে কেন এই রাখঢাক। সত্যিই তিনি নতুন কোনো জটিল অসুস্থতায় ভুগছেন? নাকি পুরনো অসুস্থতারই অবনতি হয়েছে; নাকি দলীয় চেয়ারপারসনের অসুস্থতা নিয়ে বরাবরের মতোই রাজনীতি করছেন বিএনপি নেতারা?
বিএনপি বা পরিবারের কেউ মুখ না খুললেও সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা দিন দিন আরো জটিল হচ্ছে। পুরনো অসুখের সঙ্গে একাধিক নতুন ও জটিল উপসর্গ যুক্ত হয়েছে। সূত্রমতে, খালেদা জিয়ার রক্তে হিমোগেøাবিন দ্রুত কমে যাচ্ছে। চিকিৎসদের ধারণা, হিমোগেøাবিন কমতে থাকা জটিল রোগের ইঙ্গিত। হিমোগেøাবিনের মাত্রা বাড়তে দেয়া হচ্ছে রক্ত। এরই মধ্যে তার লিভার থেকে ফ্লুইড নিয়ে পরীক্ষা করতে দেয়া হয়েছে। লিভার জটিলতার কারণে তিনি রক্তবমি করেছেন। শরীরে খনিজ অসমতা চরম আকার ধারণ করেছে। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে দেয়া হচ্ছে ইনস্যুলিন। অক্সিজেনের লেভেল ওঠানামা করায় লাগছে অক্সিজেন সাপোর্ট। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে সিসিইউতে এভাবেই জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে প্রতিটি মুহূর্ত লড়ছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।
এভার কেয়ার হাসপাতালে গত ১২ অক্টোবর ভর্তির

পর ৭ নভেম্বর বাসায় ফেরেন খালেদা জিয়া। তখন তার শারীরিক পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছিল। ছয়দিন পর ১৩ নভেম্বর আবারো হাসপাতালেই ফিরতে হয় তাকে। এর আগে ১১ নভেম্বর বৃহস্পতিবার পরিবারের পক্ষ থেকে বিএনপি প্রধানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেয়ার অনুমতি চেয়ে সরকারের কাছে পঞ্চমবারের মতো আনুষ্ঠানিক আবেদন জানানো হয়। তবে এখনো এ সংক্রান্ত কোনো ইতিবাচক সাড়া মেলেনি।
দুইটি কিডনি ‘ড্যামেজ’, হার্টও ‘অ্যাফেক্টেড’ : করোনা পরবর্তী জটিলতার অংশ হিসেবে খালেদা জিয়ার হার্ট ও কিডনি বেশ ভালো মাত্রায় আক্রান্ত হয়েছে; বিএনপির পক্ষ থেকে এমন তথ্য জানানো হয় চলতি বছরের মে মাসে। ৬ মাস পর তার কিডনি এবং হার্টের জটিলতা বেড়েছে। নির্ভরযোগ্য যোগ্য সূত্র জানায়, বিএনপি প্রধানের দুইটি কিডনিই ‘ড্যামেজ’ হয়ে গেছে। অপারেশনের মাধ্যমে কিডনি পরিবর্তন যোগ্য হলেও তার অন্যান্য অনেক শারীরিক জটিলতার কারণে চিকিৎকরা ঝুঁকি নিতে পারছেন না। তারা জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার হার্টের অবস্থাও ভালো নয়। বর্তমানে তার শরীরে পেইন কিলারও কাজ করছে না।
বায়োপসি রিপোর্টে ক্যান্সারের আলামত! : গত ১২ অক্টোবর খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। এরপর ২৫ অক্টোবর তার ছোট একটি অস্ত্রোপচার হয়। করা হয় বায়োপসি পরীক্ষা। এ বিষয়ে স্বচ্ছ ধারণা পেতে তা যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে পাঠানো হয়। গত ১ নভেম্বর যুক্তরাজ্য থেকে রিপোর্টের ফলাফল আসে চিকিৎকদের হাতে। সূত্র জানায়, বায়োপসি রিপোর্টে ক্যান্সারের আলামত পাওয়া গেছে। যদিও বিএনপির পক্ষ থেকে কেউই এ বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি।
খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার স্বার্থে বিদেশ নিতে বারবারই সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে আসছে বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, খালেদা জিয়া জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। তার চিকিৎসার ব্যাপারে এভারকেয়ার হাসপাতালের চিকিৎসকরা প্রাণপণ চেষ্টা করছেন। তিনি আক্রান্ত হয়েছেন বিভিন্ন রকম অসুখে। এই অসুখ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, তার দেশের বাইরে চিকিৎসা করানোটা সবচেয়ে বেশি জরুরি, একথা ডাক্তাররাই বলছেন। তারা বলছেন, তাকে বিদেশে পাঠালে তিনি সুস্থ হবেন।
একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আকুল আবেদন জানিয়ে দলটির মহসচিব বলেছেন, খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। তার জীবন রক্ষা করেন। এর সঙ্গে রাজনীতিকে নিয়ে আসবেন না। সময়োপযোগী সঠিক উন্নত চিকিৎসা না পেলে তিনি এমন এক জায়গায় উপনীত হবেন, যখন কোনো চিকিৎসা কাজে লাগবে না। গতকাল বিকালে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ফখরুল।
খালেদা জিয়ার বড় বোন সেলিমা ইসলাম বলেন, তার (খালেদা জিয়ার) শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ। চিকিৎসকরা বিদেশে নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেন, তার হিমোগেøাবিন অনেক কমে গেছে। তার অবস্থা সংকটাপন্ন।
অনুমতি প্রসঙ্গে অনড় সরকার : বিএনপির নেত্রীর বিদেশে পাঠানোর আবেদন প্রশ্নে এখানো অনড় অবস্থানে সরকার। এই প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, আইনের শাসন যেখানে আছে, সেখানে তিনি যথেচ্ছ করতে পারেন না। বিএনপি যে দাবি করছে, তা আইনের বইয়ে নেই। আইনমন্ত্রী বলেন, তারা (বিএনপি) আমাকে যত খুশি গালি দিতে পারেন। তাতে আমার কিছু আসে যায় না। আমি আইন মোতাবেক চলব। গতকাল জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে বিএনপির সাংসদ জিএম সিরাজের বক্তব্যের জবাবে আইনমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এর আগে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে জিএম সিরাজ তার দলের নেত্রী খালেদা জিয়াকে মানবিক দিক বিবেচনায় দু-এক দিনের মধ্যে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবি জানান।
সংসদে জিএম সিরাজ বলেন, তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে কেন বিদেশে যেতে দেয়া হবে না? এটা তার মৌলিক অধিকার। দেশের মানুষ মনে করে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী যা চাইবেন, তাই করতে পারবেন, করেন। সর্বময় ক্ষমতার মালিক তিনি। এটা পাবলিক পারসেপশন। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি জি এম সিরাজ অনুরোধ জানান, মানবিক কারণে খালেদা জিয়াকে দু-এক দিনের মধ্যে জামিন দিয়ে বিদেশ পাঠানো হোক। না হলে কিছু একটা হয়ে গেলে এর দায়ভার সারাজীবন আওয়ামী লীগকে বহন করতে হবে।
সিদ্ধান্তহীনতায় চিকিৎসকরা : খালেদা জিয়ার চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত দায়িত্বশীলদের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে নানা তথ্য। তার শারীরিক প্যারামিটারগুলো আপডাউন করছে। খালেদা জিয়ার ‘মাল্টিফাংশনাল’ রোগ থাকায় হাসপাতাল হিসেবে এভারকেয়ারের সেবা ব্যবস্থাও অনেকটাই সীমিত বলে জানিয়েছেন চিকিৎসা সংশ্লিষ্টরা। ভোরের কাগজের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর থেকে অসুস্থতাগুলো ক্রমাগত বাড়তে থাকে। সর্বশেষ ৭ নভেম্বর আবারো হাসপাতালে নেয়া হলেও বড় ধরনের কোনো উন্নতি নেই তার। বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডাকা হলেও তারা চিকিৎসার বিষয়ে দায়িত্ব নিতে চান না। বিএনপি প্রধানের শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় তারা বিষয়টিকে ঝুঁকি বলে মনে করছেন।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা কার্যক্রমের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যুক্ত ‘এক্সপার্টরা’ বলছেন, এভারকেয়ার হাসপাতালে ‘মাল্টি ফাংশনাল’ চিকিৎসা ব্যবস্থা না থাকায় বাইরের হাসপাতালগুলো থেকে চিকিৎসক ডাকা হয়। এসব চিকিৎসক আগ্রহের সঙ্গে সাড়া দিলেও সামনাসামনি অসুস্থ খালেদা জিয়াকে পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে নানা দিক বিবেচনায় চিকিৎসা দিতে রাজি হননি। যে কারণে স্বাস্থ্যগত মতামত দিলেও চিকিৎসা সংক্রান্ত কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারছেন না তারা। এমনকি খালেদা জিয়া কারাগারে থাকার সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল (বিএসএমএমইউ) যে চিকিৎসক বোর্ড গঠন করা হয়েছিল গত শুক্রবার তাদেরও ডেকে আনা হয়েছিল এভারকেয়ার হাসপাতালে। তারাও হাইকেয়ার অ্যাডভান্স ট্রিটমেন্টের পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা। বর্তমানে ঢাকার চিকিৎসকদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের যৌথ মতামতের ভিত্তিতে চিকিৎসা চলছে।
এভারকেয়ারের চিকিৎসক ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১০ জনের একটি বিশেষ মেডিকেল টিম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার ব্যবস্থাপনা করলেও পুরো কার্যক্রম দিনরাত সুপারভাইজ করছেন ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন। ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. আল মামুন মাঝে মাঝে এলেও পুরো চিকিৎসা প্রক্রিয়াটি মোটা দাগে ‘সিদ্ধান্তহীন’ অবস্থায় রয়েছে। বিশেষ করে খালেদা জিয়ার পরিবার, ভাইবোন ও তার বড় পুত্র তারেক রহমানের পক্ষ থেকে চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ে চিকিৎসকদের সুনির্দিষ্ট করে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে না। রোগী হিসেবে খালেদা জিয়ার ‘অবস্থানগত স্পর্শকাতরতার’ বিষয়টিকে কেন্দ্র করে সৃষ্টি হয়েছে চিকিৎসক সংকট।
জানতে চাইলে ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার বিষয়ে আমার কাছে কিছু জানতে চেয়ে বিব্রত করবেন না।
গণঅনশন কর্মসূচি বিএনপির : দলীয় চেয়ারপারসনের মুক্তি ও বিদেশে সুচিকিৎসার দাবিতে আগামীকাল শনিবার গণঅনশন কর্মসূচি ডেকেছে বিএনপি। গতকাল বিকালে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটি ও কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি জানান, আগামী শনিবার ঢাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে ও সারাদেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে গণঅনশন কর্মসূচি পালিত হবে। সেদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত এ অনশন অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকায় কর্মসূচি পালনে ভেন্যুর অনুমতি না পেলে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গণঅনশন কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানান তিনি।
নেতাকর্মীদের ক্ষোভ ও উদ্বেগ : দলীয় প্রধানের অসুস্থতার খবরে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন বিএনপির সারাদেশের নেতাকর্মীরা। সুস্থতা কামনায় গত ৪ দিন ধরে সারাদেশে দোয়া ও মাহফিল করছে বিএনপি। অনেকে দলীয়প্রধানের সুস্থতায় রোজা রাখছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিয়ে দোয়া চাইছেন। পাশাপাশি উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি না দেয়াকে সরকারের অমানবিক সিদ্ধান্ত বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিএনপির নেতারা। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, সরকার খালেদা জিয়াকে শেষ করে দিতে চায়। এ কারণেই চিকিৎসা নিয়ে নানা গড়িমসি করছে। তবে অনুশোচনা প্রকাশ করে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী বলেন, অত্যন্ত বেদনার সঙ্গে বলতে চাই, আমরা কী করেছি খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য? আমরা কী করতে পেরেছি? কিছুই করতে পারিনি। তাকে মুক্ত করতে না পারা কলঙ্কজনক একটি ক্ষত। এ ব্যর্থতার গøানি মোচনের দায়িত্ব আমাদের সবার।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়