মানিলন্ডারিং মামলা : হাইকোর্টে জামিন পাননি এসপিসি ওয়ার্ল্ডের শারমিন

আগের সংবাদ

জাহাঙ্গীর আজীবন বহিষ্কার : আ.লীগের সভায় সিদ্ধান্ত, মেয়র পদ হারাতে পারেন জাহাঙ্গীর > খালেদার টার্গেট আমি : প্রধানমন্ত্রী

পরের সংবাদ

আ. লীগের সভায় প্রাধান্য পাবে চলমান ইউপি ভোট : মেয়র জাহাঙ্গীরের বিষয়ে সিদ্ধান্ত আজ

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভা অনুষ্ঠিত হবে আজ শুক্রবার। বিকাল ৪টায় আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে। স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে কার্যনির্বাহী সংসদের অন্তত অর্ধশত নেতা সভায় অংশ নেবেন। আজকের সভায় সবচেয়ে গুরুত্বসহ আলোচনা হবে চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন ঘিরে, দলের তৃণমূলের অস্থিরতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে। এছাড়া গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের দেয়া শোকজ নোটিসের জবাব নিয়ে আলোচনা হবে। এছাড়া আরো ৮টি বিষয়সহ মোট ৯টি বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হবে আজকের সভায়। এমনটি জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের একাধিক নেতা।
আওয়ামী লীগের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা জানিয়েছেন, দলের আজকের সভাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বর্তমানে সারাদেশে স্থানীয় সরকারের ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভার নির্বাচন চলছে। নির্বাচন ঘিরে তৃণমূলে একপ্রকার অস্থিরতা চলছে। নিজ দলের নেতাকর্মীরা নৌকার প্রতীক ঘিরে নানা গ্রুপ-উপগ্রুপে বিভক্ত হচ্ছে। নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে একই দলের পদধারী নেতারা বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। এ পর্যন্ত ২ দফা নির্বাচনে ৪ শতাধিক ইউনিয়নে নৌকার বিদ্রোহীরা বিজয়ী হয়েছেন। নিজ দলের নেতাকর্মীদের অভ্যন্তরীণ সহিংসতায় এ পর্যন্ত ৪৬ জন নিহত হয়েছে। যা ভাবিয়ে তুলেছে দলটির হাইকমান্ডকে। দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করায় এ পর্যন্ত এক হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে স্থানীয়ভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীক না রাখার দাবি জোরালো হচ্ছে। এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে আজকের সভায়। তার আগে নির্বাচনসহ ৮টি বিভাগের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড নিয়ে রিপোর্ট তৈরি করতে দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদকদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তারা রিপোর্ট উপস্থাপন করবেন। সেসব বিষয় নিয়েও আলোচনা হবে। তাই সবার নজর আজকের সভায়। কী সিদ্ধান্ত আসছে সেখান থেকে।
জানা গেছে, সভার শুরুতেই দলের দপ্তর সম্পাদক শোক প্রস্তাব উত্থাপন করবেন। দ্বিতীয় এজেন্ডায় ২১ ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের কর্মসূচি, তৃতীয় এজেন্ডায় ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উদযাপন, চতুর্থ এজেন্ডায় ১৭ মার্চ জাতির পিতা জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন, পঞ্চম এজেন্ডায় ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস, ষষ্ঠ এজেন্ডায় ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের কর্মসূচি নির্ধারণ করা হবে। সপ্তম এজেন্ডায় আওয়ামী লীগের গাজীপুর মহানগর সাধারণ সম্পাদক সিটি মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের কারণ দর্শানো নোটিসের জবাব নিয়ে আলোচনা হবে। এ আলোচনায় তার বিষয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে। গতকাল এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এছাড়া অষ্টম এজেন্ডায় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। নবম এজেন্ডায় বিবিধ বিষয় রাখা হয়েছে।
জাহাঙ্গীর আলমের বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এক সদস্য ভোরের কাগজকে জানান, গাজীপুর সিটির মেয়র জাহাঙ্গীর আলম আমাদের দলের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন। দল মনোনীত প্রার্থী হিসেবেও তিনি মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। সম্প্রতি মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে তার অডিও ভাইরাল হয়েছে। এই ঘটনার পর আমরা কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ তাকে শোকজ করেছি। তিনি শোকজের যে জবাব দিয়েছেন। তা নিয়ে স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভায়

আলোচনা হয়েছে। তার জবাব নিয়ে বিশ্লেষণ হয়েছে। আমরা তার শোকজের জবাবে সন্তুষ্ট হতে পারিনি। তাই আজকের সভায় বিষয়টি আলোচনা হবে। সভা থেকেই তার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হবে, তা নির্ধারণ হবে।
আওয়ামী লীগের একজন সাংগঠনিক সম্পাদক জানান, আজকের সভায় আমাদের সাংগঠনিক বিষয়ে প্রতিবেদন তৈরি করতে বলা হয়েছে। আমরা প্রতিবেদন তৈরি করছি। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে যারা দলের মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন। নৌকার বিপক্ষে যারা কাজ করছেন। বিদ্রোহীদের কারা মদত দিচ্ছেন। সেই তালিকা আমরা তৈরি করেছি। আজকের সভায় এ তালিকা উপস্থাপন করা হবে।
গতকাল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির সভায় গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়রের বিষয়ে সিদ্ধান্তের পাশাপাশি চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের বিষয়েও আলোচনা হবে। ইউপি নির্বাচনে যারা বিদ্রোহ করছে এবং বিদ্রোহীদের মদত দিচ্ছে তাদের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটিতে রিপোর্ট দিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদকদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এছাড়া বিবিধ বিষয়ে আগামী বছর দলের ২২তম জাতীয় সম্মেলন এবং ২০২৩ সালে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সম্মেলন, তৃণমূলে বিভক্তির রাজনীতি দূরীকরণ, এমপি-মন্ত্রীদের বলয় ভাঙাসহ সাংগঠনিক নির্দেশনা দিতে পারেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়