জামালদের বিদায় করে ফাইনালে শ্রীলঙ্কা

আগের সংবাদ

বাস মালিক-শ্রমিকরা বেপরোয়া : এখনো অতিরিক্ত ভাড়া আদায় > গেটলক-সিটিং সার্ভিস বহাল > বিআরটিএর তৎপরতা লোক দেখানো

পরের সংবাদ

সংসদে প্রধানমন্ত্রী : বাংলাদেশে ভ্যাকসিন ইনস্টিটিউট হবে

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : করোনা ভাইরাসসহ বিভিন্ন রোগের টিকা দেশেই উৎপাদনের লক্ষ্যে ভ্যাকসিন ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বুধবার সংসদ অধিবেশনের প্রশ্নোত্তর পর্বে আওয়ামী লীগের সদস্য আনোয়ার হোসেন খানের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা ভাইরাসের মহামারি শুরুর পর বিশ্বে টিকা আবিষ্কার ও উৎপাদনের গুরুত্ব বেড়ে গেছে। করোনা ভাইরাসসহ বিভিন্ন ভাইরাস প্রতিরোধে ভ্যাকসিন উৎপাদনের লক্ষ্যে দেশে একটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ভ্যাকসিন ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা এবং ভ্যাকসিন নীতিমালা প্রণয়নের পরিকল্পনা বর্তমান সরকারের রয়েছে। ভ্যাকসিন ইনস্টিটিউট এবং ভ্যাকসিন নীতিমালা হলে কী ধরনের সুবিধা পাওয়া যাবে সে কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনের সাংসদ, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি একাব্বর হোসেনের মৃত্যুতে সংসদের রীতি অনুযায়ী গতকাল শোক প্রস্তাব আনা হলে তার জীবন ও কর্মের ওপর আলোচনা শেষে সংসদ মুলতবি করা হয়। প্রধানমন্ত্রীসহ অন্য মন্ত্রীদের প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়।
‘আমাকে ‘জুয়েল ইন দ্য ক্রাউন’ অভিহিত করা হয়েছে’ : এ কে এম রহমতুল্লাহর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৫-২০২০ সময়কালে এসডিজি অর্জনে সর্বোচ্চ সাফল্যের জন্য আমাকে ‘এসডিজি প্রোগ্রেস অ্যাওয়ার্ড’ দেয়া হয়। ওই সম্মাননা দেয়ার সময় করোনা মহামারির এই কঠিন সময়ে বাংলাদেশ ও বিশ্ব অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকার জন্য আমাকে ‘জুয়েল ইন দ্য ক্রাউন’ বলে অভিহিত করা হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, কোভিড-১৯ মহামারিতে সৃষ্ট বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকোচন, ভ্যাকসিন বৈষম্য প্রভৃতি বিশ্বের অনেক দেশেরই উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করেছে। কিন্তু এই মহামারির মধ্যেও বাংলাদেশ যে অবিচলভাবে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনে এগিয়ে যাচ্ছে- এই পুরস্কার তারই বিশ্ব স্বীকৃতি।
পদ্মা সেতুর ভৌত অগ্রগতি ৮৮.৭৫ শতাংশ : জাতীয় পার্টির সৈয়দ আবু হোসেনের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ভায়াডাক্টসহ ৯ দশমিক ৮৩ কি.মি. দৈর্ঘ্যরে বাংলাদেশের দীর্ঘতম পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ চলছে।

২০২১ সালের অক্টোবর পর্যন্ত এ প্রকল্পের ভৌত কাজ ৮৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ শেষ হয়েছে। ২০২২ সালের জুনের মধ্যে স্বপ্নের এই সেতু যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া সম্ভব হবে বলে আশা করা যায়।
তিনি বলেন, ঢাকা শহরে সাবওয়ে (আন্ডারগ্রাউন্ড মেট্রো) নির্মাণের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা চলছে। অক্টোবর পর্যন্ত সমীক্ষা প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৮০ শতাংশ। সম্ভাব্যতা সমীক্ষার মাধ্যমে এলাইনমেন্ট চূড়ান্ত করে যথাসময়ে সাবওয়ে বাস্তবায়ন কাজ শুরু হবে বলে আশা করা যায়। কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের নির্মাণকাজ ২০২১ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ৭৪ দশমিক ৩৩ শতাংশ বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
একাব্বরের মৃত্যুতে সংসদে শোক : চলমান একাদশ জাতীয় সংসদে ২০ জন সংসদ সদস্যের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এদের মৃত্যু বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য অনেক বড় ক্ষতি। টাঙ্গাইলের মির্জাপুর আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য একাব্বর হোসেনের মৃত্যুতে গতকাল বুধবার সংসদে শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে এ কথা বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যে মানুষগুলো কাজ করেছেন মানুষের জন্য, তারাই একে একে চলে যাচ্ছেন। ২০১৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত সংসদে ২০ জন সংসদ সদস্যকে হারালাম। সত্যি দুঃখজনক। যেসব এমপি মারা গেছেন তার তালিকা তুলে ধরেন সংসদ নেতা। তারা হলেন- কিশোরগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের এমপি রুশেমা বেগম (মহিলা আসন-৩৪), সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় নেতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, চট্টগ্রাম-৮ আসনের মঈনউদ্দীন খান বাদল, গাইবান্ধা-৩ আসনের ইউনুস আলী সরকার, বাগেরহাট-৪ আসনের মোজাম্মেল হোসেন, বগুড়া-১ আসনের আবদুল মান্নান, যশোর-৬ আসনের ইসমাত আরা সাদেক, পাবনা-৪ আসনের শামসুর রহমান শরীফ, ঢাকা-৫ আসনের হাবিবুর রহমান মোল্লা, সিরাজগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ নাসিম, ঢাকা-১৮ আসনের সাহারা খাতুন, নওগাঁ-৬ আসনের ইসরাফিল আলম, সিলেট-৩ আসনের সরকারদলীয় সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী, ঢাকা-১৪ আসনের আওয়ামী লীগদলীয় সংসদ সদস্য আসলামুল হক, কুমিল্লা-৫ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল মতিন খসরু, কুমিল্লা-৭ আসনের অধ্যাপক মো. আলী আশরাফ, সিরাজগঞ্জ-৬ আসনের হাসিবুর রহমান স্বপন, জাপার সংরক্ষিত আসনের এমপি মাসুদা এম রশীদ ও টাঙ্গাইল-৭ আসনের একাব্বর হোসেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৮১ সালে আমি ফেরার পর প্রতি পদে পদে বাধা, আঘাত এসেছে। মিটিংয়ে বোমা হামলা, মঞ্চ পোড়ানো থেকে শুরু করে অনেক ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যে চলতে হয়েছে। কিন্তু একাব্বরদের মতো নিবেদিত প্রাণকর্মী যারা ছিল, আমি দেখেছি, তখন সব ভয়-ভীতি উপক্ষো করে সেসব সমাবেশে যোগদান করেছে। আন্দোলন-সংগ্রাম করেছে। এ রকম একজন নেতৃত্ব হারানো আমাদের জন্য কষ্টকর।
প্রধানমন্ত্রীর আগে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, মতিয়া চৌধুরী, আব্দুস সোবহান মিয়া, বেনজীর আহমেদ, আনোয়ারুল আবেদীন খান, ছোট মনির, বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের, বিরোধীদলীয় প্রধান হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়