জামালদের বিদায় করে ফাইনালে শ্রীলঙ্কা

আগের সংবাদ

বাস মালিক-শ্রমিকরা বেপরোয়া : এখনো অতিরিক্ত ভাড়া আদায় > গেটলক-সিটিং সার্ভিস বহাল > বিআরটিএর তৎপরতা লোক দেখানো

পরের সংবাদ

পাকিস্তান বধের ছক কষছে টাইগাররা

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ব্যর্থ ছিল বাংলাদেশ দল। অন্যদিকে ফাইনালে না খেলতে পারলেও আসরে মোটামুটি সফল পাকিস্তান। তাদের বিপক্ষে জয় তুলে নিতে মাহমুদউল্লাহদের চাই কঠোর অনুশীলন। রাত পোহালেই দুদল তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে আগামীকাল শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে পরস্পরের মুখোমুখি হবে। সিরিজের বাকি দুই ম্যাচ আগামী ২০ ও ২২ নভেম্বর একই মাঠে অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে পাকিস্তান বধের পরিকল্পনায় গতকাল মিরপুরে অনুশীলনে ঘাম ঝরিয়েছেন টাইগাররা। এদিকে সিরিজের সবকটি ম্যাচ মাঠে বসে দর্শকরা উপভোগ করতে পারবেন বলে বিসিবি থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে। ম্যাচের টিকেট পাওয়া যাবে মিরপুর ইনডোর ক্রিকেট স্টেডিয়ামে।
পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ সবশেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছিল গত বছরের জানুয়ারিতে। তাদের ঘরের মাঠে সিরিজের দুই ম্যাচের সবকটি হেরেছিল বাংলাদেশ দল। সব মিলিয়ে দুদল আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হয়েছিল ১২ বার। এর মধ্যে ১০ হারের বিপরীতে মাত্র ২ ম্যাচে জয়ের দেখা পেয়েছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। পাকিস্তান এবার আরো শক্তিশালী। সম্প্রতি সমাপ্ত আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুপার টুয়েলভে অপরাজিত থেকে সেমিফাইনালে খেলেছে তারা। আর বাংলাদেশ দল সুপার টুয়েলভের সবকটি ম্যাচ হেরেছে। সাম্প্রতিক র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ দল যেখানে আটে অবস্থান করছে সেখানে পাকিস্তান আছে সেরা তিনে। এমন একটি দলের বিপক্ষে জয় পেতে হলে কঠোর অনুশীলনের পাশাপাশি দরকার সুষ্ঠু পরিকল্পনা। তবে ঘরের মাঠে বাংলাদেশ বরাবরই শক্তিশালী প্রতিপক্ষ। বিশ্বকাপের দুই ফাইনালিস্ট অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডকে নিজেদের ঘরের মাঠে গত আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারিয়েছিল টাইগাররা।
পাকিস্তানের বিপক্ষে আগামীকাল বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টায় মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে মাহমুদউল্লাহ বাহিনী। এরপর আগামী ২০ নভেম্বর সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে দুদল পরস্পরের মুখোমুখি হবে। সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে আগামী ২২ নভেম্বর পাকিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ দল। সিরিজের সবকটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সব সময় দুপুর ২টায়। সফরে পাকিস্তান দল টাইগারদের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ছাড়াও দুটি টেস্ট ম্যাচ খেলবে। আগামী ২৬-৩০ নভেম্বর সিরিজের প্রথম টেস্ট চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে। এরপর তিন দিনের বিরতি দিয়ে আগামী ৪ ডিসেম্বর থেকে ৮ ডিসেম্বর মিরপুরে অনুষ্ঠিত হবে সিরিজের শেষ টেস্টটিতে। এর আগে সিরিজকে সামনে রেখে ১৬ সদস্যের বাংলাদেশ দল ঘোষণা করেছিল বিসিবি। যেখানে জায়গা হয়নি মুশফিকুর রহিম, লিটন দাস ও সৌম্য সরকারের। বিশ্বকাপে বাজে পারফরম্যান্সের কারণে দল থেকে বাদ পড়েছেন সৌম্য ও লিটন। আর মুশফিক আছেন বিশ্রামে। ইনজুরির কারণে স্কোয়াডে অন্তর্ভুক্ত হননি সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবাল। সৌম্য ও লিটনের বদলে দলে নতুন করে জায়গা পেয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও সাইফ হাসান। এছাড়া ইয়াসির আলী রাব্বি, আকবর আলী, শহিদুল ইসলাম ও আমিনুল ইসলাম বিপ্লবও পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে জায়গা করে নিয়েছেন।
প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু দল ঘোষণার পর গণমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘সোহান কিন্তু আমাদের এক নম্বর উইকেটরক্ষক। এখানে ইনজুরির ব্যাপার আছে, সোহান ছাড়া দলে আর কোনো উইকেটরক্ষক নেই। সেই হিসেবে আকবরকে রাখা হয়েছে। টিম ম্যানেজমেন্ট চাইলে ওকে খেলাতে পারবে।’ সঙ্গে নান্নু আরো বলেন, ‘ওর পারফরম্যান্সের চেয়ে উইকেটকিপিং বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কিপিংয়ের কথা চিন্তা করে আকবরকে ব্যাকআপ হিসেবে নিয়েছি। আমরা এখনো কিন্তু বলছি না আকবর খেলবেন। যদি মূল কিপার ইনজুরিতে পড়ে তখন তার কথা চিন্তা করা হবে। আকবরকে স্কোয়াডের সঙ্গে রেখে ভবিষ্যতের জন্য তৈরি করাও গুরুত্বপূর্ণ।’ লিখন না থাকলেও লেগ স্পিনার আমিনুল ইসলাম বিপ্লব এবার টিকে গেছেন। স্কোয়াডে থাকলেও এই তরুণ তুর্কি একাদশে সুযোগ পাবেন কিনা সে নিয়ে শঙ্কার কথা শোনালেন নান্নু। তবে দীর্ঘদিন ধরে দলের সঙ্গে থাকা ইয়াসির আলীকে নিয়ে বেশ ইতিবাচক তিনি। বিপ্লব প্রসঙ্গে নান্নুর ব্যাখ্যা, ‘ঘরের মাঠে যতগুলো খেলা হয়েছে বিপ্লব সব সময়ই স্কোয়াডে ছিল। টিম ম্যানেজমেন্ট যদি চায় খেলাবে। আমরা মনে করি, একটা লেগ স্পিনার আমাদের দরকার। দেখা যাক তাকে দিয়ে শুরু করা যায় কিনা।’ ইয়াসির রাব্বিকে নিয়ে নান্নু বলেন, ‘আমার বিশ্বাস টিম ম্যানেজমেন্ট ইয়াসির রাব্বিকে নিয়ে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী। যখনই আলোচনা করি, সবাই তার পক্ষে বলে। আশা করি এবার সুযোগ আসবে এবং তাকে সুযোগটা কাজে লাগাতে হবে।’

এদিকে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজটিতে দর্শকদের মাঠে বসে খেলা দেখার সুযোগ করে দিয়েছে বিসিবি। বাংলাদেশের দর্শকরা ক্রিকেট মাঠে গিয়ে খেলা দেখতে পারবেন- এমন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছিল আগেই। বিসিবি থেকে তেমন সম্ভাবনার কথা জানানো হয়েছিল সপ্তাহখানেক আগে। তখন বলা হয়েছিল, সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের সবুজ সংকেত তথা নির্দেশনা পেলেই দর্শকদের মাঠে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেয়া হবে। সরকারের সর্বোচ্চ মহলের অনুমতি মিলেছে, তাই ঘরের মাঠে ফিরছে দর্শকও। এর আগে করোনা পরবর্তী সময়ে দেশের মাটিতে ক্রিকেট ফিরলেও দর্শকরা ফিরতে পারেননি মাঠে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশে সিরিজ খেলতে এসেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরপর মে মাসে বাংলাদেশ সফরে আসে শ্রীলঙ্কা। তাদের পর গত আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশে সিরিজ খেলতে আসে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। কিন্তু এসব সিরিজে কঠিন সুরক্ষাবলয় মেনে চলতে হওয়ায় মাঠে দর্শক ফেরাতে পারেনি বিসিবি। এর আগে গত বছরের মার্চে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হোম সিরিজে শেষবার মাঠে দর্শকদের পদচারণা ছিল।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী টিকেটের বিষয়ে বলেন, ‘মিরপুর ইনডোর স্টেডিয়ামে টিকেট কিনতে পাওয়া যাবে। আজ থেকে শুরু হবে টিকেট বিক্রি। টিকেট বাকি থাকলে ম্যাচের দিনও সেখানে পাওয়া যাবে।’ এর বাইরে বিকল্প ব্যবস্থার কথা জানিয়ে বিসিবি সিইও আরো বলেন, ‘তবে প্রথম দিন সব টিকেট বিক্রি না হলে মিরপুর ইনডোরের পাশাপাশি শেরে বাংলার বাইরে বিকল্প ব্যবস্থায়ও টিকেট পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। চেষ্টা করা হবে যারা এরই মধ্যে করোনার দুই ডোজ টিকা নিয়েছেন, তাদের অগ্রাধিকার দেয়ার।’ এর বাইরে শিশুদের মাঠে যাওয়ার বিষয়েও নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়েছে। যেহেতু বাংলাদেশে ১২ বছরের নিচে টিকা দেয়া হয়নি, তাই অভিভাবকদের সঙ্গে তাদের মাঠে আসায় কোনো নিষেধাজ্ঞা থাকবে না। অর্থাৎ ১২ বছরের নিচের শিশুরা মাঠে আসতে পারবে খেলা দেখতে।
তবে পূর্ণ গ্যালারি নয়, খেলা দেখতে পারবেন পঞ্চাশ ভাগ দর্শক। বিসিবি পরিচালক ও মিডিয়া কমিটির প্রধান জালাল ইউনুস তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘এবার দর্শকরা মাঠে গিয়ে খেলা দেখতে পারবেন। স্টেডিয়ামের মোট ধারণক্ষমতার ৫০ ভাগ আসন দর্শকদের জন্য বরাদ্দ থাকবে।’ জালাল আরো বলেন, ‘যারা এরই মধ্যে ভ্যাকসিনের ২টি কোর্স সম্পন্ন করেছেন তারা যাতে অগ্রাধিকার পান, চেষ্টা করা হবে। তবে কাজটা কঠিন। কারণ কারা ডাবল ভ্যাকসিন নিয়ে নিয়েছেন, তাদের টিকেট দেয়ার কাজটি করাও সহজ নয়। তারপরও চেষ্টা চলছে যাতে ভ্যাকসিনের কোর্স সম্পন্নকারীরা অগ্রাধিকার পান।’
এদিকে এক বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল বিসিবির পক্ষ থেকে টিকেটের দাম নিশ্চিত করা হয়েছে। শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকবে টিকেট বুথ। টিকেট পাওয়া যাবে ৫ ক্যাটাগরিতে। যেখানে সর্বোচ্চ টিকেট মূল্য ধরা হয়েছে ১০০০ টাকা, সর্বনি¤œ ১০০ টাকা। গ্র্যান্ড স্ট্যান্ড ১০০০, ভিআইপি স্ট্যান্ড ৫০০, ক্লাব হাউস ৩০০, সাউদার্ন/নর্দার্ন স্ট্যান্ড ১৫০ ও ইস্টার্ন স্ট্যান্ড গ্যালারির টিকেট মিলবে ১০০ টাকায়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়