তিনজন গ্রেপ্তার : কৌশলে পানের ভেতর ইয়াবা পাচার

আগের সংবাদ

শূন্য থেকে মহাশূন্য জয় : ডিজিটাল বাংলাদেশ

পরের সংবাদ

সিইসি নূরুল হুদা : নির্বাচন নিয়ে মাহবুব তালুকদারের বক্তব্য শালীনতাবহির্ভূত

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা বলেছেন, সম্প্রতি ইউপি নির্বাচনকে ঘিরে কয়েকটি স্থানে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। তার কোনোটাই প্রত্যাশিত ও কাম্য নয়। ঘটনাগুলোর ওপর বিশ্লেষণমূলক প্রতিবেদনও প্রকাশ হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, এর পেছনে ছিল নির্বাচনকে সামনে রেখে আধিপত্য বিস্তার, রাজনৈতিক কোন্দল, জেতার জন্য মরিয়া চেষ্টা, বংশীয় প্রভাব, ব্যক্তিগত শত্রæতা ইত্যাদি। নির্বাচন কমিশন ভবনে গতকাল সোমবার আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম, নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন, ইসি সচিব মো হুমায়ুন কবীর খোন্দকার, ইসির যুগ্ম সচিব এম এম আসাদুজ্জামান প্রমুখ। সিইসি বলেন, গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী সারাদেশে নির্বাচনী সহিংসতায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। তবে এসব প্রাণহানির ঘটনার সব নির্বাচনী সংঘর্ষের কারণে হয়েছে কিনা- তা অনুসন্ধানের দাবি রাখে। এর মধ্যে মাত্র কয়েকটি ঘটনা ভোটকেন্দ্রে বা ভোটের দিন ঘটেছে। কোনো ঘটনা নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার আগেই ঘটেছে। আবার কোনোটা রাতের আঁধারে ঘটেছে। এসব হত্যার মোটিভ কী তা তত্ত্বের বিষয়।
সম্প্রতি চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে মাহবুব তালুকদারের বক্তব্য শালীনতা বহির্ভূত বলে মন্তব্য করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা। তিনি বলেন, একজন সিনিয়র নির্বাচন কমিশনার হিসেবে তার এ বক্তব্য দেয়ায় ইসির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে, কোনোভাবেই এটা ঠিক হয়নি। বরং নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু হয় সেজন্য সবাই সহযোগিতা করা দরকার।
সিইসি বলেন, আমরা দেখেছি তফসিল ঘোষণার দিনেও হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এবারের নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে নরসিংদীতে। সেখানে ৪ নভেম্বর প্রথম সহিংসতার ঘটনাটি ঘটে। দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে ১১ নভেম্বর ভোরে। নির্বাচন শুরু হওয়ার আনেক আগেই। মাগুরায় যে ঘটনাটি ঘটেছে তা স্রেফ এলাকায় প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে। আবার মেহেরপুরের ঘটনাটি ঘটেছে নির্বাচনের দিন ভোর রাতে। সেখানে দেখা গেছে, সহিংসতায় দেশীয় অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। এ বিষয়ে বিশেষ ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, এবারের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সময়ে নরসিংদী জেলার রায়পুরের একটি দুর্গম চর এলাকায় হতাহতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। নরসিংদীর ঘটনার বর্ণনায় একটি পত্রিকা উল্লেখ করেছে, গত ১০ বছরে আধিপত্য বিস্তারের নামে নরসিংদী চরাঞ্চলগুলোতে দুই শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কয়েক হাজার। তবে নরসিংদীতে এবারের প্রথম ঘটনাটি ঘটে ৪ নভেম্বর যা নির্বাচনের পাঁচ দিন আগে। দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে নির্বাচনের দিন ভোরে নির্বাচন শুরুর আগে। সংঘর্ষ চলাকালে উচ্ছৃঙ্খল লোকজনকে দেশী অস্ত্রসহ মহড়া দিতে দেখা গেছে। তাদের চিহ্নিত করে বিচারের সম্মুখীন করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, দ্বিতীয় পর্যায়ে ৮৩৩টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে ৮ হাজার ৪৭২টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ করা হয়। এর মধ্যে মাত্র ১৬টি ভোটকেন্দ্রের ভোটগ্রহণ প্রিসাইডিং অফিসারের নিয়ন্ত্রণবহির্ভূত হওয়ার কারণে বন্ধ করা হয়, যা মোট ভোটকেন্দ্রের মাত্র শূন্য দশমিক ১৮ শতাংশ।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার আরো বলেন, ইতোমধ্যে দুই ধাপের নির্বাচন শেষ হয়েছে। আরো দুই ধাপের নির্বাচনী কার্যক্রম চলছে। এরপর একাধিক ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সব নির্বাচন সঠিকভাবে সম্পন্ন করার জন্য মাঠ পর্যায়ের নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এই সুযোগে নির্বাচনে প্রতিদ্ব›দ্বী সব প্রার্থী, তাদের সমর্থক, সামাজিক নেতারা এবং সর্বোপরি সব রাজনৈতিক নেতার প্রতি অনুরোধ থাকবে, তারা যেন সবাই আচরণবিধি মেনে চলেন, সহনশীল আচরণ করেন। এসব ব্যাপারে নির্বাচনী সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়