তিনজন গ্রেপ্তার : কৌশলে পানের ভেতর ইয়াবা পাচার

আগের সংবাদ

শূন্য থেকে মহাশূন্য জয় : ডিজিটাল বাংলাদেশ

পরের সংবাদ

চরিত্রসংক্রান্ত ধারাটি বাতিল করুন

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

একজন নারীর সম্ভ্রম নষ্ট হলো, তিনি বিচারপ্রার্থী। তার চরিত্র নিয়ে আসামি প্রশ্ন করবেন সবার সামনে এর চেয়ে দুঃখজনক আর কি হতে পারে? ধর্ষণের অভিযোগকারী নারীকে হেয় করে ১৮৭২ সালের সাক্ষ্য আইনের এমন দুটি ধারা চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে রিট আবেদন হয়েছে। আবেদনে আইনের ১৫৫ (৪) ধারা এবং ১৪৬ (৩) ধারা দুটি বাতিলের নির্দেশনা চাওয়া হয়। গত রবিবার আবেদনটি করা হয়। এই ধারা একটি কালাকানুন ও নারীর জন্য অবমাননাকর। দুটি ধারার কারণে ধর্ষণের শিকার নারীর বিচার পেতে নানা বিড়ম্বনার সম্মুখীন হচ্ছে। প্রচলিত আইন ও ব্যবস্থায় আশু সংস্কারের দাবি প্রাসঙ্গিক মনে করছি। জানা যায়, ১৮৭২ সালের সাক্ষ্য আইনের ১৫৫ (৪) ধারা অনুযায়ী, কোনো লোক যখন বলাৎকার কিংবা শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগে ফৌজদারিতে সোপর্দ হন, তখন দেখানো যেতে পারে যে অভিযোগকারিণী সাধারণভাবে দুশ্চরিত্রা। এছাড়া জেরায় আইনসঙ্গত প্রশ্ন সংক্রান্ত ১৪৬ (৩) ধারায় বলা হয়েছে, ‘তাহার চরিত্রের প্রতি আঘাত করে তার বিশ্বাসযোগ্যতা সম্পর্কে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করা যায়, যদিও এ রূপ প্রশ্নের উত্তরের দ্বারা সে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোনো অপরাধের সহিত জড়িত হতে পারে, কিংবা সে দণ্ডলাভের যোগ্য সাব্যস্ত হতে পারে, অথবা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তাহার দণ্ডলাভের যোগ্য সাব্যস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তথাপি অনুরূপ প্রশ্ন করা যাবে।’ সাক্ষ্য আইনের এ ধারা বাতিলে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তিপর্যায় থেকে দাবি উঠলে উদ্যোগ নেয়ার কথা জানিয়েছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। যদিও পরবর্তী সময়ে তা আর এগোয়নি। এরই মধ্যে ‘রেইনট্রি ধর্ষণ’ মামলার রায়ে বিচারকের পর্যবেক্ষণ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। রেইনট্রি হোটেলে ধর্ষণ মামলার বিচার শেষে গত বৃহস্পতিবার সব আসামির খালাসের রায় দেন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক বেগম মোছা. কামরুন্নাহার। পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, অভিযোগকারী তরুণী ‘স্বেচ্ছায়’ রেইনট্রি হোটেলে গিয়ে আসামির সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন, সেখানে ‘ধর্ষণ ঘটেনি’। তদন্ত কর্মকর্তা ‘প্রভাবিত হয়ে’ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছেন। আইন কঠোর থাকলেও সাক্ষ্য আইনের এ দুটি ধারা নারীদের বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে বড় বাধা। এজন্য এ ধারা দুটি বাতিল হওয়া জরুরি। এ দুটি ধারা বাতিল হলে নারীদের বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে অনেক প্রতিবন্ধকতা দূর হবে বলে মনে করি। ২০১৮ সালে এসে উচ্চ আদালতকেই টু ফিঙ্গার টেস্ট নিষিদ্ধ করতে হলো। পর্যবেক্ষণ দিতে হলো যে ধর্ষণ প্রমাণে শারীরিক পরীক্ষার ক্ষেত্রে এই টেস্টের কোনো বিজ্ঞানসম্মত ভিত্তি নেই। সাক্ষ্য আইনের বিতর্কিত ১৫৫ (৪) ধারাটি বাতিলের দাবি তোলতে হবে জোরালোভাবে। পাশাপাশি সময় এসেছে নারীর সপক্ষে কিছু আইনের দ্রুত সংস্কার করতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়