তিনজন গ্রেপ্তার : কৌশলে পানের ভেতর ইয়াবা পাচার

আগের সংবাদ

শূন্য থেকে মহাশূন্য জয় : ডিজিটাল বাংলাদেশ

পরের সংবাদ

খালেদাকে বিদেশে নিতে ফের আবেদন পরিবারের

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বসুন্ধরা এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে ফের আবেদন করেছে তার পরিবার। পরিবারের পক্ষ থেকে ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার গত বৃহস্পতিবার এই আবেদন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা দেন। পরদিন তিনি যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন।
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে (ম্যাডাম) ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছেন। এটি পঞ্চম আবেদন। ম্যাডামকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য তার জামিন এবং বিদেশে পাঠানোর জন্য সরকারের কাছে এই আবেদন করা হয়।
অন্যদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর একান্ত সচিব দেওয়ান মাহুবুবর রহমান

গণমাধ্যমকে বলেন, একটি আবেদন দিয়েছিলেন। এটা আমাদের কিছু না। এটা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
সর্বশেষ গত ৬ মে শামীম এস্কান্দার খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর অনুমতি চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছিলেন। সেই আবেদন আইন মন্ত্রণালয় গেলে নাকচ হয়ে যায়। গত সোমবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে খালেদা জিয়ার বোন সেলিমা ইসলাম বলেন, তার (খালেদা জিয়ার) শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ। বুঝতেই পারছেন ২৬ দিন হাসপাতালে থেকে এলো। আবার এক সপ্তাহ যেতে না যেতেই হাসপাতালে যেতে হলো। এখন বিদেশে চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসকরা একটাই পরামর্শ দিচ্ছেন। সেজন্য তাদের ভাইবোনদের পক্ষ থেকে আবার সরকারের অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।
খালেদা জিয়ার বর্তমান শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, তার হিমোগেøাবিন অনেক কমে গেছে। তার শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ, হাঁটতে চলতে পারছে না। সেজন্যই আমরা বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করাতে চাই। এখানে তো ডাক্তাররা সেভাবে চিকিৎসা দিতে পারছেন না। কারণ তাদের আধুনিক যন্ত্রপাতি বা সুবিধা নেই।
কোন দেশে নিয়ে চিকিৎসা করাতে চায় পরিবার? এমন প্রশ্নের জবাবে সেলিমা ইসলাম বলেন, সিঙ্গাপুর কাছে হবে এবং এ কারণে সিঙ্গাপুরকে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। তবে যে দেশেই অনুমতি মিলবে, সেখানেই নিয়ে যাওয়া হবে। সন্ধ্যার পরে খালেদা জিয়াকে দেখতে বসুন্ধরায় এভারকেয়ার হাসপাতালে যান সেলিমা ইসলাম।
সূত্র জানায়, করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসাধীন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর অবস্থা এই ভালো, তো এই খারাপ। তার রক্তে হিমোগেøাবিন তৈরি হচ্ছে না। শরীরের হিমোগেøাবিন যা আছে, তা ধীরে ধীরে পানি হয়ে যাচ্ছে। কিছু খেলেই বমি হচ্ছে। অক্সিজেনের লেভেল আপ-ডাউন করছে। ফলে বাধ্য হয়ে মাঝে মাঝে কৃত্রিম অক্সিজেন দিতে হচ্ছে। ডায়াবেটিসের কন্ট্রোল হচ্ছে না। নিয়ন্ত্রণে দেয়া হচ্ছে ইনসুলিন।
খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিএনপির মহাসচিব একাধিকবার বলেছেন, দীর্ঘ চার বছর তার চিকিৎসা না হওয়ার কারণে, কারাগারে রাখার কারণে তিনি অনেকগুলো রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। তার হার্টে সমস্যা তৈরি হয়েছে, কিডনিতে সমস্যা তৈরি হয়েছে, তার লিভারে সমস্যা তৈরি হয়েছে। তার পুরনো অসুখ আর্থ্রাইটিসও রয়েছে। এসব মিলিয়ে উনি অত্যন্ত অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। ডাক্তাররা বলছেন, তিনি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছেন।
সূত্র জানায়, বেশ কিছুদিন ধরে অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস ভোগাচ্ছে খালেদা জিয়াকে। তার সুগার লেভেল কখনো ১৪, আবার কখনো ১৮ থেকে ২০ এ গিয়ে ঠেকছে। সব মিলিয়ে কয়েক দিন ধরে তার শারীরিক অবস্থা ওঠা-নামার মধ্যে আছে।
উল্লেখ্য, গত ১২ অক্টোবর খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। এরপর ২৫ অক্টোবর তার ছোট একটি অস্ত্রোপচার করা হয়। এরপর হয় বায়োপসি পরীক্ষা। এ বিষয়ে স্বচ্ছ ধারণা পেতে তা যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে পাঠানো হয়। প্রায় এক মাসের মতো রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থেকে গত ৭ নভেম্বর বিকাল ৫টায় ছাড়পত্র নিয়ে গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজায়’ ফেরেন খালেদা জিয়া।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়