তিনজন গ্রেপ্তার : কৌশলে পানের ভেতর ইয়াবা পাচার

আগের সংবাদ

শূন্য থেকে মহাশূন্য জয় : ডিজিটাল বাংলাদেশ

পরের সংবাদ

কুলিয়ারচরের ৬ ইউপি : নৌকার প্রার্থীর পাশে নেই স্থানীয় আওয়ামী লীগ

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

আলি হায়দার, কুলিয়ারচর (কিশোরগঞ্জ) থেকে : ইউপি নির্বাচন ঘিরে কুলিয়ারচর উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম বিভক্তি দেখা দিয়েছে। উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে তৃতীয় ধাপে ৫ ইউপিতে ২৮ নভেম্বর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ সব ইউপিতে নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে উপজেলা আওয়ামী লীগের অনেক জ্যেষ্ঠ নেতা ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে মাঠে নামতে শুরু করেছেন। ফলে সব ইউপিতে নৌকার ভরাডুবি আশঙ্কা করছে সাধারণ মানুষ।
জানা গেছে, কুলিয়ারচর ৭নং ইউনিয়নে মনোনয়ন পেয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও আওয়ামী যুব লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আহমদের ভাতিজা এস এম আজিজুল্লাহ। কিন্তু তিনি নৌকা মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকে ওই ইউনিয়নের উপজেলা কমিটির সব নেতা নৌকার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে প্রকাশ্যে বিদ্রোহী চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী পক্ষে সভা সমাবেশে অংশ নিচ্ছেন।
৬নং সালুয়া ইউনিয়নে মনোনয়ন পেয়েছে সাবেক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ছেলে মো. কাইয়ুম। তিনি মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও ইউনিয়নের মধ্যে উপজেলা কমিটির নেতাদের মধ্যে চরম ক্ষোভ লক্ষ করা গেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি উপরে উপরে কিছুটা স্বাভাবিক হলেও, নৌকার পাশে নেই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের অনেক নেতাকর্মী। একই চিত্র ৫নং ছয়সূতী ইউনিয়নেও। এখানে মনোনয়ন পেয়েছেন কুলিয়ারচর সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি ইকবাল হোসেন। তিনি মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকে তৃণমূল আওয়ামী লীগের প্রকাশ্যে বিরোধিতা করতে দেখা গেছে। এই ইউনিয়নেরও নেতাদের প্রকাশ্যে নৌকার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে মাঠে নামতে দেখা যাচ্ছে।
৪নং উছমানপুরের ইউনিয়নে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এই ইউনিয়নের বাসিন্দা ও ভোটার। কিন্তু তিনিও নেই নৌকা প্রার্থীর পক্ষে। এছাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকও নৌকা প্রার্থী মো. নিজাম ক্বারির পক্ষে নেই।
১নং গোবরিয়া-আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নের মনোনয়ন পেয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. এনামুল হক। তিনি মনোনয়ন পাওয়ার পর মনোনয়ন পরিবর্তনে সংবাদ সম্মেলনও হয়েছে। এখানেও নৌকার পাশে নেই অনেক নেতাকর্মী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কুলিয়ারচর উপজেলা আওয়ামী লীগের একাধিক জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের একক সিদ্ধান্ত ও সমন্বয় হীনতার কারণে প্রতিটি ইউনিয়নে এই ভয়াবহ চিত্র। তারা বলেন, গত ৫ বছরে উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটির মধ্যে কোনো একটি সাংগঠনিক সভা অনুষ্ঠিত হয়নি। কোনো নির্বাচন বা উপলক্ষেও কখনোই কারো কোনো মতামত নেয়া হয় না বা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় না। এবারের ইউপি নির্বাচনেও প্রার্থিতার বিষয়ে কমিটির কারো কাছে কোনো রকম পরামর্শ না নিয়ে প্রার্থিতা দেয়া হয়েছে। ভোট গ্রহণের সময় খুব কাছে চলে এলেও, এখন পর্যন্ত কীভাবে নেতাকর্মীরা নির্বাচন করবে তারও কোনো পরামর্শ করা হয়নি বলে জানান তারা। তারা বলেন, দলের এত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোসহ সবকিছুতে এমন সমন্বয়হীনতা থাকলে এমন বিরোধ স্বাভাবিক। এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মুর্শিদ উদ্দিন বলেন, আমি প্রায় ৩৫ বছর ধরে টানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে আছি। নির্বাচন ঘিরে আমাকেও বিন্দুমাত্র মূল্যায়ন করা হয়নি। কার কার নাম কেন্দ্রে পাঠানো হচ্ছে, এই লিস্ট পর্যন্ত আমাকে দেখতে দেয়া হয়নি। আমার অসুস্থতা জনিত সমস্যার সুযোগে তালিকার পেপারের নামের অংশ হাত দিয়ে ঢেকে অনেকটা ইচ্ছের বিরুদ্ধে আমার সাইন নেয় সাংগঠনিক সম্পাদক জাহির রায়হান জজ।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইমতিয়াজ বিন মুসা জিসানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, নৌকা তো একাধিক প্রার্থীর হাতে দেয়া যাবে না। অনেকে পছন্দের প্রার্থী মনোনয়ন না পাওয়ায় অনেকে মনঃক্ষুণ্ন আছে। আশা করি নির্বাচনের আগে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। তারপরও যদি কেউ নিদর্শনা না মানে, নৌকার বিরুদ্ধে কাজ করে, তবে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়