‘শিশু বক্তা’ রফিকুল মাদানীর বিরুদ্ধে চার্জশিট

আগের সংবাদ

চমক থাকছে টাইগার স্কোয়াডে ; মিরপুরে পতাকা উড়িয়ে পাকিস্তানের অনুশীলন

পরের সংবাদ

হাতি হত্যা : বন বিভাগের পদক্ষেপ জরুরি

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

গত ৮ দিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে অন্তত ৬টি হাতির মরদেহ মিলেছে। চট্টগ্রামের সাতকানিয়া ও বাঁশখালী, শেরপুরের শ্রীবরদী, কক্সবাজারের চকরিয়ার পূর্ণগ্রাম ও হারবাংয়ে এসব হাতি মারা গেছে গুলিতে অথবা বিদ্যুতের তৈরি ফাঁদে পা দিয়ে। একে নিছক মৃত্যু বললে ভুল হবে, বরং হাতিগুলোকে হত্যা করা হয়েছে। বিপন্ন প্রাণী হাতির এভাবে একের পর এক মৃত্যুতে আমরা উদ্বিগ্ন। প্রকৃতি সংরক্ষণবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা আইইউসিএন ও বন বিভাগের মতে, গত ১৭ বছরে ৯০টি হাতি হত্যার শিকার হয়েছে। এর মধ্যে ২০২০ সালেই ১১টি হাতির মৃত্যু হয়েছে। সব ঘটনাই চট্টগ্রাম-কক্সবাজার এলাকার। সেগুলোর মধ্যে ৭টি মারা যায় বিদ্যুৎস্পর্শে। বাকিগুলো মরেছে গুলি খেয়ে। গত শতাব্দীর শেষদিকেও দেশে হাতি ছিল ৫০০টি। ২০১৯ সালের হিসাব অনুযায়ী, হাতির সংখ্যা ২৬৩। দেশের মোট হাতির ৫৫ শতাংশই থাকে কক্সবাজার অঞ্চলে। বন বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, দেশে হাতির বিচরণের পথ দ্রুত কমে আসছে। গত ৬ বছরে বন্ধ হয়ে গেছে হাতি চলাচলের ৩টি করিডোর। বাধ্য হয়ে বিশালাকার এ প্রাণীটি মানুষের বসতি এলাকা দিয়েই চলাচলের চেষ্টা করছে। আর মানুষ আতঙ্কিত হয়ে হামলা চালিয়ে তাদের হত্যা করছে। এ সময়ে হাতি হত্যা করার ঘটনায় মোট মামলা হয়েছে ১৪টি। তবে একটি মামলাও নিষ্পত্তি হয়নি, কেউ সাজা পেয়েছেন, এমন নজিরও নেই। বিলুপ্তির ঝুঁকিতে থাকা এই ফরেস্ট ইঞ্জিনিয়ারকে রক্ষায় আছে কঠোর আইন, হাইকোর্টে করা হয়েছে রিট মামলাও। অথচ কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইন অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি হাতি হত্যা করেছে বলে প্রমাণিত হলে তিনি জামিন পাবে না এবং অপরাধীকে সর্বনিম্ন ২ বছর এবং সর্বোচ্চ ৭ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং সর্বনিম্ন ১ লাখ থেকে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড দেয়ার কথা বলা হয়েছে। একই অপরাধ পুনরায় করলে সর্বোচ্চ ১২ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং সর্বোচ্চ ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড দেয়ার বিধান আছে। তবে কেউ যদি হাতির হামলার শিকার হন এবং তার প্রাণ যাওয়ার শঙ্কা থাকে তাহলে জীবন রক্ষার্থে হাতি হত্যার এই বিধান প্রযোজ্য হবে না। কিন্তু দেখা যাচ্ছে বিনা কারণে হাতি হত্যা করা হচ্ছে। আমরা মনে করি, বর্তমানে যে পরিমাণ এশিয়ান হাতি রয়েছে তা রক্ষার্থে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তৎপরতা জরুরি এবং অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা না গেলে ধীরে ধীরে বিপন্ন এ জাতি হারিয়ে যাবে। বনভূমির জায়গা কোনোভাবেই মানুষের কাজের জন্য, সড়ক বা রেলপথ এমনকি চাষাবাদের জন্য ইজারা দেয়া বন্ধ করতে হবে। যেগুলো দখল হয়ে গেছে সেগুলো পুনরুদ্ধার করতে হবে। এক্ষেত্রে বন বিভাগকে তৎপর হতে হবে। বিশেষ করে বন্যপ্রাণী সুরক্ষায় নাগরিককে সোচ্চার আর সচেতন হতে হবে। যেখানেই বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত অপরাধ সংঘটিত হবে সেখানেই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। এখানে স্থানীয়দের ভূমিকাই মুখ্য।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়