‘শিশু বক্তা’ রফিকুল মাদানীর বিরুদ্ধে চার্জশিট

আগের সংবাদ

চমক থাকছে টাইগার স্কোয়াডে ; মিরপুরে পতাকা উড়িয়ে পাকিস্তানের অনুশীলন

পরের সংবাদ

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয় পেতে মরিয়া জামালরা

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : শ্রীলঙ্কায় চার জাতি টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের শুরুটা হয়েছিল হোঁচট দিয়ে। আসরের দুর্বল প্রতিপক্ষ সিশেলসের বিপক্ষে ড্র করেছিল জামালরা। পরের ম্যাচে অবশ্য ঘুর দাঁড়িয়ে শক্তিশালী মালদ্বীপের বিপক্ষে ২-১ গোল ব্যবধানে জিতেছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। ৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের সবার উপরে থাকা বাংলাদেশ নিজেদের শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জিতলে বা ড্র করলে পৌঁছে যাবে আসরটির ফাইনালে। শ্রীলঙ্কার কলম্বো রেসকোর্স স্টেডিয়ামে আজ বাংলাদেশ সময় বিকাল ৪টা ৩০ মিনিটে স্বাগতিকদের বিপক্ষে লড়াইয়ে নামবে জামাল ভূঁইয়ারা।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শেষবার বাংলাদেশ দল মুখোমুখি হয়েছিল মালদ্বীপে অনুষ্ঠিত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে। ওই ম্যাচে লঙ্কানদের ১-০ গোলে হারিয়েছিল জামালরা। সাফে ওই একটি ম্যাচেই জয় ছিল বাংলাদেশের। এবার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশ তাদের মাঠেই মোকাবিলা করবে। এই ম্যাচে জিতলে বা ড্র করলে বাংলাদেশ পৌঁছে যাবে আসরের ফাইনালে। তবে হারলে অনিশ্চিত হয়ে যাবে বাংলাদেশের ফাইনাল যাত্রা। এর আগে আসরের প্রথম ম্যাচে সিশেলসের বিপক্ষে প্রথমে এগিয়ে থাকা বাংলাদেশ ম্যাচের ৮৭তম মিনিটে গোল হজম করে ড্র করে মাঠ ছাড়ে। দ্বিতীয় ম্যাচে শক্তিশালী মালদ্বীপের বিপক্ষে শেষ সময়ের গোলে ২-১ ব্যবধানে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে জামালের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ দল।
শ্রীলঙ্কার রাজাপাকসে টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের লক্ষ্য চ্যাম্পিয়ন হওয়া। সে লক্ষ্যের অনেকটা কাছাকাছি বাংলাদেশের ছেলেরা। আসরের সবচেয়ে শক্তিশালী দল মালদ্বীপ। ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে যাদের অবস্থান ১৫৬। চারজাতি টুর্নামেন্টে সিশেলসের অবস্থান ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ের ১৯৯ স্থানে। ২০৪ এ আছে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা। আর বাংলাদেশ আছে র‌্যাঙ্কিংয়ের ১৮৭তম স্থানে। টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত দুই ম্যাচ করে খেলেছে প্রতিটি দল। দুই ম্যাচে এক জয় ও এক ড্রয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে বাংলাদেশ। সমান পরিসংখ্যানে দুইয়ে সিশেলস। দুই ম্যাচে এক জয় এক ড্রয়ে ১ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তিনে মালদ্বীপ। সমান সমীকরণে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা চারে। রাউন্ড রবিন লিগের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ মুখোমুখি হবে শ্রীলঙ্কার। আর সিশেলস লড়বে মালদ্বীপের বিপক্ষে। পয়েন্ট ব্যবধানে বাংলাদেশ ও সিশেলস এগিয়ে থাকলেও ফাইনালে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে চার দলেরই। বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হারলে এবং সিশেলস মালদ্বীপের বিপক্ষে হারলে তারাই ফাইনাল খেলবে। কিন্তু ম্যাচের ফলাফল যদি বিপরীত হয় অথবা ড্র হয় তাহলে টেবিলের সেরা দুই দলই যাবে ফাইনালে।
জয়ের পরিসংখ্যান, র‌্যাঙ্কিং সব দিক থেকে শ্রীলঙ্কার তুলনায় এগিয়ে বাংলাদেশ। এখন পর্যন্ত দুই দলের দেখা হয়েছে ১৭ বার। যেখানে বাংলাদেশের জয় ১১ ম্যাচে বিপরীতে হার ৪ ম্যাচে। বাকি দুই ম্যাচে ড্র করেছে দুই দল। বাংলাদেশ শেষবার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হেরেছিল ২০১৮ সালে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে। ওই ম্যাচে ১-০ গোলে হেরেছিল লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। সে প্রতিশোধ সাফে তুলে নিল জামালরা। এবার রাজাপাকসে টুর্নামেন্টের ফাইনালে খেলতে হলে জামালদের লঙ্কাদের বধ করতে হবে তাদেরই ঘরের মাঠে। অবশ্য ড্র হলেও ক্ষতি নেই। ফাইনালে যেতে বাংলাদেশের প্রয়োজন ১ পয়েন্ট।
এর আগে ২০০৩ সালের পর মালদ্বীপের বিপক্ষে রাজাপাকসে টুর্নামেন্টে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের জন্য সা¤প্রতিক সময়ে ভয়ংকর এক প্রতিপক্ষ মালদ্বীপ। সর্বশেষ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ২-০ গোলের হারটি ছিল দ্বীপ দেশটির বিপক্ষে বাংলাদেশের টানা চতুর্থ হারের লজ্জা। বাংলাদেশ কবে হারিয়েছিল মালদ্বীপকে তা অনেকে ভুলতেই বসেছিলেন। কারণ ২০০৩ সালের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের পর ৫ ম্যাচ খেলে চারটিতেই হেরেছে বাংলাদেশ। একটি ম্যাচ হয়েছিল ড্র। চার হারের মধ্যে ৫-০ গোলের লজ্জাজনক ব্যবধানও আছে। অথচ এক সময় এই দলটিকে গুনে গুনে গোল দিত বাংলাদেশের ফুটবালররা। এবার গুনে গুনে গোল না হোক, অন্তত ১৮ বছরের ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে তো বের হতে পারল জামালরা।
ওই ম্যাচে তপু বর্মণের শেষ মুহূর্তের পেনাল্টিতে জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছিল বাংলাদেশ। ম্যাচসেরা নির্বাচিত হয়ে তপু বলেন, ‘আমার দলের সবাই অনেক অনেক পরিশ্রম করেছে। মালদ্বীপকে ১৮ বছর পর হারালাম আমরা। সবাই খুব খুশি।’ সিশেলস বাংলাদেশের চেয়ে র‌্যাঙ্কিংয়ে অনেক পিছিয়ে। সেই দলের বিপক্ষে ড্র করেছিল বাংলাদেশ। র‌্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকা মালদ্বীপকে হারালেন জামালরা। দুই ম্যাচের পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করতে গিয়ে তপু বলেন, ‘সিশেলসের ম্যাচে মাঠ ভারি ছিল। মালদ্বীপের বিপক্ষে মাঠ ?তুলনামূলক ভালো ছিল। এই ম্যাচের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত কোচের নির্দেশনা মতো খেলতে পেরেছি। এর ফলে ফল পেয়েছি। ধন্যবাদ সবাইকে আমাদের সমর্থন দেয়ার জন্য।’
তপু দেশসেরা ডিফেন্ডার হলেও জাতীয় দলে তার গোল সংখ্যা এখন ছয়। সাফেও পেনাল্টি থেকে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গোল করেছিলেন। এই বছর জুনে আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয়সূচক গোলটি তারই। বাংলাদেশের এই বছর তিনটি জয়ের নায়ক এই ডিফেন্ডার তপু বর্মণ। তাই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আজকের ম্যাচে নিঃসন্দেহে তপু বাংলাদেশের বড় ট্রাম্পকার্ড।
মালদ্বীপের বিপক্ষে ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে তপুর পেনাল্টি গোলকেই মনে করেন বাংলাদেশ দলের নতুন কোচ মারিও ল্যামোস। তার মতে বাংলাদেশ দল মাঝমাঠের নিয়ন্ত্রণে ভালো ছিল- যার কারণে আশফাকরা সুযোগ তৈরি করতে পারেননি। তবে স্বাগতিকদের বিপক্ষে আজকের ম্যাচটিতে সমীহ করছেন কোচ ল্যামোস।
তিনি মালদ্বীপের বিপক্ষে লঙ্কানদের ম্যাচটিকে উদাহরণ টেনে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘শ্রীলঙ্কা স্বাগতিক দল। তারা যথেষ্ট ভালো খেলেছে। চার গোলে পিছিয়ে থেকে চার গোল করেছে। ফলে তাদের সমীহ করতেই হবে।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়