‘শিশু বক্তা’ রফিকুল মাদানীর বিরুদ্ধে চার্জশিট

আগের সংবাদ

চমক থাকছে টাইগার স্কোয়াডে ; মিরপুরে পতাকা উড়িয়ে পাকিস্তানের অনুশীলন

পরের সংবাদ

প্রথম দিনেই সংসদ উত্তপ্ত : হিন্দুরা কেন দেশ ত্যাগ করছে প্রশ্ন রুমিনের

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে কেন হিন্দুদের সংখ্যা কমছে, তারা কেন দেশ ত্যাগ করছে সে প্রশ্ন করেছেন।
বিএনপির সংরক্ষিত সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা। একাদশ জাতীয় সংসদের পঞ্চদশ অধিবেশনের প্রথম দিনে গতকাল রবিবার তিনি এ প্রশ্ন রাখেন। এর আগে সম্প্রতি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে একদলীয়ভাবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ৩ শতাধিক চেয়ারম্যান প্রার্থী বিনা প্রতিদ্ব›দ্বীতায় জয়লাভ করার বিষয়টি টেনে এনে বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ বলেছেন, এ সংসদেও কিন্তু অনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা রয়েছেন। তার এ মন্তব্যের পর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সংসদ।
বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদ এ সময় স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সংবিধানে মানবাধিকার, ভোটাধিকার চ্যাপটারের ১১ অনুচ্ছেদের এ সংক্রান্ত অংশ পড়ে শোনান এবং বলেন, প্রজাতন্ত্রের সব স্তরে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই জনগণের কার্যক্রম পরিচালিত করবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় এ সংসদেও অনির্বাচিত সংসদ সদস্য রয়েছেন। এ সময় স্পিকার এমপি হারুনকে বলেন, ‘মাননীয় সদস্য আমি আপনার কথা ঠিক বুঝলাম না’।
এ সময় হারুনুর রশীদ বলতে থাকেন আপনি আমাকে ফ্লোর দিয়েছেন আমাকে আমার বক্তব্য উত্থাপন করার সুযোগ দিন। আমি যদি আপনাকে বোঝাতে না পারি তাহলে তা প্রত্যাহার করে নেব। তবে এ সময় আওয়ামী লীগের এমপিরা তার কথায় বাধা দিতে থাকেন এবং হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। এরপর এমপি হারুন তার বক্তব্য স্পিকারের অনুরোধে প্রত্যাহার করে নিলে সংসদ শান্ত হয়। তবে তিনি এর সুষ্পষ্ট ব্যাখ্যা দাবি করেন।
বিএনপির এমপি হারুন বলেন, ইতোমধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু প্রায় ৩ শতাধিক ইউপিতে চেয়ারম্যানসহ গোটা পরিষদ বিনা ভোটে বিজয়ী হয়েছেন। বিনা প্রতিদ্ব›দ্বীতায় যারা নির্বাচিত হচ্ছে তাদের কী বলব, কাদের দ্বারা এরা নির্বাচিত? এর সুস্পষ্ট ব্যাখা চাই আপনার কাছে। অথচ সংবিধানে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কথা বলা হয়েছে।
হারুন বলেন, এবারে নির্বাচনে বিরোধীদল বিএনপি অংশ নিচ্ছে না। আজকে সরকারি ও সরকারি বিদ্রোহীরা মিলে সারাদেশে যে হানাহানি, খুনাখুনিতে লিপ্ত হয়েছে তাকে কী বলবেন? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্তব্য টেনে তিনি বলেন, উনি বলেছেন, স্থানীয় নির্বাচনে এটা নিজেদের মধ্যে ঝগড়াঝাটি।
হারুন বলেন, যেখানে ৪০ জনের অধিক লোক মারা গেল তাকে কি ঝগড়াঝাটি বলবেন? দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে আমরা কোথায় নিয়ে যাচ্ছি। আপনি (স্পিকার) আমাকে আমার বক্তব্য প্রত্যাহার করতে বলায় আমি সংসদ থেকে ওয়াক আউট করছি। পরে বক্তব্য দিতে উঠে বিএনপির সংরক্ষিত সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা বলেন, শীতের আমেজের মধ্যে আজকে সংসদ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। তিনি একটি পত্রিকায় খবরের তথ্য তুলে ধরে বলেন, ৫০ বছরে দেশে ৭৫ লাখ হিন্দু কমেছে। সংবিধানের ২এ (ক) ধারা বলছে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। অথচ সংবিধানে বলা হয়েছে দেশে সব ধর্মের মানুষের তাদের নিজ নিজ ধর্ম পালনের অধিকার আছে। আমাদের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম হলেও রাষ্ট্র পরিচালনার মূল চার নীতিতে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলা হয়েছে। ১৯৭৪ সালের চেয়ে বর্তমানে জনসংখ্যা দ্বিগুণের চেয়ে বেশি বেড়ে গেছে। কিন্তু সে তুলনায় হিন্দুদের সংখ্যা কিন্তু দিনে দিনে কমেছে। দেশ ত্যাগ করেছে। কিন্তু বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে কেন হিন্দুদের সংখ্যা কমে যাচ্ছে? যখন আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছি, তখন কেন সংখ্যালঘুরা নিরাপদ নয়। রুমিন বলেন, এ সরকারের ২০১২ সাল থেকে এ পর্যন্ত আমরা দেখি রামু, সাথিয়া, হোমনা, মালোপাড়া, ঠাকুরগাঁও, নাসিরনগর, বানারীপাড়া, গোবিন্দগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা হয়েছে। কিন্তু একটির বিচার হয়নি। বরং পুরস্কৃত করা হয়েছে- নাসিরনগরে যারা হামলার হোতা তাদের তিনজনকে চেয়ারম্যান প্রার্থী করা হয়েছিল। যদিও মিডিয়ার ব্যাপক সমালোচনায় তা প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। কিন্তু মনোনয়ন দেয়ায় সরকারের ভূমিকা বোঝা যায়।
তিনি বলেন, এ বছরে দুর্গাপূজার সময় চারটি জেলায় ব্যাপকভাবে হামলা হয়, মোট ২২টি জেলায় এ ব্যাপক হামলা হয়েছে। গত ৯ বছরে ৩ হাজার ৯৮৫টি হামলা হয়েছে। কুমিল্লার ঘটনার বিষয়ে তিনি বলেন, দুর্গা মূর্তির পায়ের নিচে যখন কুরআন শরিফ রাখা হলো, তখন সকাল ৭টা বাজে, সেখানে ওসি কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নিল না বরং ওসির সামনে ফেসবুকে লাইভ হলো। ফেসবুকে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হওয়ার পরে হামলা ছড়িয়ে পড়ল। তিনি বলেন, এখানে আওয়ামী লীগ দলীয় কর্মীদের ও ছাত্রলীগের কর্মীদের নাম এসেছে। এ মামলায় হাজার হাজার মানুষকে আসামি করা হলো। কেন এটা করা হলো এমন প্রশ্ন করেন তিনি? এ সময় স্পিকার তাকে আর সময় না দিলে মাইক বন্ধ হয়ে যায়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়