‘শিশু বক্তা’ রফিকুল মাদানীর বিরুদ্ধে চার্জশিট

আগের সংবাদ

চমক থাকছে টাইগার স্কোয়াডে ; মিরপুরে পতাকা উড়িয়ে পাকিস্তানের অনুশীলন

পরের সংবাদ

ইসি মাহবুব তালুকদার : নির্বাচন এখন আইসিইউতে গণতন্ত্র লাইফ সাপোর্টে

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন আদতে রক্তাক্ত নির্বাচনে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। গতকাল রবিবার ইসি ভবনের নিজ কক্ষে সাংবাদিকদের সামনে লিখিত বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, প্রকৃতপক্ষে নির্বাচন এখন আইসিইউতে। এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে গণতন্ত্র এখন লাইফ সাপোর্টে। গতকাল রবিবার ‘দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ও অন্যান্য প্রসঙ্গ : আমার কথা’ শিরোনামে লিখিত বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
মাহবুব তালুকদার বলেন, সংবিধানের বাধ্যবাধকতা সত্ত্বেও দীর্ঘ ৫০ বছরেও নির্বাচন কমিশন গঠন আইন প্রণয়ন করা যায়নি। নিরপেক্ষভাবে ইসি গঠন করে সব দলের স্বার্থ সংরক্ষণ এবং তা সব দলের গ্রহণযোগ্য করার আহ্বান জানান তিনি। দুই ধাপের নির্বাচনে ৩৯ জন মারা যাওয়ায় এটাকে রক্তাক্ত নির্বাচন আখ্যায়িত করে তিনি বলেছেন, সব দলের প্রার্থীর কাছে এ বার্তা পৌঁছে দিতে হবে যে বিজয় জীবনের চেয়ে কোনোভাবেই বড় নয় কিন্তু নির্বাচন কমিশন এ বার্তা পৌঁছে দিতে ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি বলেন, এবারের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে রক্তাক্ত নির্বাচন বললে অত্যুক্তি হবে না। নির্বাচনের সময় ও এর আগে-পরে এ পর্যন্ত ৩৯ জন নিহত হন। গত ১১ নভেম্বর ৮৩৪টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় ৮০ জন চেয়ারম্যান পদে আসীন হন। একে আক্ষরিক অর্থে নির্বাচন বলা যায় না। যেখানে প্রতিদ্ব›িদ্বতা নেই, সেখানে নির্বাচন নেই। ইউপি নির্বাচন দলীয় ভিত্তিতে না হয়ে আগের মতো সবার জন্য উন্মুক্ত হলে বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ থাকবে না।
তিনি বলেন, দেশে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর অসহিষ্ণু মনোভাব গণতন্ত্রকে অন্তিম অবস্থায় নিয়ে গেছে। খেলায় যেমন পক্ষ-বিপক্ষের প্রয়োজন হয়, তেমনি একপক্ষীয় কোনো গণতন্ত্র হয় না। বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য যে কোনো মূল্যে গণতন্ত্রকে আমরা লাইফ সাপোর্ট থেকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে চাই। এজন্য দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা প্রয়োজন।
তিনি আরো বলেন, এই সংকট নিরসনে সব দলের সমঝোতা অপরিহার্য। একপক্ষীয় আইন করে কোনো লাভ হবে না। একপক্ষীয় আইন কেবল একদলীয় শাসনের পথ উন্মুক্ত করে। বিষয়টির যত তাড়াতাড়ি ফয়সালা হয়, ততই মঙ্গল। নইলে দেশব্যাপী নৈরাজ্যের আশঙ্কা আছে। আমার মতে পৃথক একটি স্থানীয় নির্বাচন কর্তৃপক্ষ গঠন করে এসব নির্বাচন করা যায়। যে নির্বাচন প্রক্রিয়া নির্বাচন কমিশন ঠিক করে না, তার দায় কমিশন কেন নেবে? তবে এই পরিবর্তন রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ব্যাপার।
জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনের বড় সমস্যা হলো রিটার্নিং অফিসারদের রাজনৈতিক বাস্তবতার কারণে স্থানীয় সংসদ সদস্যদের কিংবা স্থানীয় নেতাদের প্রকাশিত ও অপ্রকাশিত মনোভাব অনুধাবন করে চলতে হয়। ফলে তারা হানাহানি, গোলযোগ ও আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগগুলো ধামাচাপা দিতে চান। তাদের ধামাধরা না হয়ে উপায় থাকে না। বিভিন্ন নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসারদের সঙ্গে কথা বলে আমার এই ধারণা হয়েছে। তাদেরকে নির্বাচনে সাহসী ভূমিকা পালনের কথা বলে লাভ নেই।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়