কক্সবাজার : জহিরুল হত্যার ঘটনায় শিবির নেতা গ্রেপ্তার

আগের সংবাদ

‘ভয়কে জয়’ করেছেন এসএসসি পরীক্ষার্থীরা

পরের সংবাদ

মালদ্বীপকে হারিয়ে ফাইনালে জামালরা

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত রাজাপাকসে টুর্নামেন্টে অংশ নেয়ার আগে বাংলাদেশের ফুটবলাররা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছিলেন। কিন্তু দুর্বল সিশেলসের বিপক্ষে ড্র করার পর মনে হচ্ছিল সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের পুনরাবৃত্তি হতে যাচ্ছে। ওই আসরে বাংলাদেশ ফাইনাল খেলার আশার কথা জানালেও ব্যর্থ হয়ে দেশে ফিরে আসেন।
তবে এবার নিজেদের লক্ষ্যে অটুট জামাল ভূঁইয়ারা। চার জাতি টুর্নামেন্টে শক্তির বিচারে এগিয়ে থাকা মালদ্বীপকে গতকাল ২-১ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে আসরটির ফাইনালের পথে বাংলাদেশ। এ জয়ে প্রায় ১৮ বছর পর দেশটির বিপক্ষে জয় তুলে নিল বাংলাদেশ। নিজেদের শেষ ম্যাচে আগামী সোমবার স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ড্র বা জয় তুলে নিলে ফাইনাল নিশ্চিত করবে বাংলাদেশ।
এর আগে শ্রীলঙ্কার কলম্বো রেসকোর্স স্টেডিয়ামে মালদ্বীপের বিপক্ষে গতকাল সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের প্রতিশোধ নিতে মাঠে নামে জামাল ভূঁইয়ার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ। শুরু থেকেই আধিপত্য বিস্তার ছিল বাংলাদেশের খেলায়। লক্ষ্যে অটুট বাংলাদেশ সাফল্যের দেখা পায় ম্যাচের ১২তম মিনিটে। প্রথমার্ধে ম্যাচের ১২ মিনিটে রহমত মিয়ার লম্বা থ্রো থেকে জামাল ভূঁইয়া গোল করে এগিয়ে দেন দলকে। যদিও গোলটি বাংলাদেশকে আদায় করতে হয়েছে রেফারির কাছে জোর আবেদন করে। জামাল বল জালে পাঠালেও সহকারী রেফারি পতাকা উঠান অফসাইডের। জামালদের আবেদনে সহকারী রেফারির সঙ্গে আলোচনা করে গোলের বাঁশি বাজান রেফারি।
জাতীয় দলের জার্সিতে এই প্রথম গোলের দেখা পেলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক। এর আগে অনূর্ধ্ব-২৩ দলের হয়ে ২টি গোল আছে তার। তবে সেটি ছিল বয়সভিত্তিক দলে। মালদ্বীপের বিপক্ষে এই লড়াই দিয়েই তাই মূল দলের হয়ে প্রথম গোলের দেখা পেলেন ৫৮তম ম্যাচে এসে।
লিড পাওয়ার পর প্রতি আক্রমণে পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ। এর আগে সিশেলসের বিপক্ষে ম্যাচেও একই দৃশ্য দেখা যায়। জয়ের দ্বারপ্রান্তে থাকা ম্যাচটি ৮৭তম মিনিটে ফস্কে যায় বাংলাদেশের হাত থেকে। তবে মালদ্বীপের বিপক্ষে হোঁচট টা বাংলাদেশ একটু আগেই খেয়ে ফেলে। ম্যাচের ৩২ মিনিটে মালদ্বীপকে সমতায় ফেরান ইব্রাহিম আইসাম। কর্নার থেকে ৬ গজ দূরত্ব থেকে লক্ষ্যভেদ করেন এই ফুটবলার।
বিরতির পর মালদ্বীপ দাপট দেখানোর চেষ্টা করে। বেশ কয়েকবার ভয় ছড়িয়েছে বাংলাদেশের রক্ষণে। যদিও গোল পায়নি, পরাস্ত করতে পারেনি বাংলাদেশের গোলরক্ষক জিকোকে। বরং বাংলাদেশ তিনটি সুযোগ থেকে একটি গোল আদায় করে নেয়। বদলি খেলোয়ার নেমে ফয়সাল আহমেদ ফাহিম ও জুয়েল রানা নিজেদের প্রমাণ করার চেষ্টা করেছেন। ৬০ মিনিটে ফয়সাল বক্সের ভেতরে বল পেয়ে লক্ষ্যে শট নিতে পারেননি। মিনিট ছয়েক পর রহমত মিয়ার লম্বা থ্রো-ইন থেকে আবারো ফাহিমের শট দূরের পোস্ট দিয়ে যায়। তবে ম্যাচের ৮৭ মিনিটে বাংলাদেশ সফল হয়। জুয়েল রানাকে নিজেদের সীমানায় ফেলে দেন মালদ্বীপ গোলকিপার আলী নাইজ। শ্রীলঙ্কান রেফারি বাজান পেনাল্টির বাঁশি। স্পট কিকের সুযোগটা নষ্ট করেননি তপু বর্মণ। গোলকিপারের বিপরীত দিক দিয়ে জোরালো শটে লক্ষ্যভেদ করে ৩ পয়েন্ট এনে দেন এই ডিফেন্ডার। তার গোলে ২-১ গোলের ব্যবধানে লিড নিয়ে ১৮ বছর পর মালদ্বীপের বিপক্ষে জয়ের উল্লাসে মেতে ওঠে বাংলাদেশ।
যার সূচনা ও শেষ দুই ডিফেন্ডারের মাধ্যমে। এরই সঙ্গে বাংলাদেশের কোচ হিসেবে মারিও লামোস পেয়ে যান প্রথম জয়। ১৬ নভেম্বর রাউন্ড রবিন লিগের শেষ ম্যাচে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। দুই ম্যাচে ১ ড্র ও ১ জয় থেকে ৪ পয়েন্ট নিয়ে এখন টেবিলের শীর্ষে বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শেষ ম্যাচ ড্র করলেই ফাইনাল নিশ্চিত বাংলাদেশের।
এদিকে ২০০৩ সালের পর মালদ্বীপের বিপক্ষে জয় পেল বাংলাদেশ। বাংলাদেশের জন্য সাম্প্রতিক সময়ে ভয়ংকর এক প্রতিপক্ষ মালদ্বীপ। সর্বশেষ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ২-০ গোলের হারটি ছিল দ্বীপ দেশটির বিপক্ষে বাংলাদেশের টানা চতুর্থ হারের লজ্জা। বাংলাদেশ কবে হারিয়েছিল মালদ্বীপকে তা অনেকে ভুলতেই বসেছিলেন। কারণ ২০০৩ সালের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের পর ৫ ম্যাচ খেলে চারটিতেই হেরেছে বাংলাদেশ। একটি ম্যাচ হয়েছিল ড্র। চার ম্যাচ হারের মধ্যে ৫-০ গোলের লজ্জাজনক ব্যবধানও আছে। অথচ এক সময় এই দলটিকে গুনে গুনে গোল দিত বাংলাদেশের ফুটবলাররা। এবার গুনে গুনে গোল না হোক, অন্তত ১৮ বছরের ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে তো বের হতে পারল জামালরা।
এদিকে হারের ফলে চার জাতির এই আসরের শক্তিশালী দলটির ফাইনালের যাত্রা ক্ষীণ হয়ে এসেছে। শ্রীলঙ্কা সিশেলস ম্যাচে জয় তুলে নিলে, বাংলাদেশের বিপক্ষে ড্রই তাদের ফাইনালে পৌঁছে দিবে। তবে শ্রীলঙ্কার জয় তুলতে না পারলে মালদ্বীপের সম্ভাবনা থাকবে ফাইনালে যাওয়ার। আবার বাংলাদেশ স্বাগতিকদের বিপক্ষে হারলে ফাইনালের রাস্তা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।
২ ম্যাচে সমান এক জয় ও ড্রয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে আসরের পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষ দল বাংলাদেশ। সিশেলস ম্যাচের আগ পর্যন্ত এক ম্যাচে ড্রয়ে ১ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার দুইয়ে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা। এক ম্যাচে ১ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার তিনে সিশেলস। দুই ম্যাচে এক হার ও এক ড্রয়ে ১ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার তলানিতে মালদ্বীপ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়