২০১২ সাল থেকে ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করা ছবি টুইটারে প্লেন টেক্সট লিংক আকারে দেখা যাচ্ছিল। টুইটার পোস্টে ক্লিক করলে ফের ইনস্টাগ্রামে ছবিটি দেখা যেত। অবশ্য ২০১২ সালে ফেসবুক কিনে নেয়ার পর ইনস্টাগ্রামে এ নিয়ম চালু হয়েছিল। এর আগে ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করা ছবি টুইটারসহ বিভিন্ন সোস্যাল প্লাটফর্মে শেয়ার করা যেত। তীব্র প্রতিযোগিতা এবং পেশাগত প্রতিদ্ব›িদ্বতার জেরে নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপ নিয়েছিল ইনস্টাগ্রাম। স¤প্রতি তিক্ততা প্রশমনের ইঙ্গিত দিয়ে নিজস্ব টুইটার অ্যাকাউন্টে এক টুইট করে ইনস্টাগ্রাম। বুধবারের টুইটে ইনস্টাগ্রাম লেখে, তারা বলেছিল এমনটা আর কখনো হবে না। এ সমঝোতার পেছনে উভয় প্লাটফর্মের মধ্যে যে সা¤প্রতিক বছরগুলোতে পর্দার আড়ালে বেশ আলোচনা হয়েছে সেদিকে ইঙ্গিত দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।
২০১০ সালের অক্টোবরে ইনস্টাগ্রাম যখন যাত্রা শুরু করেছিল, তখন তাদের প্লাটফর্মের ছবি টুইটারে শেয়ার করা ছিল অনেক সহজ। ওই সময়টাতে টুইটার প্লাটফর্মে সরাসরি ছবি পোস্ট করা যেত না। ওয়াইফ্রগ ও ফটোবাকেটের মতো থার্ড পার্টির বিভিন্ন সেবার মাধ্যমে ছবি শেয়ার করতে হতো। শিগগিরই টুইটে ছবি শেয়ারের জনপ্রিয় প্লাটফর্ম হয়ে দাঁড়ায় ইনস্টাগ্রাম। এছাড়া টুইটার ও ইনস্টাগ্রামের প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে আগে থেকেই বন্ধুত্বমূলক সম্পর্ক ছিল। টুইটার সিইও জ্যাক ডরসি এবং ইনস্টাগ্রামের সহপ্রতিষ্ঠাতা কেভিন সিস্ট্রম অডিও নামে একটি প্লাটফর্মে একসঙ্গে কাজ করেছিলেন। জ্যাক ডরসি নিজেই ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা ছবি টুইটারে শেয়ার করতেন। জ্যাক ডরসির সঙ্গে সঙ্গে ইনস্টাগ্রামে প্রবেশ করে জাস্টিন বিবার ও স্নুপ ডগের মতো সেলিব্রিটি। সহজেই ইনস্টাগ্রামে ছবি শেয়ারের মাধ্যমে টুইটার উপকৃত হয়েছে। আবার সদ্য চালু হওয়া ইনস্টাগ্রামের জনপ্রিয়তায় ভূমিকা রেখেছে মাইক্রোব্লগিং সাইটটি। কিন্তু টুইটার ও ইনস্টাগ্রামের এ মধুর সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী হলো না। ২০১২ সালের এপ্রিলে ৭১ কোটি ৫০ লাখ ডলারে ইনস্টাগ্রাম কিনে নেয় ফেসবুক। এ সময় ইনস্টাগ্রাম কিনে নেয়ার দৌঁড়ে ছিল টুইটারও। কিন্তু কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ না করা এবং বিশাল অডিয়েন্সের কাছে ইনস্টাগ্রাম পৌঁছে দেয়ার প্রতিশ্রæতির মাধ্যমে তা কিনে নেয় ফেসবুক। ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা ছবি টুইটারে শেয়ার করা হলে তা আর টুইটার টাইমলাইনে দেখা যাবে না। নো ফিল্টার নামে একটি বইয়ে সারাহ ফ্রায়ার বলেন, ফেসবুক শীর্ষ নেতৃত্ব মনে করছিল টুইটারে ইনস্টাগ্রামের ফটো প্রিভিউ শেয়ার প্লাটফর্মটির স¤প্রসারণের পথ প্রশস্ত এবং বিজ্ঞাপন প্রাপ্তির সুযোগ তৈরি করছে। ফেসবুকের এ পদক্ষেপে টুইটারের ক্ষোভ আরো বেড়েছে। নয় বছর চলে গেল। ২০১৮ সালে ফেসবুক ছেড়ে চলে যান ইনস্টাগ্রামের সহপ্রতিষ্ঠাতারা। এরই মধ্যে ফটো শেয়ারিং প্লাটফর্মটির ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১০০ কোটি ছাড়ায়। টুইটারও তাদের সেবায় অনেক পরিবর্তন আনে এবং বিভিন্ন প্লাটফর্মের সঙ্গে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক গড়ে। তবে বিশ্বজুড়ে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো যখন প্রাইভেসি, তথ্য পাচার ও একচেটিয়া ব্যবসা নিয়ে কড়া নজরদারি ও কঠোর সমালোচনার মুখোমুখি হচ্ছে, তখন অনেক প্লাটফর্মই নিজেদের বিরোধ মীমাংসার দিকে এগোচ্ছে। কীভাবে একসঙ্গে কাজ করা যায়, তা খুঁজতে ইনস্টাগ্রামের সিইও অ্যাডাম মসেরিকে সরাসরি বার্তা পাঠিয়েছেন টুইটার প্রতিষ্ঠাতা ডরসি। স¤প্রতি একসঙ্গে পিজা খেয়েছেন ইনস্টাগ্রাম সিইও মসেরি ও টুইটারের বিজনেস হেড বেইকপাউয়ার। সূত্র : দ্য ভার্জ