দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদ : চট্টগ্রামে বিএনপির বিক্ষোভ

আগের সংবাদ

ঢিমেতালের ফাঁদে সোনালি ব্যাগ : সিলিং মেশিনে আটকে আছে উৎপাদন, বাড়ানো হয়েছে প্রকল্পের মেয়াদ

পরের সংবাদ

গণপরিবহনে ভাড়া নৈরাজ্য চলছেই : তৎপর ভ্রাম্যমাণ আদালত, বিআরটিএ, মালিক-শ্রমিকের ‘ভিজিল্যান্স টিম’

প্রকাশিত: নভেম্বর ১২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : গণপরিবহনে বাস ভাড়া বাড়ানোর নির্দেশনার পর মাঠপর্যায়ে শুরু হওয়া নৈরাজ্য থামাতে এবার সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়, বিআরটিএ ও মালিক-শ্রমিক একত্রে মাঠে নেমেছে। তারা দপ্তরে বসে না থেকে সরজমিন রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে গিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত বাস ভাড়া নেয়া হচ্ছে কিনা, তা খতিয়ে দেখছেন। একই সঙ্গে বিআরটিএ-এর মোবাইল কোর্টের তৎপরতাও অব্যাহত রয়েছে। অনিয়ম করলে বাস ডাম্পিংয়ে পাঠানো হবে বলে সড়ক সচিব সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করেছেন।
বাসে যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি বাস ভাড়া আদায় করা হচ্ছে কিনা তা নিজের চোখে দেখতে দেখতে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নজরুল ইসলাম নিজেই মহাখালী বাস টার্মিনাল এলাকায় হাজির হন। বিআরটিএ চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার তার সঙ্গে ছিলেন। তারা চলমান ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিস্থিতি স্বচক্ষে দেখেন। দূরপাল্লার বাস ও কাউন্টারে গিয়ে ভাড়া আদায় পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন, যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন। টার্মিনালের লোকজন তাকে জানায়, দূরপাল্লার বাসে সরকার নির্ধারিত হারের অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা

হচ্ছে। তখন টার্মিনালের সামনের রাস্তায় নির্বাহী মেজিস্ট্রেট সাজিদ আনোয়ারের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালাচ্ছিল। এই অভিযোগ পাওয়ার পর সচিব নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে গিয়ে এর প্রতিকারে অভিযান জোরদার করার নির্দেশ দেন। তিনি যাত্রীদেরও আশ্বস্ত করে বলেন, অতিরিক্ত ভাড়া নেয়া হলে ভ্রাম্যমাণ আদালত তা ফেরত দেয়ার ব্যবস্থা নেবে। এরপরও বাড়তি ভাড়া নিলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমরা ওই বাসকে ডাম্পিং করব এবং রুট পারমিট বাতিল করব।
তিনি জানান, ডিজেলের দাম বাড়ার পর ডিজেলচালিত বাসগুলোর জন্য নতুন ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন আর বাড়তি ভাড়া নেয়ার সুযোগ নেই। সে জন্য বিআরটিএ ও পুলিশের সমন্বয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে মনিটর করা হচ্ছে।
এদিকে বিআরটিএ-এর বেঁধে দেয়া বাস ভাড়ার অতিরিক্ত বাড়া আদায় করা হচ্ছে কিনা তা তদারকিতে বিআরটিএ-এর সঙ্গে পরিবহন মালিক-শ্রমিকের গঠিত ভিজিল্যান্স টিমও রাস্তায় নেমেছে। ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির দপ্তর সম্পাদক সামদানী খন্দকার জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে ঢাকার ১২০টি পরিবহন কোম্পানির নেতৃস্থানীয় স্তরের নির্দেশনায় মোট ১১টি ভিজিল্যান্স টিম কাজ করছে।
অপরদিকে বিআরটিএ-এর ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানও চলছে। গত বৃহস্পতিবার সকালে মহাখালী বাস টার্মিনালে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাজিদ আনোয়ারের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত কার্যক্রম শুরু করে। এ সময় বেশ কয়েকটি বাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়। তিনি জানান, ভ্রাম্যমাণ আদালত প্রথমে টার্মিনালের বাস কাউন্টারগুলোতে নতুন ভাড়ার তালিকা টানানো হয়েছে কিনা তা যাচাই করছে। এরপর নগর পরিবহনের বাসগুলোর হাল-হকিকত দেখা হচ্ছে। সিএনজিচালিত বাসগুলো চিহ্নিত করার জন্য বাসের গায়ে বিআরটিএ-এর স্টিকার লাগিয়ে দেয়া হচ্ছে। অভিযানকালে ভাড়া আদায়ে অনিয়ম করায় ৬টি বাসকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একটি বাস একজন যাত্রীর কাছ থেকে ৩৩ টাকার ভাড়া ৫০ টাকা নিচ্ছে, এ অভিযোগ পাওয়ার পর ওই যাত্রীকে ১৭ টাকা ফেরত দেয়া এবং ওই বাসকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সাজিদ আনোয়ার জানান, মক্কা ট্রান্সপোর্টের তিনটি বাসের জরিমানা করা হয়েছে। আগামীতে অনুরূপ অপরাধের সাজা হিসেবে সেগুলোকে ডাম্পিং করা ও রুট পারমিট বাতিল করা হবে।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের সঙ্গে থাকা ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মো. আজমল উদ্দীন আহমেদ বলেন, আমরা দূরপাল্লার বাসের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের অভিযোগ পাইনি। অনিয়ম পাওয়া যাচ্ছে সিটি সার্ভিসের বাসগুলোর বিরুদ্ধে। কোন বাসের বিরুদ্ধে কতগুলো অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে তার তালিকা করা হচ্ছে। তালিকা ধরে এরপর কাউন্টারও বন্ধ করা হবে। অল্পকিছু অপরাধীর দায় পুরো পরিবহন খাত নেবে না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়