দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদ : চট্টগ্রামে বিএনপির বিক্ষোভ

আগের সংবাদ

ঢিমেতালের ফাঁদে সোনালি ব্যাগ : সিলিং মেশিনে আটকে আছে উৎপাদন, বাড়ানো হয়েছে প্রকল্পের মেয়াদ

পরের সংবাদ

পাকিস্তানের হৃদয় ভেঙে ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া

প্রকাশিত: নভেম্বর ১২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১২, ২০২১ , ২:০১ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : টানা ৫ ম্যাচ জিতে আকাশে উড়তে থাকা পাকিস্তানকে গতকাল টি- টোয়েন্টি বিশ^কাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ৫ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। রোমাঞ্চকর সেমিফাইনালে গতকাল বাবর আজমদের হৃদয় ভেঙে অস্ট্র্রেলিয়াকে ফাইনালের টিকেট এনে দেন ম্যাথু ওয়েড। মাত্র ১৭ বলে অপরাজিত ৪১ রানের নান্দনিক ইনিংস খেলেন তিনি। ১৫ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১১৫ রান তোলে অস্ট্রেলিয়া যখন হারের শংকায় কাপছে তখনই ত্রাতা হয়ে আবির্ভূত হন ম্যাথু ওয়েড। ষষ্ঠ উইকেটে মার্কাস স্টয়নিসকে সঙ্গী করে ২৪ বলে ৬২ রান তোলে দলকে কাক্সিক্ষত বিজয় এনে দেন এ জুটি। ১৭ বলে অপরাজিত ৪১ রানের ইনিংস খেলার পথে ২ চার এবং ৪টি ছক্কা হাঁকান ম্যাথু ওয়েড। দুর্দান্ত ইনিংস খেলায় ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছেন তিনি। রবিবার ১৪ নভেম্বর ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের মোকাবিলা করবে অস্ট্রেলিয়া। এ ক্রিকেট বিশ^ টি-টোয়েন্টি বিশ^কাপে নতুন চ্যাম্পিয়নের দেখা পাবে। আগের ছয় আসর থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২ বার, ভারত, পাকিস্তান, ইংল্যান্ড এবং শ্রীলঙ্কা একবার করে বিশ^কাপের শিরোপা জিতেছে।
পাঁচবারের ওয়ানডে বিশ^কাপের শিরোপাধারী অস্ট্রেলিয়া। এবার টি-টোয়েন্টি বিশ^কাপে ট্রফি ছুঁয়ে দেখার সুযোগ পাচ্ছে। ২০১০ সালে শেষবার সংস্করণটির ফাইনালে উঠলেও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হেরে শিরোপা হাতছাড়া হয় তাদের। ফের সেই সুযোগ হাতছানি দিচ্ছে অজিদের। এ ফাইনালে ওঠা নিশ্চিত করতে গতকাল পাকিস্তানের বিপক্ষে সেমির বাধা টপকানো ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। দুবাইয়ে টসে জিতে পাকিস্তানকে ব্যাটিংয়ে পাঠান অজি অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৪ উইকেট হারিয়ে পাকিস্তান সংগ্রহ করে ১৭৬ রান। অস্ট্রেলিয়ান ফিল্ডাররা সহজ ৪টি ক্যাচ লুফে নিতে পারলে পাকিস্তানের সংগ্রহ এত বড় হতো না। ক্যাচ মিস মানে ম্যাচ মিস নয় এ সত্যকে প্রমাণ করে পাকিস্তানকে গতকাল দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ৫ উইকেটে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করেছে অস্ট্রেলিয়া। তাও আবার ৬ বল হাতে রেখে। পাকিস্তানের ১৭৭ রানের চ্যালেঞ্জের জবাব দিতে নেমে ১৯ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৭৭ রান সংগ্রহ করে অ্যারন ফিঞ্চ বাহিনী। গতকাল পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে ফখর জামান ৩২ বলে অপরাজিত ৫৫ রান করেন। মোহাম্মদ রিজওয়ান করেছেন ৫২ বলে ৬৭ রান।
পাকিস্তানের ১৭৬ রানের জবাবে খেলতে নেমে শুরুতেই অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চের উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়ায়। দলীয় এক রানের মাথায় ফিঞ্চকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন পেসার শাহীন আফ্রিদি। এরপর নিয়মিত উইকেট হারাতে থাকে অজিরা। একপর্যায়ে ১৫ ওভারে ৫ উইকেটে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ দাঁড়ায় ১১৫। ম্যাচ জিততে ৩০ বলে অজিদের করতে হবে ৬২ রান। ষষ্ঠ উইকেটে মার্কাস স্টয়নিসকে সঙ্গী করে জুটি গড়েন ম্যাথু ওয়েড। এ দুজন ২৪ বলে ৬২ রানের পার্টনারশিপ গড়ে দলকে ফাইনালে পৌঁছে দেন।
অজি ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নারের আউটটি ছিল দুভাগ্যজনক। ৩০ বলে ৪৮ রান করেন তিনি। মিচেল মার্শ ২২ বলে ২৮ রান করে শাহদাব খানের বলে আসিফ আলী হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজ ঘরে ফিরেন। পাকিস্তানি স্পিনার শাহদাব খান ৪ ওভারে ২৬ রান দিয়ে ৪ উইকেট তুলে নেন। ১৮ বলে অজিদের জয়ের জন্য প্রয়োজন ৩৭ রানের। এ সময় ১৮তম ওভারে বাবর আজম বল তুলে দেন হাসান আলীর হাতে। মার্কাস স্টয়নিস ও ম্যাথু ওয়েড ১৫ তোলে পাক শিবিরে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন। ১৯তম ওভারে বল করতে এসে শাহীন আফ্রিদি রান দেন ২২। আফ্রিদির ৩ বলে বিশাল ৩টি ছক্কা হাঁকান ম্যাথু ওয়েড। মার্কাস স্টয়নিস ৩১ বলে ৪০ এবং ম্যাথু ওয়েড ১৭ বলে ৪১ রানে অপরাজিত ইনিংস খেলে অজি সমর্থকদের মুখে হাসি ফুটিয়ে তোলেন।
বিশ^কাপে গ্রুপ পর্বে দুর্দান্ত খেলে পাকিস্তান। সুপার টুয়েলভের পাঁচ ম্যাচের সব অপরাজিত থেকে সেমিতে খেলছে তারা। অন্যদিকে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে একটি হার বাদে বাকি সব ম্যাচেই জয় পেয়েছে অস্ট্রেলিয়া। গতকাল টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে পাকিস্তানের ভিত গড়ে দেন দুই ওপেনার বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ান। দুইজনের জুটিতে প্রথম ৬ ওভারে রান আসে ৪৭। অবশ্য পাওয়ার প্লেতে বেশ কিছু ক্যাচের সুযোগ মিস করে উইকেটশূন্য থাকেন অজি বোলাররা। কিন্তু এরপর অজি অধিনায়ক আক্রমণভাগে স্পিনার নিয়ে এলে রানের গতি মন্থর হয়ে আসে। ১০ ওভার শেষে দুজনের জুটিতে আসে ৭১ রান। ওই ওভারের শেষ বলে বাবরকে সাজঘরে ফেরান অ্যাডাম জাম্পা। ৩৪ বলে ৩৯ রান করা পাক অধিনায়ক জাম্পাকে তুলে মারতে গিয়ে বাউন্ডারিতে ডেবিড ওয়ার্নারের তালুুবন্দি হন। চলতি বিশ^কাপে চার ফিফটি তুলে নেয়া বাবর ৬ ম্যাচে ৩০৩ রান সংগ্রহ করে আসরের সর্বোচ্চ রানের মালিক। অন্যপ্রান্তে দাঁড়িয়ে রিজওয়ান অবশ্য ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিতে থাকেন। ১২তম ওভারে বল করতে আসা জাম্পার বলে তুলে নেন ১৪ রান। দ্বিতীয় উইকেটে নামা ফখর জামানকে নিয়ে রিজওয়ান ১৩.৫ ওভারে পাকিস্তানকে ১০০ রানের ঘর পার করে দেন। আর পরের বলেই পাক ওপেনার তুলে নেন চলতি বিশ^কাপে নিজের তৃতীয় অর্ধশতক। ৪১ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কার সাহায্য ফিফটির ঘর স্পর্শ করেন রিজওয়ান। একই সঙ্গে চলতি বছরে ১ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি। ফখর জামান ও রিজওয়ান দ্বিতীয় উইকেটে ৩৪ বলে ৫০ রানের জুটি গড়েন। তবে ব্যাটে বলে ঠিক নিজেদের মেলে ধরতে পারছিলেন না এই দুই ব্যাটসম্যান। শেষ দিকে যেমন রান দরকার ঠিক তেমনটা দলের খাতায় যোগ করতে পারছিলেন না রিজওয়ান-জামান। তবে ১৭তম ওভারে দুই ব্যাটসম্যান আক্রমণে আসা জশ হ্যাজেলউডকে তুলাধুনা করে ২১ রান তুলে কিছুটা পুষিয়ে নেন। পরের ওভারে বল করতে এসে মিচেল স্টার্ক তুলে নেন রিজওয়ানের উইকেট। ৫২ বলে ৬৭ রানের ইনিংস খেলে মাঠ ছাড়েন তিনি। তার ইনিংসে ৩টি বাউন্ডারি ও ৪টি ওভার বাউন্ডারির মার ছিল। তার বিদায়ের পর ঝড় তুলতে থাকেন ফখর। এরপর প্যাট কামিন্সের ওভারে প্রথম বলেই তুলে মারতে গিয়ে বাউন্ডারিতে স্মিথের তালুবন্দি হয়ে শূন্য রানে মাঠ ছাড়েন বিধ্বংসী আসিফ আলী। ১৯তম ওভারটিতে মাত্র ৩ রান দেন কামিন্স। অজি বোলারদের মধ্যে অ্যাডাম জাম্পা ও প্যাট কামিন্স একটি করে উইকেট তুলে নেন। অপর দুই উইকেট শিকার করেন মিচেল স্টার্ক।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়