চকবাজারে প্লাস্টিক গোডাউনে আগুন

আগের সংবাদ

তথ্যপ্রযুক্তি সম্মেলনে রাষ্ট্রপতি : বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তর ফ্রিল্যান্সার দেশ

পরের সংবাদ

রৌমারীর যাদুরচর স্কুলে নিয়োগ বাণিজ্য!

প্রকাশিত: নভেম্বর ১১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মাসুদ পারভেজ, রৌমারী (কুড়িগ্রাম) থেকে : রৌমারী উপজেলার যাদুরচর উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দেখা দিয়েছে জটিলতা। এর মধ্যে সহকারী গ্রন্থাগারিক নিয়োগ নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের এখন লেজে-গোবরে অবস্থা। প্রথমে ওই পদে মাহমুদা আক্তার নামের একজনকে নিয়োগ দেয়া হয়। পরে হাসিবুল হাসান নামের আরো একজনকে নিয়োগ দেয়ার পর জটিলতার সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে স্থানীয় একাধিক বৈঠক, মামলা, পাল্টা মামলা এবং পরে বিষয়টি হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়ায়। হাইকোর্ট মাহমুদা আক্তারের নিয়োগ নিশ্চিত করে এ ঘটনার নিষ্পত্তির নির্দেশনা দিলেও স্কুল কর্তৃপক্ষ যেন অনড়। জানা গেছে, মাহমুদা আক্তারকে যাদুরচর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী গ্রন্থাগারিক পদে ২০০৪ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর নিয়োগ দেয়া হয়। সে সময় স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন আব্দুস সাত্তার এমএসসি। কিন্তু ২০১৮ সালে নোটারী ক্লাবের এফিডেভিটের মাধ্যমে আল আমিন নামের একজন অভিভাবকহীন ছাত্রের অভিভাবকত্ব নিয়ে আমিনুল ইসলাম বাবলু ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন। নবনির্বাচিত সভাপতি অনিয়মতান্ত্রিকভাবে এমপিও ক্রমিকের ৬ নম্বর সিরিয়ালের ময়নাল হক নামের একজন সহকারী শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ দেন। ওই প্রধান শিক্ষক সহকারী গ্রন্থাগারিক মাহমুদা আক্তারকে বরখাস্ত না করেই হাসিবুল হাসানকে একই পদে নিয়োগ দেন। কিন্তু অদ্যবধি তার নিয়োগ ও বেতন ভাতাদি নিশ্চিত করা হয়নি।
এদিকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ময়নাল হক চাকরিচ্যুত হলে প্রথম সিরিয়ালে থাকা মোস্তাফিজুর রহমান মুকুলকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিতে বাধ্য হন সভাপতি। কিন্তু মুকুল প্রধান শিক্ষক হওয়ার পর মাহমুদা আক্তারের চাকরি সংক্রান্ত কোনো তথ্যদি খুঁজে পাননি বলে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে দেয়া এক লিখিত বার্তায় জানিয়েছেন। কুড়িগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসারের কার্যালয় থেকে জানা গেছে, ২০২০ সালের ১৬ জুন মাহমুদা আক্তারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে রৌমারী সিজি জামান সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু হোরায়রা ও উপজেলা একাডেমিক সুপাইভাইজার মোকতার হোসেনকে ওই ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব দেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। তারা যথাযথ তদন্তপূর্বক ওই দপ্তরে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। এ প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে ২০২০ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর হাসিবুল হাসানের নিয়োগ বাতিল, সভাপতি আমিনুল ইসলাম বাবলু ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর মহাপরিচালক বরাবরে একটি আবেদন করেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শামছুল আলম। তথ্যমতে, ওই সময়ে মোট ৩টি অবৈধ নিয়োগ দিয়েছেন সভাপতি আমিনুল ইসলাম বাবলু ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ময়নাল হক।
নিয়োগ পাওয়া হাসানুল হাসান জানান, আমার কাছে ২১ লাখ টাকা নিয়েছেন সভাপতি বাবলু ও শিক্ষক ময়নাল হক। তারা আমাকে টাকাও দিচ্ছেন না বেতনও দিচ্ছেন না। মাহমুদা আক্তারের নিয়োগ নিয়ে স্কুলের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বাবলু বলেন, আমি সভাপতি হওয়ার পর জানতাম না মাহমুদা নামের কাউকে এ পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এখন আদালতের নির্দেশনা যা আসবে সেটাই মেনে নিতে হবে। বিষয়টি অবগত আছেন স্বীকার করে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শামছুল আলম বলেন, মাহমুদা আক্তারকে সাময়িক বরখাস্ত না করেই অন্য কাউকে নিয়োগ দেয়া বৈধ নয়। স্কুল কর্তৃপক্ষ যদি কাউকে নিয়োগ দিয়েও থাকেন তাহলে দায়ভার স্কুল কর্তৃপক্ষকেই বহন করতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়