চকবাজারে প্লাস্টিক গোডাউনে আগুন

আগের সংবাদ

তথ্যপ্রযুক্তি সম্মেলনে রাষ্ট্রপতি : বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তর ফ্রিল্যান্সার দেশ

পরের সংবাদ

মালালার মালাবদল

প্রকাশিত: নভেম্বর ১১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : নারীশিক্ষার অগ্রদূত, নারীশিক্ষাবিরোধী পাকিস্তানি তালেবান জঙ্গির গুলিতে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা কিশোরী, ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সে শান্তিতে নোবেলজয়ী মালালা ইউসুফজাই এবার তার জীবনের এক নতুন অধ্যায় শুরু করলেন। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের কর্মকর্তা আসার মালিকের হাত ধরে শুরু হয়েছে তার নতুন এ পথচলা।
গত মঙ্গলবার মালালা নিজেই যুক্তরাজ্যের বার্মিংহামে ঘরোয়া আয়োজনে সম্পন্ন তাদের বিয়ের ছবি প্রকাশ করেন। ২৪ বছর বয়সি এই তরুণী টুইটারে লিখেন, আজ আমার জীবনের খুবই মূল্যবান একটি দিন। আসার আর আমি গাঁটছড়া বাঁধলাম সারা জীবনের জন্য। পরিবারের সদস্যদের নিয়েই ছোটখাটো আয়োজনে বার্মিংহামের বাড়িতে আমাদের বিয়ের অনুষ্ঠান হলো। আমাদের জন্য দোয়া করবেন।
রয়টার্স জানায়, টুইটার পোস্টে মালালা তার স্বামীর বিস্তারিত পরিচয় না দিলেও সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা তাকে চিনে নিতে দেরি করেননি। তার স্বামী আসার মালিক পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের হাই পারফরম্যান্স সেন্টারের জেনারেল ম্যানেজার। আসার মালিক নিজেও বিয়ের একটি ছবি তার ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেছেন। সেখানে মালালার হাতের আঙুলে আংটি পরিয়ে দিতে দেখা যায়।
পাকিস্তানের সোয়াত উপত্যকার মেয়ে মালালার জন্ম ১৯৯৭ সালের ১২ জুলাই। নারীশিক্ষাবিরোধী তালেবান জঙ্গিদের এলাকায় বসে মেয়েদের স্কুলে যাওয়ার পক্ষে বিবিসি ব্লগে লেখালেখি করে তিনি যখন পশ্চিমা বিশ্বের নজর কাড়েন, তখন তার বয়স মাত্র ১১। নারী শিক্ষার পক্ষে কথা বলায় তাকে পড়তে হয় প্রাণনাশের হুমকির মুখে। ২০১২ সালের ৯ অক্টোবর সোয়াত উপত্যকার মিনগোরাত এলাকায় ১৪ বছর বয়সি মালালা ও তার দুই বান্ধবীকে স্কুলের সামনেই গুলি করে তালেবান জঙ্গিরা।
পাকিস্তানে তার মাথায় অস্ত্রোপচার করে বুলেট সরিয়ে নেয়া সম্ভব হলেও পরে যুক্তরাজ্যের কুইন এলিজাবেথ হাসপাতালে তাকে উন্নত চিকিৎসা দেয়া হয়। ওই ঘটনা বিশ্বেজুড়ে আলোড়ন তোলে। মালালার স্বপ্ন সফল করতে ২০১২ সালের ১০ নভেম্বরকে ‘মালালা দিবস’ ঘোষণা করে জাতিসংঘ। তাৎক্ষণিকভাবে পাকিস্তানে ফিরতে না পারলেও মালালা যুক্তরাজ্যে থেকে তার লড়াই চালিয়ে যেতে থাকেন। পাকিস্তান, নাইজেরিয়া, জর্ডান, সিরিয়া ও কেনিয়ার মেয়েদের শিক্ষার সহায়তায় গঠন করেন ‘মালালা তহবিল’।
২০১৪ সালে ভারতের শিশু অধিকার কর্মী কৈলাস সত্যার্থীর সঙ্গে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান মালালা। এখন তিনি যুক্তরাজ্যে থাকছেন। অক্সফোর্ড থেকে স্নাতক শেষ করে মনোযোগ দিয়েছেন আফগান শরণার্থীদের সহায়তার কাজে। পাশাপাশি চলছে নারীশিক্ষার আন্দোলন। তথ্যচিত্র তৈরির জন্য অ্যাপল টিভি প্লাসের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছেন। ব্রিটিশ সাময়িকী ভোগের প্রচ্ছদেও তাকে দেখা গেছে। অবশ্য বিয়ের ব্যাপারে মালালা আগে তার অনাগ্রহের কথাই বলেছিলেন। গত জুনেও এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, মানুষকে কেন বিয়ে করতেই হবে, সেটা আমি বুঝি না। কাউকে যদি জীবনে সঙ্গী করতেই চান, তাহলে বিয়ের কাগজপত্রে কেন সই করতে হবে, কেন সেটা শুধু একটি অংশীদারিত্ব হতে পারবে না? ভক্ত আর অনুসারীরা অবশ্য মালালার বিয়ের খবরকে স্বাগতই জানিয়েছেন। লাইকের বন্যা বইয়ে দেয়ার পাশাপাশি নবদম্পতির জন্য শুভ কামনাও জানিয়েছেন তারা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়