চকবাজারে প্লাস্টিক গোডাউনে আগুন

আগের সংবাদ

তথ্যপ্রযুক্তি সম্মেলনে রাষ্ট্রপতি : বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তর ফ্রিল্যান্সার দেশ

পরের সংবাদ

বাবর-ফিঞ্চের মর্যাদার লড়াই

প্রকাশিত: নভেম্বর ১১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে আজ দুবাইয়ের মাঠে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হবে পাকিস্তান। আসরে পাঁচ ম্যাচের চারটিতে ফিফটির দেখা পাওয়া বাবর আজম পাকিস্তানকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে সাফল্য এনে দিচ্ছেন। অন্যদিকে দলকে নেতৃত্ব দিয়ে সেমিতে তুললেও ব্যাটিংয়ের ঝলক দেখাতে পারছেন না অজি ব্যাটসম্যান অ্যারন ফিঞ্চ। ফাইনালে পৌঁছাতে দুই অধিনায়ককেই রাখতে হবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। বলা যায় মর্যাদার লড়াইয়ের দিনে যার ব্যাট হাসবে ফাইনালে যাওয়ার সম্ভাবনা তাদের বেশি। এপর্যন্ত বিশ্বকাপে ৬ বারের দেখায় দুই দল ৩ বার করে জয় পেয়েছে। সব মিলিয়ে ২৩ ম্যাচে পাকিস্তান ১৩ বার ও অস্ট্রেলিয়া ৯বার জয় পেয়েছে এক ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে।
চলতি বিশ্বকাপে পাকিস্তানের মূল লক্ষ্য ছিল ভারতের বিপক্ষে জয় তুলে নেয়া। বাবর আজমের নেতৃত্বে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে তারা বিরাট কোহলিদের বিপক্ষে জয় পায়। এরপর একে একে সুপার টুয়েলভের সবকটি ম্যাচ জিতে এখন তারা সেমিতে। আর পাক অধিনায়ক শুধু নেতৃত্ব দিয়েই দলকে সাফল্য এনে দেননি, ব্যাট হাতেও দারুণভাবে জ¦লে উঠেছেন। পাঁচ ম্যাচের চারটিতেই আছে তার অর্ধশতক রানের ইনিংস। চলতি আসরে ৫ ম্যাচে ৬৬ গড়ে ২৬৪ রান সংগ্রহ করে সর্বোচ্চ রানের মালিক এখন পর্যন্ত বাবর আজম। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম সেমিতে মাঠে নামার আগ পর্যন্ত ২৪০ রান সংগ্রহ করে তালিকার দুইয়ে ছিলেন ইংলিশ ওপেনার জশ বাটলার। তৃতীয় স্থানে থাকা ২৩১ রানের মালিক চারিথ আসালাঙ্কার দল ইতোমধ্য আসর থেকে বিদায় নিয়েছে। চলতি বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে ৫২ বলে ৬৮ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন বাবর আজম। আরেক ওপেনার রিজওয়ানের সঙ্গে জুটি গড়ে তুলে নেন ১০ উইকেটের বড় জয়। ওই ইনিংসে ৬টি বাউন্ডারি ও ২টি ওভার বাউন্ডারি হাঁকান তিনি। নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে অবশ্য নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি পাক অধিনায়ক। ম্যাচটিতে ১১ বলে ৯ রান করে কিউই বোলার টিম সাউদির শিকার করে মাঠ ছাড়েন তিনি। ওই ইনিংসে ১টি বাউন্ডারি হাঁকান তিনি। পরের ম্যাচে আবার জ¦লে ওঠেন বাবর। ৪৭ বল খেলে আফগানিস্তানের বিপক্ষে তুলে নেন চলতি বিশ্বকাপের দ্বিতীয় অর্ধশতক। এই ইনিংসে ৪টি চারের মার মারেন তিনি। চতুর্থ ম্যাচে ফের অর্ধশতক তুলে নেন পাক অধিনায়ক। নামিবিয়ার বিপক্ষে ৪৯ বলে ৭০ রানের ইনিংস খেলে ডেভিড ভিসার শিকার হয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। ইনিংসে তার ৭টি চারের মার ছিল। সুপার টুয়েলভের শেষ ম্যাচে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে চলতি বিশ্বকাপে টানা তৃতীয় ও আসরে চতুর্থ ফিফটি তুলে নেন বাবর আজম। ম্যাচটিতে ৪৭ বলে ৬৬ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। যেখানে ৫টি চারের সঙ্গে ৩টি ছক্কার মার ছিল তার। বাবর যেভাবে ধারাবাহিক পারফরম্যান্স করে যাচ্ছেন তাতে পাক অধিনায়ককে যদি আটকানো না যায় তাহলে ফাইনালে ওঠার স্বপ্ন ভঙ্গ হবে অজিদের।
অন্যদিকে বাবরদের সঙ্গে সমান তালে লড়াই চালিয়ে যেতে হলে জ¦লে উঠতে হবে অজি অধিনায়ক ও ওপেনার ব্যাটসম্যান অ্যারন ফিঞ্চকে। সুপার টুয়েলভের ম্যাচে অবশ্য নিজের জাত চেনাতে পারেননি ফিঞ্চ। ৫ ম্যাচে ২৬ গড়ে তার রান সংখ্যা ১৩০। বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া ৫ উইকেটের জয় পেয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। কিন্তু ম্যাচটিতে রানের খাতা খুলতে পারেননি অজি অধিনায়ক। ৫ বল খেলে রানের দেখা পাওয়ার আগে তাকে সাজঘরের পথ দেখান প্রোটিয়া বোলার এনরিখ নরকিয়া। দ্বিতীয় ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অবশ্য মারমুখো ছিলেন অ্যারন ফিঞ্চ। হাসারাঙ্গার শিকার হয়ে মাঠ ছাড়ার আগে তার ব্যাট থেকে ২৩ বলে আসে ৩৭ রান। তার ইনিংসে ৫টি চার ও ২টি ছক্কার মার ছিল। তৃতীয় ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ধীর গতিতে ব্যাট চালান তিনি। ক্রিস জর্ডানের শিকার হয়ে মাঠ ছাড়ার আগে ৪৯ বলে ৪৪ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। ইনিংসে ৪টি চারের মার মারেন ফিঞ্চ। তবে বাংলাদেশের বিপক্ষে পরের ম্যাচে তার ব্যাটিং ছিল ঝড়ের গতিতে। তাণ্ডব চালিয়ে তিনি ২০ বলে ৪০ রানের ইনিংস খেলেন। তাসকিন আহমেদের শিকার হয়ে মাঠ ছাড়ার আগে ২টি চার ও ৪টি ছক্কা হাঁকান তিনি। বাঁচা-মরার লড়াইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হাত খুলতে পারেননি তিনি। ক্যারিবীয় স্পিনার অকিল হোসের শিকার হয়ে ৯ রানে থামে তার ইনিংস। ১১ বলের ইনিংসটিতে তিনি ১টি বাউন্ডারির দেখা পান। তবে ফিঞ্চ জ¦লে উঠলে বিপদ আছে পাকিস্তানের। তার বিধ্বংসী ব্যাটে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ যেতে পারে অজিদের পক্ষে। তাই বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে বাবর আজমদের।
যেভাবে সেমিতে পাকিস্তান : টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের চলতি আসরে দুর্দান্ত পাকিস্তান। আসরের একমাত্র অপরাজিত দলও তারা। সুপার টুয়েলভের পাঁচ ম্যাচের সবকটিতে জয় তুলে নিয়েছে তারা। প্রথম ম্যাচে তারা ভারতের মত শক্তিশালী দলকে হারিয়েছে ১০ উইকেটের ব্যবধানে। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ভারত ৭ উইকেট হারিয়ে ১৫১ রান সংগ্রহ করে। জবাবে ব্যাট করতে নেমে দুই ওপেনার বাবরের ৬৮ ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের ৭৯ রানের অপরাজিত ইনিংসে প্রথমবারের মত বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে জয় তুলে নেয় পাকিস্তান। দ্বিতীয় ম্যাচে তারা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয় তুলে নেয় ৫ উইকেটের বড় ব্যবধানে। কিউইদের বিপক্ষে ১৩৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৮ বল হাতে রেখেই জয় তুলে নেন বাবররা। তৃতীয় ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষেও ৫ উইকেটের জয় পায় পাকিস্তান। ১৪৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে এক ওভার হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যান বাবর আজমরা। চতুর্থ ম্যাচে বিশ্বকাপের নবাগত দল নামিবিয়াকে তারা হারায় ৪৫ রানের ব্যবধানে। ১৯০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে নামিবিয়ার ইনিংস থামে ১৪৪ রানে। সুপার টুয়েলভের শেষ ম্যাচে বাবররা স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ৭২ রানের বড় জয় তুলে নেন। পাঁচ ম্যাচের সবকটিতে জয় পাওয়া পাকিস্তান অজিদের বিপক্ষে জয় পেলেই পৌঁছে যাবেন ফাইনালে।
যেভাবে সেমিতে অস্ট্রেলিয়া : চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া শুরু করেছে জয় দিয়ে। প্রথম ম্যাচে তারা দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয় তুলে ৫ উইকেটের ব্যবধানে। প্রথম ব্যাট করতে নেমে প্রোটিয়াদের ইনিংস থামে ১১৮ রানে। দুই বল হাতে রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যান ফিঞ্চরা। দ্বিতীয় ম্যাচে তারা শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয় তুলে নেয় ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে। তবে তৃতীয় ম্যাচে তারা আবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হারে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে। সে প্রতিশোধ তারা তুলে নেয় বাংলাদেশের বিপক্ষে ৮ উইকেটের বড় জয় তুলে নিয়ে। সুপার টুয়েলভের শেষ ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৮ উইকেটের ব্যবধানে হারিয়ে সেমি নিশ্চিত করে অ্যারন ফিঞ্চের দল।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত দুই দলের দেখা হয়েছে ৬ বার। সাফল্যের পরিসংখ্যানে দুই দলের পাল্লা সমান। ২০০৭ সালে গ্রুপ পর্বের দেখায় ৬ উইকেটের জয় তুলে নেয় পাকিস্তান। এরপর ২০১০ সালে গ্রুপ পর্বের দেখায় ৩৪ রানের জয় পায় অস্ট্রেলিয়া। একই আসরের সেমিফাইনালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩ উইকেটের জয় তুলে নেয় অজিরা। ২০১২ সালে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে ৩২ রানের জয় পায় পাকিস্তান। পঞ্চম দেখায় ২০১৪ সালে ১৬ রানের জয় পায় পাকিস্তান। এরপর ২০১৬ সালে ফের গ্রপ পর্বের দেখায় ২১ রানের জয় তুলে নেয় অজিরা। সবমিলিয়ে অবশ্য জয়ের পরিসংখ্যানে এগিয়ে পাকিস্তান। পাকিস্তানের ১৩ জয়ের বিপরীতে অজিদের জয় ৯ ম্যাচে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়