চকবাজারে প্লাস্টিক গোডাউনে আগুন

আগের সংবাদ

তথ্যপ্রযুক্তি সম্মেলনে রাষ্ট্রপতি : বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তর ফ্রিল্যান্সার দেশ

পরের সংবাদ

জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে শুভ সূচনা টাইগ্রেসদের

প্রকাশিত: নভেম্বর ১১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : করোনা ভাইরাসের তাণ্ডবে গত বছর মাঠে নামা হয়নি টাইগ্রেসদের। লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের মিশন শুরু করবে ২১ নভেম্বর থেকে। তবে তার আগে জিম্বাবুয়ে সফরে উড়ন্ত সূচনা করেছে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। প্রায় ১৯ মাস পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরেই চমক দেখালেন টাইগ্রেসরা। গত বছরের মার্চে অস্ট্রেলিয়ায় হওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর আর কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেনি জাহানারা-সালমারা। গতকাল স্বাগতিক জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৩৯.২ ওভার হাতে রেখে ৮ উইকেটে জিতেছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। টস জিতে আগে বোলিং নিয়ে স্বাগতিকদের ৪৮ রানে গুটিয়ে দেয় বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। এদিন জাহানারা, সালমা ও নাহিদার বোলিং তোপের সামনে কোমড় সোজা করে দাঁড়াতেই পারেনি জিম্বাবুয়ের ব্যাটাররা। এই তিন টাইগ্রেস বোলার ৩টি করে উইকেট শিকার করেছেন। এছাড়া ৫.২ ওভারে ২ রানে ৩ উইকেট তুলে নেন নাহিদা। ওয়ানডেতে বাংলাদেশ নারী দলের হয়ে সবচেয়ে কিপটে বোলিংয়ের রেকর্ড তার। আর ৭ ওভারে ৬ রানে ৩ উইকেট নেন সালমা। যা ওয়ানডেতে বাংলাদেশ নারী দলের হয়ে এটি তৃতীয় কিপটে বোলিংয়ের নজির। নিজের ওভার সংখ্যার চেয়ে কম রান দেয়ার নজির এ পর্যন্ত তিনবার গড়তে পেরেছেন টাইগ্রেস বোলাররা। গতকাল ম্যাচেই এমন দুটি নজির দেখা গেল। এর আগে ২০১৬ সালে বেলফাস্টে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম এমন কীর্তি গড়েন পেসার পান্না ঘোষ। তবে যাইহোক দীর্ঘদিন পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরেই জাহানারা-সালমারা দারুণ জয়ে শুরুটা রাঙালেন। তাদের এ জয় সামনে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে বেশ অনুপ্রেরণা জোগাবে। এছাড়া জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের পরের দুটি মাঠে গড়াবে ১৩ ও ১৫ নভেম্বর। এ দুই ম্যাচে বেশ দাপটে খেলবেন জাহানারা-সালমারা তা নতুন করে বলার কিছু নেই।
গতকাল বুলাওয়ের কুইন্স স্পোর্টস ক্লাব মাঠে টস জিতে আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন টাইগ্রেসদের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক ফাহিমা খাতুন। আঙুলের ইনজুরিতে এই ম্যাচটি খেলতে পারেননি নতুন অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি। ফলে অধিনায়কত্ব অভিষেক হয়েছে ফাহিমার। বল হাতে শুরু থেকেই একের পর এক উইকেট তুলে নিতে থাকেন সালমা -জাহানারা। বাংলাদেশকে তৃতীয় ওভারে প্রথম সাফল্য এনে দেন জাহানারা। প্রথম স্পেলে এই পেসার নেন আরো ২ উইকেট। মাঝে সালমা নেন একটি উইকেট। ফলে দলীয় ২০ রানে ৪ উইকেট খুইয়ে জিম্বাবুয়ে আর মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি। এরপর মিডল অর্ডারে ছোবল দেন নাহিদা। শেষ দিকে সালমা ফিরে এক ওভারে নেন দুই উইকেট। তাদের বোলিং তোপের সামনে জিম্বাবুয়ে শেষ ৪ জুটিতে যোগ করতে পারেনি একটি রানও। স্বাগতিকদের হয়ে প্রেশাস মারাঙ্গে করেন ১৭ রান। আর কোনো ব্যাটার ছুঁতে পারেননি দুই অঙ্ক।
বাংলাদেশের পক্ষে বল হাতে সাত ওভারে ৬ রান খরচায় ৩ উইকেট নিয়েছেন সালমা। নাহিদা ৫.২ ওভারে মাত্র ২ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। পেসার জাহানারা ৩ উইকেট নিতে খরচ করেছেন ১৮ রান। ৪৮ রান তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশের মেয়েরা খেলেছে মাত্র ১০.৪ ওভার। তবে ৫ ওভারের মধ্যে দুই ওপেনার মুর্শিদা খাতুন ৭ ও শারমিন আক্তারকে ৮ রানে হারিয়ে খানিকটা বিপদের আঁচ পায় টাইগ্রেসরা। তবে দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার ফারজানা হক ও রুমানা আহমেদ বাকি পথ পাড়ি দেন কোনো বিপদ ছাড়াই। রুমানা ১৬ ও ফারজানা ১১ রানে অপরাজিত ছিলেন। এদিকে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজ শেষে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের মিশন শুরু করবে টাইগ্রেসরা। ২০২২ সালে নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে অংশ নিতে টাইগ্রেসদের বাছাইপর্ব খেলতে হবে। এবার দুটি গ্রুপে ভাগ হয়ে বাছাইপর্বে অংশ নেবে ১০টি দল। টাইগ্রেসরা অবস্থান করছে গ্রুপ ‘বি’ তে। সেখানে তাদের প্রতিপক্ষ-পাকিস্তান, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র ও স্বাগতিক জিম্বাবুয়ে। উদ্বোধনী ম্যাচ দিয়েই পাকিস্তানের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। অন্যদিকে গ্রুপ ‘এ’ তে আছে আয়ারল্যান্ড, নেদারল্যান্ড, পাপুয়া নিউগিনি, শ্রীলঙ্কা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দশটি দল দুটি গ্রুপে ভাগ হয়ে খেলবে। পরে হবে সুপার সিক্স রাউন্ড। সেখান থেকে সেরা তিন দল মূল আসরে খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে। ইতোমধ্যে ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা ও স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড সরাসরি বিশ্বকাপ খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে।
এদিকে ২১ নভেম্বর জিম্বাবুয়ের হারারেতে আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামবে সালমা-রুমানারা।
তবে যাইহোক বাছাইপর্বে তুলনামূলক সহজ গ্রুপে পড়েছে সালমা-রুমানারা। তাছাড়া বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল ২০১১ সালে ওয়ানডে স্ট্যাটাস পেলেও এর আগে এই সংস্করণের কোনো বিশ্বকাপে অংশ নিতে পারেননি। বিশ্বকাপের আসরে সালমারা সরাসরি খেলেছেন শুধু গত বছর অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টিতে। তবে সেই আসরে চার ম্যাচ খেলে কোন জয়ের দেখা পায়নি টাইগ্রেসরা। এবার তাদের সামনে প্রথমবারের মতো ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ এসেছে। এর আগে এশিয়া কাপে অংশ নিয়ে প্রথমবারের মতো ফাইনালে ওঠে বাংলাদেশের মেয়েরা। প্রথম হলেও সেবার নিজেদের সেরাটা দিয়ে ভারতের মতো শক্তিধর দলকে হারিয়ে এশিয়ার সেরা হিসেবে নিজেদের অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যায় রুমানারা। এবার সালমা-জাহানারাদের নজর ওয়ানডে শিরোপায়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়