চকবাজারে প্লাস্টিক গোডাউনে আগুন

আগের সংবাদ

তথ্যপ্রযুক্তি সম্মেলনে রাষ্ট্রপতি : বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তর ফ্রিল্যান্সার দেশ

পরের সংবাদ

চলনবিলে হাঁস পালনে স্বাবলম্বী ৫০ হাজার পরিবার

প্রকাশিত: নভেম্বর ১১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মো. মাজেম আলী মলিন, গুরুদাসপুর (নাটোর) থেকে : চলনবিলে বাণিজ্যিকভাবে শত শত হাঁসের খামার গড়ে উঠেছে। এসব খামারের আয়ে চলনবিল অধ্যুষিত ৮টি উপজেলার বহু মানুষের ভাগ্য বদলেছে। হাঁস পালনে খামারিদের সুদিন ফেরায় এই পেশায় নামছেন আরো অনেকেই।
নাটোর প্রাণিসম্পদ অফিসের তথ্যমতে, শুধু চলনবিলেই তালিকাভুক্ত খামারের তালিকায় রয়েছে ৪৫১টি হাঁসের খামার। প্রতিটি খামারে হাঁস রয়েছে ১০-১৫ হাজার। এছাড়া তালিকার বাইরেও পারিবারিক পর্যায়ে শত শত খামার গড়ে উঠেছে। এসব খামারিদের পাশাপাশি খামারকে কেন্দ্র করে এই অঞ্চলের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ বেকারত্ব ঘুচিয়েছেন।
পরিসংখ্যান বলছে, খামার পর্যায়ে রাজহাঁস পালন হচ্ছে ৩৮ হাজার ৫৫০টি। এছাড়া পাতিহাঁস ৭ লাখ ৫৭ হাজার ৫৯২টি।
বর্ষার শুরুতে খাদ্য কম লাগায় ১ দিনের বাচ্চা থেকেই এসব হাঁস পালন শুরু করেন খামারিরা। ৬ মাস পর থেকে এসব হাঁস ডিম দিতে শুরু করে। প্রতিটি হাঁস বছরে ২০০-৩০০টি ডিম দেয়। এতে খামারিরা খরচ বাদে প্রতি মাসে ১০ হাজারের বেশি অর্থাৎ বছরে প্রায় ১ লাখ টাকা আয় করে থাকেন।
স্থানীয়রা বলছেন, সরকারি তালিকাভুক্তি ছাড়াও কয়েকশ হাঁসের খামার রয়েছে। এসব খামারে ১০ লাখেরও বেশি হাঁস রয়েছে। হাঁস পালনে এই অঞ্চলের ৫০ হাজার মানুষের বেকারত্ব ঘুচেছে। বেড়েছে আয়। পূরণ হচ্ছে স্থানীয়দের আমিষের চাহিদাও।
নাটোর প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা জানান, চলনবিলের সিংড়ায় ১৫০টি, গুরুদাসপুরে ৭০টি, নলডাঙ্গায় ৫৬টি, বড়াইগ্রামে ৬০টি, বাগাতিপাড়ায় ৬০টি ও লালপুরে রয়েছে ৫৫টি হাঁসের খামার। চলনবিলের আবহাওয়া অনুযায়ী তিন জাতের হাঁস বেশি পালন করা হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পালন হয় খাঁটি ক্যামবেল জাতের হাঁস। এছাড়া ইন্ডিয়ান রানার ও চায়না জাতের হাঁসও পালন করছেন খামারিরা।
তিনি বলেন, হাঁস পালনে খামারিদের সরকারিভাবে বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে। ক্রমেই বাড়ছে হাঁসের খামারের সংখ্যা। বাণিজ্যিক খামার পর্যায় ছাড়াও ব্যক্তিগত পর্যায়ে প্রায় ৫০ হাজার পরিবার হাঁস পালনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। এসব খামারে রয়েছে ৭-৮ লাখ হাঁস। ব্যক্তিগত পর্যায়ের খামার থেকে প্রতিটি পরিবার ভালো আয় করছেন।
সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, চলনবিলের সিংড়া, গুরুদাসপুর, বড়াইগ্রাম ও নলডাঙ্গা বিলের বিভিন্ন স্থানে খামার রয়েছে। কেউ কেউ জালের ঘের তৈরি করে হাঁস পালন করছেন। ভোর বেলাতেই খামারি এবং এর সঙ্গে যুক্ত মানুষ হাঁস নিয়ে অথৈ বিলে যান। সন্ধ্যায় আবার হাঁস নিয়ে খামারে ফিরে আসেন। নাটোর সদর উপজেলার দিঘাপতিয়া ঘোষপাড়া এলাকার বাসিন্দা রোকেয়া জানালেন, তিনি ২০-২৫টি হাঁস পালন করেন। সকালে হাঁসগুলো পাশের পুকুরে চলে যায়। সারাদিন পুকুরের শামুক-ঝিনুক খায়। তিনি নিজেও কিছু খাবার দেন। পরিবারের ডিম ও মাংসের চাহিদা পূরণ ছাড়াও হাঁস বিক্রি করে আয় করছেন তিনি।
সিংড়া উপজেলার নিংগইন এলাকার খামারি সোহাগ জানান, তিনি সারা বছরই হাঁস পালন করেন। এখন তার খামারে ক্যাম্বেল ও জিংডিং জাতের ৫৮২টি হাঁস রয়েছে। ৪-৫ মাস বয়সি হাঁস কেনেন সোহাগ। সাড়ে ৫ মাস বয়স থেকেই ডিম দেয়া শুরু করে। এখন তার খামারের ৪৮০টি হাঁস ডিম দিচ্ছে। বছরে খরচ বাদে ৩-৪ লাখ টাকা লাভ থাকে তার।
আরেক খামারি আফজাল ও আব্দুর রহিম জানান, এক দিনের বাচ্চা কিনে ডিম উপযোগী করতে ৫০০ হাঁসে খরচ হয় প্রায় এক লাখ টাকা। তবে ডিম দেয়া শুরু৬ করলে খরচ নিয়ে ভাবনা থাকে না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়