জাল সার্টিফিকেট তৈরি চক্রের ৫ সদস্য রিমান্ডে

আগের সংবাদ

স্মার্টকার্ড নিয়ে আনস্মার্টকাণ্ড!

পরের সংবাদ

৩১ কর অঞ্চলে জমে উঠেছে মিনি আয়কর মেলা

প্রকাশিত: নভেম্বর ১০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১০, ২০২১ , ১:১৬ পূর্বাহ্ণ

আলী ইব্রাহিম : করোনা সংক্রমণের কারণে গত বছরের মতো এবারো হচ্ছে না আয়কর মেলা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) করোনা পূর্ববর্তী সময়ে উৎসবের আমেজে করমেলার আয়োজন করলেও দুবছর ধরে বন্ধ রয়েছে আয়কর মেলা। তবে মেলা না হলেও এনবিআরের আওতাধীন সারাদেশের ৩১টি কর অঞ্চলে মেলার মতো সেবা দেয়া হচ্ছে। প্রতিটি কর অঞ্চলে জোনভিত্তিক বুথ, ই-টিআইএন ও তথ্য সেবা বুথ রাখা হয়েছে। আয়কর দাতারা কোনো ধরনের ভোগান্তি ছাড়া সহজেই পাচ্ছেন করসেবা। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর বিভিন কর অঞ্চল ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে বিভিন্ন কর অঞ্চল ঘুরে দেখা গেছে, যারা এখন আয়কর জমা দিতে যাচ্ছেন তারা অনেকটা নির্বিঘেœ করসেবা নিতে পারছেন। তাদের উপচেপড়া ভিড়ের মুখোমুখি হতে হচ্ছে না। তবে ধীরে ধীরে করদাতাদের উপস্থিতি বাড়ছে। কর কর্মকর্তারা বলছেন, মাসের শেষ দিকে করদাতাদের উপস্থিতি আরো বাড়বে। কর অফিসগুলোতে তখন মেলার প্রকৃত চিত্র ফুটে উঠবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কর অঞ্চল-১০ এর আওতায় ১ লাখ ৫৪ হাজার টিআইএনধারী করদাতা রয়েছেন। যাদের মধ্যে ৫০ শতাংশের কিছু বেশি ব্যক্তি নিয়মিত আয়কর রিটার্ন দাখিল করেন। এ কর অঞ্চলের করদাতাদের বড় অংশ হচ্ছেন চিকিৎসক সমাজ। এই অফিসের সামনে ৯টি রিটার্ন গ্রহণ বুথ রাখা হয়েছে। করোনা সংক্রমণ রোধে অনেক বুথে গøাস লাগানো রয়েছে। এ মিনি করমেলায় ই-টিআইএন সেবা কিংবা আয়কর রিটার্ন ফরম বিনামূল্যে দেয়া হচ্ছে। তবে করদাতাদের উপস্থিতি ছিল তুলনামূলক কম। করসেবা দিতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, আমরা করদাতাদের সর্বোচ্চ করসেবা নিশ্চিত করার চেষ্টা রয়েছে। নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে। তবে এখনো করদাতাদের কাক্সিক্ষত উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। ১৫ তারিখের পরে হয়তো উপস্থিতি বাড়তে পারে। আমাদের প্রত্যাশা থাকবে করদাতারা নিজ উদ্যোগে আয়কর দেবেন। আমরা করদাতার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন করতে চাই। যাতে কোনো ধরনের দূরত্ব না থাকে। এজন্য এনবিআরকেও ধীরে ধীরে ডিজিটালাইজেশনের দিকে ঝুঁকতে হবে। আমাদের লোকবলসহ অবকাঠামোগত ঘাটতি রয়েছে, এ কারণে অটোমেশনের বিকল্প নেই। কর দিতে আসা একাধিক করদাতা ভোরের কাগজকে বলেন, আমরা প্রতি বছর করমেলায় আয়কর রিটার্ন দাখিল করি। যেহেতু মেলা হচ্ছে না, তাই কর অফিসে আসলাম। পরিবেশ ভালো লেগেছে। কোনো রকম জটিলতা ছাড়াই আয়কর দিলাম।
করদাতাদের সুবিধার্থে সব কর অঞ্চলে নভেম্বর মাসজুড়ে আয়কর মেলার সুবিধা দেয়া হবে। এ ছাড়া সুনির্দিষ্ট কারণ দেখিয়ে উপকর কমিশনারের কাছ থেকে সময় নিয়ে পরবর্তীতে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন করদাতারা। শুধু কর অঞ্চল-১০ নয়, একই পরিবেশ কর অঞ্চল-৬ এ। ধানমন্ডি, কলাবাগান ও গ্রিন রোড এলাকার করদাতারা এর আওতাধীন। এ ছাড়া বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তারাও তাদের নিয়মিত করদাতা। কর অঞ্চল-৬ এর আওতায় এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৪৩ হাজার করদাতা ই-টিআইএন নিবন্ধন নিয়েছেন। কর অঞ্চল হিসেবে এখানে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক করদাতা রিটার্ন দাখিল করেন। গত অর্থবছরে ১ লাখ ২৫ হাজার করদাতার মধ্যে ৯৩ হাজার আয়কর রিটার্ন দাখিল হয়েছে। নির্বিঘেœ করদাতাদের করসেবা দিতে অফিসসংলগ্ন ১৫টি বুথ রয়েছে। তবে নেই কাক্সিক্ষত করদাতাদের উপস্থিতি। কর কর্মকর্তারা বলছেন, এখনো করদাতাদের উপস্থিতি বাড়েনি। প্রতিদিন ৫০০ জনের মতো করদাতা রিটার্ন দাখিল করছেন। আশা করছি মাসের শেষ দিকে করদাতাদের উপস্থিতি বৃদ্ধি পাবে।
করদাতা আজিম বলেন, আইনি বাধ্যবাধকতা থাকায় প্রতি বছর সময়মতো আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হয়। প্রতি বছর মেলায় রিটার্ন জমা দিই। এ বছর কর অফিসে জমা দিলাম। অভিজ্ঞতা ভালোই। মেলার মতো জনসমাগম না হলেও অফিসগুলোতে মেলার পরিবেশ রয়েছে। তবে করমেলায় সবকিছু এক ছাদের নিচে হয়, সেই পরিবেশ এখানে নেই। সেটা মিস করেছি আজ।
প্রসঙ্গত, ২০১০ সাল থেকে প্রতি বছর করমেলা আয়োজন করে আসছে এনবিআর। তবে গত বছরও করোনা বিবেচনায় নিয়ে মেলা অনুষ্ঠিত হয়নি। এনবিআরের আওতাধীন সারাদেশে ৩১টি কর অঞ্চল রয়েছে। যদিও আয়কর মেলার আদলে কর অফিসগুলোতে করদাতারা পাচ্ছেন ‘ওয়ানস্টপ’ সেবা। এছাড়া অনলাইনে বিকাশ, রকেট, নগদ, ইউক্যাশ ব্যবহার করে ঘরে বসেই কর দেয়ার সুবিধা রয়েছে। আগামী ৩০ নভেম্বর জাতীয় আয়কর দিবস ২০১১ উদযাপন করা হবে। সে সময় মোট ৬৬৬ জন করদাতাকে সেরা করদাতার সম্মাননা প্রদান করা হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়