জাল সার্টিফিকেট তৈরি চক্রের ৫ সদস্য রিমান্ডে

আগের সংবাদ

স্মার্টকার্ড নিয়ে আনস্মার্টকাণ্ড!

পরের সংবাদ

হুমকিতে জীববৈচিত্র্য : গুরুদাসপুরে শামুক-ঝিনুক নিধন চলছে অবাধে

প্রকাশিত: নভেম্বর ১০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মো. মাজেম আলী মলিন, গুরুদাসপুর (নাটোর) থেকে : গুরুদাসপুরের বিলগুলোর পানি কমছে। এতে বাড়ছে শামুক নিধনযজ্ঞ। বিলের তলদেশ থেকে জাল দিয়ে ছেঁকে তোলা হচ্ছে শামুক-ঝিনুক। এভাবে শামুক ধরতে গিয়ে জালে আটকা পড়ছে জলজ উদ্ভিদ ও লতাগুল্ম।
শামুক বিক্রি করা গেলেও জলজ উদ্ভিদ ও লতাগুল্ম ডাঙ্গায় ফেলে নষ্ট করা হচ্ছে। ফলে জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়ছে। এভাবে অবাধে শামুক নিধন করতে গিয়ে জলজ উদ্ভিদ ও লতাগুল্ম নষ্ট করা হলেও প্রশাসনের কার্যকরী পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্ষায় কর্মহীন হয়ে পড়া চলনবিলের গুরুদাসপুর উপজেলার রুহাই, বিলশা, চর বিলশা, পিপলা, হরদমাসহ চলনবিলকেন্দ্রিক মানুষ বাড়তি আয়ের আশায় শামুক নিধনে নেমেছেন। চলনবিলের গুরুদাসপুর অংশসহ পার্শ্ববর্তী সিংড়া ও সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার থেকে মই ও বাদাই জাল দিয়ে এভাবেই প্রতিদিন শামুক সংগ্রহ করেন। সংগৃহীত এসব শামুক বিক্রির জন্য প্রতিদিন ভোরে হাটে তোলা হয়। শামুক ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য গুরুদাসপুরের চরবিলশা ও পিপলা এলাকায় প্রতিদিন ভোরে হাট বসে।
স্থানীয়রা বলছেন, আহরণ করা শামুক-ঝিনুক হাঁস ও মাছের খামারের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। এছাড়া প্রাকৃতিক চুন তৈরিতে ব্যবহার করা হচ্ছে এসব শামুক ও ঝিনুক। স্থানীয় খামারিদের চাহিদা মেটানোর পরও দিনে ৪-৫ ট্রাক শামুক যাচ্ছে কুষ্টিয়া, নোয়াখালী, বরিশাল, বাগেরহাট, যশোরসহ বিভিন্ন জেলায় চিংড়ি ঘের ও মাছের খামারে। প্রতি ট্রাকে ২৫০ বস্তা শামুক পরিবহন হয়ে থাকে।
বিলশার শামুক বিক্রেতা জামিল হোসেন জানান, বিলের শামুক সংগ্রহ ও বিক্রি চলে আষাঢ় মাস থেকে শুরু করে কার্তিক মাস পর্যন্ত। বড় আকারের শামুক বিক্রি হয় প্রতি বস্তা ২০০ থেকে ২৫০ টাকায়। প্রতিদিন গড়ে ২ বস্তা সংগৃহীত শামুক থেকে তার আয় ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা।
গুরুদাসপুরের খুবজিপুর ইউনিয়নের চরবিলশা ঘাটে কথা হয় বরিশাল থেকে আসা আছাদুলের সঙ্গে। তিনি বলেন, হাঁসের খামারের জন্য তিনি ছোট আকারের এক বস্তা শামুক ১০০ থেকে ১১০ টাকায় কিনছেন। শামুক হাঁসের আদর্শ খাবার। দামেও সাশ্রয়ী। এ কারণে তিনি শামুক হাঁসের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করছেন।
গুরুদাসপুর উপজেলা কৃষি ও মৎস্য দপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শামুক-ঝিনুক প্রাকৃতির ব্যাপক কাজে আসে। বিলের তলদেশে বিচরণ করে এরা পানি নোংরা পানির পোকা-মাকড় ও জলজ উদ্ভিদ খেয়ে পানি পরিষ্কার করে থাকে। বিলের পানি শুকিয়ে গেলে এসব শামুক-ঝিনুক পচে গিয়ে জমির উবর্রতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। যথেচ্ছভাবে কৃষকের বন্ধু শামুক ও জলজ উদ্ভিদ নিধন হলে মাটির ক্যালসিয়াম কমে গিয়ে ফসলের উৎপাদন কমে যাওয়ার শঙ্কা আছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার তমাল হোসেন জানান, শামুক-ঝিনুক রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে বিলশা এলাকায় শামুক নিধন বন্ধে উঠোন বৈঠকও করা হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়