জাল সার্টিফিকেট তৈরি চক্রের ৫ সদস্য রিমান্ডে

আগের সংবাদ

স্মার্টকার্ড নিয়ে আনস্মার্টকাণ্ড!

পরের সংবাদ

মহেশপুরে বাণিজ্যিকভাবে বরই ফুলের মধু সংগ্রহ

প্রকাশিত: নভেম্বর ১০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মহেশপুর (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি : সাধারণত সরিষা ফুল কিংবা লিচু ফুলের সময় খামারিরা মৌমাছির মাধ্যমে মধু সংগ্রহ করে থাকেন। ফলে বছরের অন্যান্য সময় অনেকটা অলস সময় কাটে তাদের। এ সময় মাছি বাঁচিয়ে রাখতে প্রয়োজন হয় বাড়তি খাবারের, আসে না কোনো উৎপাদন। এতে লোকসানে পড়েন মৌ খামারিরা। কিন্তু সে লোকসান কাটিয়ে বিকল্প মাধ্যমে কুল (বরই) ফুল থেকে মধু সংগ্রহ শুরু হয়েছে ঝিনাইদহের মহেশপুরে।
মহেশপুর কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, গত বছর প্রথমবারের মতো তিনজন খামারির ৫৫৫ মৌ বাক্স থেকে তিন হাজার কেজি মধু সংগ্রহ করেছিলেন। এ বছর ১০-১৫ জন খামারির ৯৬০ বাক্স থেকে পাঁচ হাজার কেজি মধু সংগ্রহের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। এতে একদিকে বাড়ছে কুলের উৎপাদন অন্যদিকে মধু সংগ্রহ করে বাড়তি অর্থ আয় হচ্ছে।
ঝিনাইদহের ভারতীয় সীমান্ত এলাকা মহেশপুরের মান্দারবাড়িয়া ইউনিয়নের জুকাকালহুদা ও ভাটপাড়া গ্রামের বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন কুলের আবাদ। কুল বাগানে এখন ফুল এসেছে। এসব জমির পাশেই মৌ চাষের বাক্স বসিয়েছেন মৌচাষিরা। এতে মৌমাছির মাধ্যমে কুল ফুলের পরাগায়নে সহায়তা হচ্ছে। ফলে একদিকে কুলের উৎপাদন বাড়ছে, অপরদিকে মধু আহরণ করা যাচ্ছে। সমন্বিত এই চাষে কুলচাষি ও মৌচাষি উভয়ই লাভবান হচ্ছেন। রাজবাড়ী, মাদারীপুর, নাটোর ও রংপুরসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে মৌচাষিরা এসেছেন। সাধারণত সকালে এবং বিকালের দিকে মাছিগুলো ছুটে বেড়ায় ফুলে ফুলে। সেখান থেকে মধু নিয়ে ফেরেন কলোনিতে। এই মৌসুমে গড়ে ২৫ দিনে তিনবার মধু সংগ্রহ করা যায়। এতে খরচের তুলনায় লাভও হয় দ্বিগুণ। নাটোরের গুরুদাসপুর থেকে আসা শুভ কুমার দাস জানান, ১৬০ মৌ বাক্স নিয়ে এসেছে। এসব বাক্স থেকে মাসে তিন মন মধু সংগ্রহ করা যায়। প্রতি কেজি ৪০০ টাকা দরে বিক্রি করে থাকি। ১৯৯৮ সালে ১২ বক্স নিয়ে কাজ শুরু করে বর্তমানে ১৬০ হয়েছে। এখন তার কাছে যে বক্স আছে তার মূল্য প্রায় আট লাখ টাকা।
মাদারীপুর থেকে আসা মৌচাষি খলিলুর রহমান বলেন, কুল থেকে সংগ্রহ করা যায় খুব ভালো মানের মধু। তিনি ১৬৫টি মৌমাছি নিয়ে এসেছিলেন। তার মধ্যে ২৫ শতাংশ মারা গেছে। বাকি অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, কৃষি কর্মকর্তারা যদি কৃষকদের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করেন তাহলে কুল বাগানে বিষ প্রয়োগ থেকে বিরত থাকবেন কৃষক। মৌমাছি যদি বাগানে থাকে তাহলে বিষ প্রয়োগ না করলেও চলবে। এসব মাছি পরাগায়ন ঘটাবে তখন বিভিন্ন কীটপতঙ্গ নষ্ট হয়ে যাবে।
ঝিনাইদহ মহেশপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসান আলী জানান, কুল গাছের ফুল থেকে মধু সংগ্রহে চাষিদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। মৌমাছি কুল ফুলে উড়ে উড়ে বসে মধু সংগ্রহ করে। এতে ফুলে সহজে পরাগায়ন ঘটে। তাই কুল ক্ষেতের পাশে মৌ চাষের বাক্স স্থাপন করলে কুলের ফলন বাড়ে। পাশাপাশি মৌচাষিরা মধু আহরণ করে লাভবান হন।
তিনি আরো বলেন, মৌচাষিদের মধু আহরণের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি মধু সংরক্ষণের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। সংরক্ষণ করতে পারলে মৌচাষিরা আরো বেশি লাভবান হতে পারবেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়