জাল সার্টিফিকেট তৈরি চক্রের ৫ সদস্য রিমান্ডে

আগের সংবাদ

স্মার্টকার্ড নিয়ে আনস্মার্টকাণ্ড!

পরের সংবাদ

বিনা-১৭ ধানে চাষির মুখে হাসি

প্রকাশিত: নভেম্বর ১০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১০, ২০২১ , ১:১৬ পূর্বাহ্ণ

সুকুমল কুমার প্রামানিক, রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি : নওগাঁর রাণীনগর উপজেলায় এই প্রথম চাষ করা হয়েছে আগাম জাতের বিনা-১৭ ধান। ইতোমধ্যে এই ধান কাটা-মাড়াই শেষে কৃষকদের ঘরে উঠেছে। কৃষি অফিস বলছে, উপজেলাজুড়ে বেশ কিছু কৃষক এই প্রথম বিনা-১৭ আগাম জাতের ধান চাষ করেছেন। অন্যান্য ধানের চেয়ে বিনা-১৭ ধান চাষে লাভবান হয়েছেন চাষিরা। এই ধান আগামীতে উপজেলাজুড়ে কৃষকরা চাষ করলে কৃষকদের লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলাজুড়ে এই আমন মৌসুমে প্রায় ১৮ হাজার ১৩০ হেক্টর জমিতে আমন ধান রোপণ করা হয়। এসব জমিতে আতব, ব্রি-৯৫, স্বর্ণা-৫, ব্রি-৭১, ব্রি-৭৫, ব্রি-৪৯সহ বেশ কয়েকটি জাতের ধান রোপণ করা হয়েছে। এসব ধান আর কয়েক দিনের মধ্যে কাটা-মাড়াই শুরু হবে। এর মধ্যে উপজেলায় প্রায় ২ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে আমন মৌসুমে বিনা-১৭ আগাম জাতের ধান রোপণ করেছিলেন কৃষকরা। বিনা-১৭ জাতের এই ধান রাণীনগর উপজেলায় প্রথম চাষ করা হয়েছে। কালীগ্রাম, একডালা, গোনা, মিরাট ইউনিয়নের অনেক কৃষক বিনা-১৭ ধানের চাষ করেছেন। গত কয়েক দিন আগে বিনা-১৭ জাতের ধান কাটা-মাড়াই শেষ হয়েছে।
কৃষকরা বলছেন, এই প্রথম বিনা-১৭ জাতের ধান চাষ করে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় জমির প্রকারভেদে বিঘাপ্রতি ২২-২৪ মণ হারে ফলন হয়েছে। যার স্থানীয় বাজারে প্রথমেই দাম প্রতি মণ ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০ টাকা পর্যন্ত। কৃষি অফিস আরো জানিয়েছে, বিনা-১৭ ধান আগাম জাতের ধান। এই ধান চাষ করলে ওই জমিতে আগাম সরিষা, গম, আলু, ভুট্টাসহ অন্যান্য ফসলাদি চাষ করা সম্ভব। এই ধান কাটার পর এসব ফসল চাষ করা যায়।
এই জাতের ধান প্রথম আবাদ করা বেতগাড়ী গ্রামের কৃষক সাজু আহম্মেদ জানান, আমি কৃষি অফিস থেকে বিনা-১৭ জাতের ধানের বীজ পাই। বীজগুলো পাওয়ার পর কৃষি অফিসের পরামর্শে প্রথমবার এই জাতের ধান ১ বিঘার উপরে জমিতে চাষ করি। কয়েক দিন আগে ধান কাটা-মাড়াই শেষ হয়েছে। ফলন হয়েছে এক বিঘায় ২৩ মণ। প্রথমেই স্থানীয় বাজারে ধান বিক্রি করেছি মণপ্রতি ১ হাজার ৫০ টাকা দরে। এই ধান কাটা শেষে ওই জমিতে আমি আবার সরিষা ও আলু চাষ করেছি। অন্যান্য ধানের চেয়ে আমি এই ধান চাষে লাভবান হয়েছি। আগামীতেও এই ধান চাষ করব।
আরেক চাষি ডাকাহার গ্রামের নাছির জানান, আমি ২ বিঘা ৫ কাঠা জমিতে প্রথমবারের মতো বিনা-১৭ আগাম জাতের ধান চাষ করেছি। ধানের ফলন ও দাম ভালো পেয়েছি। ধান কাটার পর ওই জমিতেই সরিষার আবাদ করেছি। আমি মনে করছি অন্যান্য ধানের চাইতে এই আগাম জাতের ধান চাষে কৃষকরা অধিক লাভবান হবেন।
এ ব্যাপারে রাণীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবদি শহিদুল ইসলাম ভোরের কাগজকে বলেন, গবেষণাতে ও বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে উপজেলায় এই প্রথম বিনা-১৭ জাতের ধানের বীজ কৃকষদের মধ্যে সরবারহ করা হয়। এরপর কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের সার্বিকভাবে সহযোগিতা করে এই জাতের ধান রোপণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কৃষি অফিসের সহায়তায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা এই ধান চাষে আগ্রহী হন।
কৃষি কর্মকর্তা জানান, ধান কয়েক দিন আগে কাটা মাড়াই শেষ হয়েছে। কাটা মাড়াইয়ের সময় আমরা কৃষি অফিস থেকে কয়েকজন কৃষকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সরজমিন ও খোঁজখবর নিয়ে দেখেছি বিনা-১৭ জাতের ধান বিঘাপ্রতি প্রায় ২৪-২৫ মণ হারে ফলন হয়েছে। চাষিরা ধানের দামও ভালো পেয়েছেন। এই জাতের ধান মোটাও না, চিকনও না, মাঝারি সাইজের।
আমরা আশা করছি আগামীতে উপজেলার সব কৃষকদের এই আগাম জাতের ধান চাষে উদ্বুদ্ধ করব। উপজেলায় হাজার হাজার হেক্টর জমিতে এই জাতের ধান চাষ হবে। বিনা-১৭ আগাম জাতের ধান চাষ করলে অন্যান্য ধানের চাইতে কৃষকরা অধিক লাভবান হবেন বলেও জানান তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়