ক্র্যাবের ২ সদস্যকে হুমকি দেয়া পুলিশ সদস্য প্রত্যাহার

আগের সংবাদ

গাপটিল-বাটলার শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই

পরের সংবাদ

সিংগাইরের ১০ ইউপিতে নির্বাচনের আমেজ : বিদ্রোহী ও ‘স্বতস্ত্র’ প্রার্থী নিয়ে দুশ্চিন্তায় আ.লীগ

প্রকাশিত: নভেম্বর ৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মাসুম বাদশাহ, সিংগাইর (মানিকগঞ্জ) থেকে : ১১ নভেম্বর ২য় ধাপের ইউপি নির্বাচন উপলক্ষে সিংগাইর উপজেলায় মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষ হয়েছে। বৈধ প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে ৩৬ জন, সংরক্ষিত নারী সদস্য ১০২ জন এবং সাধারণ সদস্য পদপ্রার্থী ২৯৭ জন প্রতীক বরাদ্দ পেয়ে নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। একটি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নির্বাচিত হওয়ায় বাকি ১০ ইউনিয়নে নির্বাচনের আমেজ বইছে। সব পদে প্রার্থীর প্রচার-প্রচারণাও চোখে পড়ার মতো। বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে প্রার্থীরা ভোটারদের কাছে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন।
সরেজমিন বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের বিজয়ে অনেকটাই বাধা হতে পারে দলীয় বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) প্রার্থী। নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি এবং নিজ এলাকায় সরকারি ও নিজস্ব অর্থায়নে ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ করলেও বিজয়টা সহজ হবে না। এর কারণ অনেক ইউনিয়নে মাঠে রয়েছে একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এছাড়া বিএনপি সরাসরি দলীয় প্রতীকে অংশগ্রহণ না করলেও অনেক নেতাকর্মী দলের বাইরে গিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন, যা কিনা নৌকার বিজয়ে বাধার কারণ হতে পারে। অনেক নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, একাধিক ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থীরা বিজয়ী হতে বিদ্রোহী প্রার্থীদের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বেন।
উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের মধ্যে ৮টিতেই বর্তমান চেয়ারম্যানরা পুনরায় দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। এরা হলেন বায়রা ইউনিয়নে দেওয়ান জিন্নাহ লাঠু, বলধারায় আব্দুল মাজেদ খান, ধল্লায় মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম ভুইয়া, চান্দহরে শওকত হোসেন বাদল, জামির্ত্তায় আবদুল হালিম রাজু, জয়মন্টপে ইঞ্জি. শাহাদৎ হোসেন, সায়েস্তায় মুসলেম উদ্দিন চোকদার ও তালেবপুরে মো. রমজান আলী। এছাড়া গত নির্বাচনে পরাজিত সিংগাইর সদর ইউনিয়নে শেখ জাহিদুল ইসলাম এবারো দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। বাকি ২টিতে নতুন মুখ হিসেবে প্রথমবার নৌকার টিকেট পেয়েছেন জামশা ইউনিয়নে গাজী কামরজ্জামান এবং চারিগ্রামে দেওয়ান মো. রিপন।
এদিকে উপজেলার জয়মন্টপ ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. শাহাদৎ হোসেনের সঙ্গে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) প্রার্থী মো. বোরহান উদ্দিন ফকির ও মো. অলি আহমেদ মোল্লা। চান্দহর ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী শওকত হোসেন বাদলের সঙ্গে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) প্রার্থী রবিউল আলম রবি ও আফজাল হোসেন। সায়েস্তা ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী মোসলেম উদ্দিন চোকদারের সঙ্গে ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) প্রার্থী মো. আব্দুল হালিম ও আওয়ামী লীগের আরেক বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) মো. আবু বকর সিদ্দিক। জামশা ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকে গাজী কামরুজ্জামানের সঙ্গে আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিত দলের বিদ্রোহী প্রার্থী বতর্মান চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিঠু ও স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি নেতা আবুল হাসেম খানের সঙ্গে ত্রিমুখী ভোটযুদ্ধের সম্ভাবনা রয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সক্রিয়ভাবে নির্বাচনী মাঠে থাকায় ভোটের লড়াইয়ে নৌকার জয় অনেকটাই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে বলে স্থানীয় অনেক নেতাকর্মীই ধারণা করছেন।
অপরদিকে জামির্ত্তা ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকে বতর্মান চেয়ারম্যান আবদুল হালিম রাজুর সঙ্গে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) প্রার্থী আবুল হোসেন মোল্লা, ধল্লা ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী বতর্মান চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম ভুইয়ার সঙ্গে বিএনপি নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী ইকবাল হোসেন শামীম, চারিগ্রামে নৌকার প্রার্থী দেওয়ান মো. রিপনের সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি নেতা ও বতর্মান চেয়ারম্যান সাজেদুল আলম স্বাধীন, সিংগাইর সদর ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী শেখ জাহিদুল ইসলামের সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি নেতা ফজলুল হক ভূইয়া ও জাহিনুর রহমান সৌরভের ভোটের লড়াই জমে উঠেছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা। বলধারা ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী বতর্মান চেয়ারম্যান আব্দুল মাজেদ খানের সঙ্গে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি বিদ্রোহী প্রার্থী মো. ওবায়দুর রহমান থাকলেও নৌকার বিজয়ে তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না বলে ধারণা করছেন অনেকেই। এছাড়া তালেবপুর ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকে মো. রমজান আলীর বিপক্ষে অন্য দলের শক্তিশালী কোনো প্রার্থী না থাকায় সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছেন তিনি।
ইতোমধ্যে প্রতিদ্ব›দ্বী কোনো প্রার্থী না থাকায় বায়রা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত ও বতর্মান চেয়ারম্যান দেওয়ান জিন্নাহ লাঠু বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নির্বাচিত হয়েছেন। উপজেলা নির্বাচন অফিসার মাহবুব রোমান চৌধুরী বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়