ক্র্যাবের ২ সদস্যকে হুমকি দেয়া পুলিশ সদস্য প্রত্যাহার

আগের সংবাদ

গাপটিল-বাটলার শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই

পরের সংবাদ

পুলিশের বাধা : বাড়তি বাস ভাড়া প্রত্যাহার চেয়ে বামদের বিক্ষোভ

প্রকাশিত: নভেম্বর ৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : জ্বালানি তেলের মূল্য কমানো এবং বাস-লঞ্চের বাড়তি ভাড়া প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। গতকাল সোমবার রাজধানীর পল্টন মোড়ে এ মিছিল পুলিশি বাধার মুখে পড়ে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, জোটের উদ্যোগে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলটি পল্টন মোড়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের দিকে অগ্রসর হতে চাইলে সচিবালয়ের পূর্ব গেটে পুলিশি বাধার সম্মুখীন হয়। বাধা উপেক্ষা করে যাওয়ার চেষ্টা করলে সেখানে বাম জোটের নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। এ সময় রাজপথে অবস্থান নিয়ে সমাবেশ করেন জোটের নেতারা।
তারা বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ানো ও তেল পাচারের অজুহাত দেখিয়ে লিটার প্রতি ১৫ টাকা দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দেশবাসী প্রত্যাখ্যান করেছে। আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ৪৬ দশমিক ৬৩ টাকায় তেল এনে সরকার ৮০ টাকায় কিনতে বাধ্য করছে। তিন ধরনের শুল্ক, রিফাইন খরচ, জাহাজ খরচ ও পরিবহন বাবদ এখান থেকে প্রায় ৩৪ শতাংশ অর্থাৎ লিটার প্রতি ১৯ টাকার বেশি তুলে নিচ্ছে। এভাবে শুল্ক-ভ্যাটসহ গত ৭ বছরে ৪৩ হাজার কোটি টাকার বেশি মুনাফা করেছে সরকার। মুনাফা থেকে মাত্র ৩ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছে। নেতারা মনে করেন কর কমালেই তেলের দাম বাড়ানোর কোনো প্রয়োজন হতো না।
জোট নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার প্রভাবে কৃষি, পরিবহন, শিল্প ও বিদ্যুতে ব্যাপক প্রভাব পড়বে। কারণ পরিবহনের ৭২ দশমিক ৭৯ ভাগ, কৃষির ৯৯ দশমিক ৭৩, শিল্পের ৮০ দশমিক ৯৮ ভাগ, বিদ্যুৎ ১৫ দশমিক ২২ ভাগ ডিজেল নির্ভরশীল। এছাড়া বিদ্যুৎ উৎপাদনে ২৬ ভাগ ফার্নেস অয়েল ব্যবহৃত হয়। তেলের দাম বাড়ার প্রভাবে প্রতিটি সেক্টরের ওপর নির্ভশীল প্রায় ১৬ কোটি মানুষ সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ইতোমধ্যে বাস ও লঞ্চের ভাড়া ২৭ শতাংশ ও ৩৬ শতাংশ বাড়িয়েছে। কিন্তু বিআরটিএ যে ঘোষণা দিয়েছে বাস্তবে তার চেয়ে বেশি ভাড়া যাত্রীদের থেকে আদায় করছে পরিবহন মালিকরা। সরকার ও পরিবহন মালিকদের সাজানো নাটকের মাধ্যমেই এই ভাড়া বাড়িয়ে মালিকদের হাতে বাড়তি মুনাফা তুলে দেয়া হলো।
নেতারা বলেন, তেলের দাম বাড়ানোর ফলে সরকার এবং ভাড়া বাড়ার ফলে মালিকরা মুনাফা লুটবে। আর আপামর জনগণের শুধু পকেট কাটা যাবে। দেশের শাসন ব্যবস্থার এই জনবিরোধী অযৌক্তিক নীতির বিরুদ্ধে এবং বর্তমান সরকারের ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য দেশের বাম-প্রগতিশীল-গণতান্ত্রিক শক্তিকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
তারা বলেন, চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজসহ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে এমনিতেই জনজীবনে দুর্বিষহ অবস্থা বিরাজ করছে। সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণ না করে সিন্ডিকেটের হাতে তুলে দিয়েছে। তার ওপর জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি ও পরিবহন ভাড়া বৃদ্ধি জনগণের কাছে ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ এর শামিল।
বাম নেতারা অবিলম্বে ডিজেল, কেরোসিন, ফার্নেস অয়েল, এলপিজি ও অটোগ্যাসের বর্ধিতমূল্য এবং পরিবহনের বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহারের জোর দাবি জানান। অন্যথায় জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের মাধ্যমে সররকারকে দাবি আদায়ে বাধ্য করার হুঁশিয়ারি দেন।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জোটের সমন্বয়ক ও বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বজলুর রশীদ ফিরোজ। বক্তব্য দেন বাম জোটের কেন্দ্রীয় নেতা সিপিবির সহকারী সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ জহির চন্দন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, বাসদ (মার্কসবাদী)’র আ ক ম জহিরুল ইসলাম, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক আব্দুল আলী, গণসংহতি আন্দোলনের বাচ্চু ভূঁইয়া, ওয়ার্কার্স পার্টি (মার্কসবাদী)’র বিধান দাস।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়