ক্র্যাবের ২ সদস্যকে হুমকি দেয়া পুলিশ সদস্য প্রত্যাহার

আগের সংবাদ

গাপটিল-বাটলার শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই

পরের সংবাদ

দ্রব্যমূল্যের লাগাম টানা জরুরি

প্রকাশিত: নভেম্বর ৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

দ্রব্যমূল্যের অসহনীয় ঊর্ধ্বগতি দেশের এক বিরাট জনগোষ্ঠীর ওপর প্রভাব পড়েছে। বর্তমান বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের যেভাবে মূল্য বেড়েছে তার সঠিক কোনো কারণ জানা না গেলেও সরকার বিভিন্ন দ্রব্যের থেকে আংশিক এবং কিছু দ্রব্যের ওপর থেকে পুরোপুরি আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার প্রমাণ করেছে দেশের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য সত্যসত্যই ঊর্ধ্বমুখী। প্রায় সময়ই দেখা যায় বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বাড়ছে কোনো আগাম ঘোষণা ছাড়াই কিংবা এই মূল্যবৃদ্ধির আসল কারণ কী তা দোকানিরা ক্রেতাদের কখনই বলতে পারছে না। কিছু সময় কিছু দ্রব্যের মূল্য অর্থনীতির নিয়মে সাপ্লাই এন্ড ডিমান্ডোর কারণে বাড়লেও বেশিরভাগ সময়ই বাজারের দ্রব্যগুলোর মূল্য বাড়ে ব্যবসায়ী এবং বাজার সিন্ডিকেটদের কারণে। ঠিক তখনই জনগণের মাঝে নেমে আসে ক্ষোভ, বিশেষ করে গবির-দুঃখী মানুষ তখন ভীষণ সমস্যায় দিন অতিবাহিত করে। এমনিতেই দেশের গরিব জনগোষ্ঠীর একটি বৃহৎ অংশ দিন এনে দিন খায় এবং তাদের আয় স্বল্পতার মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যগুলোর মূল্য বেড়ে গেলে তাদের মাথায় বাজ পড়ে। এ সময় টিসিবির গাড়িগুলোতে দেখা যায় লম্বা লাইন, যেখানে মধ্যবিত্তদের সংখ্যাই বেশি। তাছাড়া নিত্যদিনের আয় রোজগারের কাজ ফেলে এই দীর্ঘ লাইন থেকে তাদের পক্ষে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি কেনা সম্ভব হয় না।
অথচ এসব টিসিবির গাড়ির নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের সবচেয়ে বেশি দাবিদার এসব স্বল্প আয়ের মানুষ। বর্তমান প্রেক্ষাপটে দেখা যাচ্ছে যে বাজারে পেঁয়াজ, ভোজ্যতেল, চাল, ডাল, মাছ, মুরগিসহ প্রায় সব নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বেশ চড়া। এসব বিষয়ে জনগণ প্রায় প্রতিদিনই সরকারকে বলছে এবং বিভিন্ন মিডিয়াও প্রায় প্রতিদিন বাজারের চড়া দামের বিষয়টি ফলাও করে প্রচার করছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এমন হঠাৎ করে দ্রব্যমূল্য বাড়ার কারণ কী। সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলো এসব বিষয়ে আগেভাগে মনিটরিং করে না কেন। যদি বাজার মনিটরিং নিত্যদিন থাকত তাহলে এভাবে হঠাৎ করে ব্যবসায়ীরা তাদের ইচ্ছামতো দ্রব্যের মূল্য বাড়াতে পারত না। মনে হচ্ছে বাজার মনিটরিং বিষয়ে এই সংস্থাটির কোথাও ঘাটতি রয়েছে। যদি বাজার মনিটরিং ব্যবস্থাটি জোরদার করা যায় তাহলে হঠাৎ হঠাৎ বাজারে দ্রব্যের মূল্য বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা যেত। যদিও বাজার মনিটরিং বিষয়টি খুবই জটিল এবং বৃহৎ বিষয়, এই মনিটরিংয়ের ওপরই নির্ভর করে পুরো বাজার ব্যবস্থা। তাই এখানে প্রচুর লোকবলও দরকার রয়েছে, এখানে শুধু লোকবল নয় প্রয়োজন রয়েছে কিছু সৎ মানুষের, যারা এই দায়িত্বটি সুচারুভাবে পালন করতে পারে। প্রকৃতপক্ষে আমাদের দেশের বাজার ব্যবস্থাটি দাঁড়িয়ে আছে সেই মান্ধাতার আমলের ধারণা নিয়ে। এখানে মূল্যবৃদ্ধি খুব ঘন ঘন ঘটলেও বিভিন্ন বাজার থেকে খবর আসতে আসতেই ব্যবসায়ীরা কোটিপতি হয়ে যায়। এমতাবস্থায় বাজার ব্যবস্থায় ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি নতুন আইন প্রয়োজন রয়েছে যে আইনে ব্যবসায়ীরা চাইলেই বাজারের কোনো দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি করতে পারবে না, যদি নিতান্তই কোনো দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রয়োজন হয় তাহলে বাজার ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ কমিটির সঙ্গে বৈঠক করে বাড়াতে হবে। বর্তমানে বিদ্যমান আইনে সময়ে সময়ে ম্যাজিস্ট্রেটদের বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে দেখা গেলেও শুধু জরিমানার আইন থাকায় এর ফাঁক দিয়ে অনেক অসাধু ব্যবসায়ী দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি করেও পার পেয়ে যায়, ফলে ক্রেতা সাধারণের পণ্য সুরক্ষা আইনসহ বাজারে অযথা দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি বিষয়ে কঠোর আইনের প্রয়োজন রয়েছে। এর ধরনের সুস্পষ্ট আইন থাকলে বাজারে দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির লাগাম টানা অনেকটাই সহজ হবে। বিষয়টির প্রতি গুরুত্ব সহকারে ভেবে দেখার সময় এসেছে।
রতন কুমার তুরী
শিক্ষক ও লেখক।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়