ক্র্যাবের ২ সদস্যকে হুমকি দেয়া পুলিশ সদস্য প্রত্যাহার

আগের সংবাদ

গাপটিল-বাটলার শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই

পরের সংবাদ

জেলা প্রশাসন-আইনজীবী সমিতির টানাটানি : ‘কোর্ট হিল’ নাকি ‘পরীর পাহাড়’

প্রকাশিত: নভেম্বর ৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : চট্টগ্রামের আদালতপাড়া হিসেবে পরিচিত পাহাড়টি ‘কোর্ট হিল’ নাকি ‘পরীর পাহাড়’ হবে- তা নির্ধারণে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতি। এতে ‘কোর্ট হিল’ নামের পক্ষে অতীতের সরকারি নথির সাক্ষ্যপ্রমাণ হাজির করে ‘পরীর পাহাড়’ নাম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা চেয়েছে আইনজীবী সমিতি। এই পাহাড় নিয়ে আইনজীবী সমিতি ও জেলা প্রশাসনের বিরোধের মধ্যে এই প্রথম বিষয়টি গড়াল আদালত পর্যন্ত। তবে জেলা প্রশাসন বলছে, ব্রিটিশ আমলে পাহাড়টি অধিগ্রহণের সব নথিপত্র ছাড়াও ‘পরীর পাহাড়’ নামের পক্ষে ঐতিহাসিক বইপত্রে প্রমাণ আছে।
গত রবিবার চট্টগ্রামের প্রথম সিনিয়র অ্যাসিসট্যান্ট জজ ইসরাত জাহানের আদালতে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির পক্ষে প্রতিনিধিত্বমূলক মামলাটি করেন সাধারণ সম্পাদক এ এইচ এম জিয়া উদ্দিন। এতে বিবাদী করা হয়েছে- চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এবং সহকারী কমিশনারকে (ভূমি)। আদালত আইনজীবী সমিতির অভিযোগ আমলে নিয়ে তিন দিনের মধ্যে বিবাদীদের লিখিত জবাব দিতে বলেছেন। সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ এইচ এম জিয়া উদ্দিন বলেন, ব্রিটিশ সরকার এই পাহাড়কে নিয়েছিল কোর্ট বিল্ডিং করার জন্য। ব্রিটিশ আমলে নির্মিত লাল ভবনটি কোর্ট বিল্ডিং এবং এলাকাটি কোর্ট হিল হিসেবে পরিচিত। বর্তমান জেলা প্রশাসক চট্টগ্রামে আসার আগে সব সরকারি নথিতে ডাকঘরসহ সরকারি স্থাপনাগুলোর ঠিকানা হিসেবে ‘কোর্ট হিল’ লেখা রয়েছে। সেটাকেই ডিসি ইনটেনশনালি (ইচ্ছাকৃতভাবে) পরীর পাহাড় নাম দিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করছেন। যা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সেজন্য আমরা ডিসিসহ বিবাদীদের বিরুদ্ধে নালিশি মামলা করে পরীর পাহাড় নামকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং পরীর পাহাড় নাম ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়েছি। আদালত তিন দিনের মধ্যে লিখিত জবাব দিতে বলেছেন।’
মামলা প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমান বলেন, ‘মামলার বিষয় নিয়ে আমি কোনো মন্তব্য করব না। পরীর পাহাড়টি কী নামে অধিগ্রহণ করা হয়েছিল এবং রেকর্ড হয়েছে এ সংক্রান্ত সব নথিপত্র আছে। এটা চট্টগ্রামের ইতিহাস-ঐতিহ্য-সংস্কৃতির একটি অংশ। ইতিহাসের বই ও নথিপত্রে বিষয়টি আছে। আদালতে মামলা যেহেতু হয়েছে সেটি মামলার প্রক্রিয়ায় চলবে।’ তবে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মতে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় পরীর পাহাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে আগের রূপে ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে। যাতে মানুষ প্রাণভরে পরীর পাহাড়ে উঠে নিশ্বাস নিতে পারে। আমরা সেই অনুযায়ী কাজ করছি। খুব শিগগিরিই তা দৃশ্যমান হবে।’
উল্লেখ্য, পরীর পাহাড়ে আইনজীবীদের বর্তমান পাঁচটি ভবনের পাশে আরো দুটি নতুন ভবন নির্মাণ করা নিয়ে আইনজীবী সমিতি ও জেলা প্রশাসনের দ্ব›েদ্বর বিষয়টি চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে শুরু হয়। জেলা প্রশাসন পরীর পাহাড়ে নতুন স্থাপনা নির্মাণ না করতে এবং অবৈধ স্থাপনা অপসারণ বিষয়ে চিঠি দিলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। জেলা প্রশাসক বলে আসছেন, পরীর পাহাড়ে সরকারি স্থাপনার বাইরে তিন শতাধিক অবৈধ অনুমোদনহীন স্থাপনা আছে। আইনজীবীদের ভবন নির্মাণে নিয়মনীতির তোয়াক্কা করা হয়নি এবং লিজ নেয়া জমির অতিরিক্ত জমি দখলে নিয়ে ভবনগুলো নির্মাণ করা হয়। বিপরীতে আইনজীবী সমিতির দাবি, সিডিএর অনুমোদন নিয়ে তারা ভবনগুলো নির্মাণ করেছেন। নতুন দুই ভবন নির্মাণকাজ ঠেকাতেই ‘মিথ্যাচারের’ আশ্রয় নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কাছে প্রতিবেদন উত্থাপন করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগেন প্রস্তাবে সায় দেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর পরীর পাহাড়কে প্রতœতাত্ত্বিক এলাকা হিসেবে সংরক্ষণে জেলা প্রশাসনের প্রস্তাব
বিবেচনা করার কথাও জানিয়েছে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়। প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তর একটি কমিটিও করে দেয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়