ভ্রমণ ভিসায় ৫০০ জনকে দুবাই পাচার, গ্রেপ্তার ৮

আগের সংবাদ

কপ-২৬ : জলবায়ু বিপর্যয় রোধ > গরিব দেশগুলোকে ২৯ কোটি পাউন্ড দেবে ব্রিটেন

পরের সংবাদ

মেসির অভাব বুঝতে দেননি নেইমার-এমবাপ্পে

প্রকাশিত: নভেম্বর ৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : আর্জেন্টাইন তারকা ফুটবলরা লিওনেল মেসি কিছুদিন আগেই মাংসপেশির চোট থেকে ফিরেছেন। সে এখনো পুরোপুরি ফিট নন। তাই দলের সেরা তারকার অনুপস্থিতি বুঝতে দেননি নেইমার ও কিলিয়ান এমবাপ্পে। আক্রমণ ভাগের দুই তারকার নৈপুণ্যে জয় পেয়েছে প্যারিস সেইন্ট জার্মেই (পিএসজি)। গতকাল ফরাসি লিগ ওয়ানের ম্যাচে বোর্দোকে ৩-২ গোলে হারিয়েছে মারিসিও পচেত্তিনোর শিষ্যরা। প্রতিপক্ষের মাঠে প্রথমার্ধে জোড়া গোল করেন নেইমার। তার দুই গোলেই অবদান ছিল এমবাপ্পের। শেষ দিকে ২টি গোল শোধ করে বোর্দো। পরে এমবাপ্পে নিজেও গোল করে জয় নিশ্চিত করেন। এর ফলে ১৩ ম্যাচে ১১ জয় ও এক ড্রয়ে ৩৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে পিএসজি। সমান ম্যাচে ১০ পয়েন্ট কম নিয়ে দুইয়ে লঁস। আর ২৩ পয়েন্ট নিয়ে নিস তিনে, তাদের চেয়ে ১ পয়েন্ট কম নিয়ে মার্সেই চারে আছে। দুদলই একটি করে ম্যাচ কম খেলেছে।
এদিকে গতকাল বার্সেলোনা-সেল্টা ভিগোর মধ্যকার ম্যাচ ছিল উত্তেজনায় ঠাসা। আনসু ফাতি, সার্জিও বুটসকেতস ও মেমফিস ডিপাইদের নৈপুণ্যে তিন গোলে এগিয়ে থেকেও ম্যাচ জিততে পারেনি বার্সা। লা লিগায় সেল্টা ভিগোর বিপক্ষে রোমাঞ্চকর ম্যাচটি ড্র হয়েছে ৩-৩ গোলে। এ ম্যাচে বার্সার নতুন কোচ হয়েছেন জাভি। আজ ন্যু ক্যাম্পে দর্শকদের সামনে পরিচয় করে দেয়া হবে। তার আগেই কাতালানদের সর্বশেষ ফল দেখে হয়তো জাভির কপালে চিন্তার ভাজটা আরো একটু বাড়বে। কারণ বার্সা ১২ ম্যাচে পঞ্চম ড্রয়ে ১৭ পয়েন্ট নিয়ে নবম স্থানে। সেল্টা ভিগো এক ম্যাচ বেশি খেলে তৃতীয় ড্রতে ১২ পয়েন্ট নিয়ে ১৪তম স্থানে অবস্থান করছে।
এছাড়া অন্য ম্যাচে রায়ো ভাইয়েকানোকে হারিয়ে শীর্ষে ওঠেছে রিয়াল মাদ্রিদ। সুযোগও মিলল অনেক কিন্তু ফিনিশিংয়ে ব্যর্থতায় ব্যবধান বাড়ল না। ভাইয়েকানোর বিপক্ষে শেষ দিকে উল্টো পয়েন্ট হারানোর শঙ্কায় পড়েছিল আনচেলত্তির শিষ্যরা। তবে ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত ২-১ গোলে জিতেছে রিয়াল।
এদিকে মেসিকে ছাড়া খেলতে নেমে শুরু থেকে বল দখলে পিএসজি এগিয়ে থাকলেও পরিষ্কার সুযোগ তৈরি করতে পারছিল না। ২৬ মিনিটের লক্ষ্যে ম্যাচের প্রথম শটে এগিয়ে যায় তারা। এমবাপ্পের ক্রস ডি-বক্সে দারুণভাবে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে জায়গা বানিয়ে ডান পায়ের শটে দুই খেলোয়াড়ের মাঝ দিয়ে বল জালে পাঠান নেইমার। ৩৬ মিনিটে ভালো একটি সুযোগ পায় সফরকারীরা। কাছ থেকে ইউলিয়ান ড্রাক্সলারের শট গোলরক্ষক ঠেকানোর পর পেয়ে যান এমবাপ্পে। কিন্তু ঠিকমতো শট নিতে পারেননি তিনি। এরপর ৪৩ মিনিটে আরেকটি দারুণ ফিনিশিংয়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন নেইমার। ডি-বক্সে এমবাপ্পেকে পাস দিয়ে এগিয়ে যান তিনি। ফরাসি ফরোয়ার্ডের ব্যাকহিল ফ্লিকে বল পেয়ে ডান পায়ের শটে ঠিকানা খুঁজে নেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। গত ৩১ জানুয়ারির পর এই প্রথম ম্যাচে জোড়া গোল করলেন নেইমার। এবারের লিগে আট ম্যাচে তার গোল হলো তিনটি। বিরতির আগে বোর্দোর তিমোথি পেম্বেলের প্রচেষ্টা দারুণ দক্ষতায় ফিরিয়ে জাল অক্ষত রাখেন কেইলর নাভাস। ৬৩ মিনিটে স্কোরলাইন হয় ৩-০। মাঝমাঠের কাছাকাছি থেকে আন্দের এররেরার থ্রæ বল ধরে গোলরক্ষককে এগিয়ে আসতে দেখে পাশে থাকা এমবাপ্পেকে পাস দেন জর্জিনিয়ো ভেইনালডাম। ফাঁকা জালে বল পাঠান বিশ্বকাপজয়ী তারকা। ৭ মিনিটে ব্যবধান কমায় স্বাগতিকরা। বাঁ দিক থেকে ইয়াসিন আদলির নিচু ক্রসে ছুটে গিয়ে ছয় গজ বক্সের মুখ থেকে জাল খুঁজে নেন এলিস। আর যোগ করা সময়ে তাদের পরের গোলটি করেন এমবায়ে নিয়াং।
এছাড়া সেলতার মাঠে প্রথমার্ধ ছিল শুধুই বার্সেলোনার। ফাতি, বুসকেতস ও ডিপাইয়ের গোলে জয়ে ফেরার সম্ভাবনা প্রবলভাবে জাগিয়েছিল তারা। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে একটু একটু করে তাদের মুঠো থেকে লাগাম ছুটে যায়। শেষ মুহূর্তে জয় হাতছাড়া হওয়া ম্যাচে বার্সেলোনার দুর্ভাবনাও বাড়িয়েছে ফাতির চোট। একদফা ব্যথা পেয়েও হাতে ব্যান্ডেজ করে খেলা চালিয়ে যাচ্ছিলেন এই তরুণ ফরোয়ার্ড। কিন্তু প্রথমার্ধের বিরতির আগ মুহূর্তে জর্দি আলবার থ্রæ বল নিয়ন্ত্রণে নিতে গিয়ে বাম ঊরু ধরে বসে থাকতে দেখা যায় কদিন আগে চোট কাটিয়ে ফেরা ফাতিকে। দ্বিতীয়ার্ধে তাকে আর মাঠে নামাননি অন্তর্বর্তীকালীন কোচ বারজুয়ান। বার্সার মূল দলের কোচ হিসেবে বারজুয়ানের শেষটা জয়ের রঙে রঙিন হলো না। রোনাল্ড কুমানকে বিদায় করে দলের জোয়াল তার কাঁধে তুলে দিয়েছিল ক্লাব কর্তৃপক্ষ। তার হাত ধরেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সবশেষ ম্যাচে দিনামো কিয়েভকে হারিয়েছিল দলটি। বারজুয়ানের হাত ঘুরে এবার দায়িত্ব পাচ্ছেন দলটির সাবেক তারকা মিডফিল্ডার চাভি এরনান্দেস। ম্যাচের শুরু থেকেই প্রতিপক্ষকে চেপে ধরে বার্সেলোনা। প্রথমার্ধে শানানো ছয়টি আক্রমণের চারটি লক্ষ্যে রেখে তিনটি থেকে গোল তুলে নেয় কাতালুনিয়ার দলটি।
সেলতার জালে গোলের শুরু পঞ্চম মিনিট থেকে। জর্দি আলবার লম্বা ক্রস ধরে বাঁ দিক দিয়ে আক্রমণে উঠে এক ডিফেন্ডারকে ফাঁকি দিয়ে কিছুটা জায়গা করে নেন ফাতি। এরপর দুই ডিফেন্ডারের ফাঁক দিয়ে দারুণ শটে ?দূরের পোস্ট দিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন এই তরুণ ফরোয়ার্ড।
অষ্টাদশ মিনিটে যেন আচমকা দ্বিতীয় গোলটি পেয়ে যায় বার্সেলোনা। বক্সের বাইরে থেকে কোনো বাধা ছাড়াই সের্হিও ?বুসকেতসের একটু দেখেশুনে নেয়া নিচু শট বাঁক খেয়ে জালে জড়ায়। সামনে এক ডিফেন্ডার থাকায় সেলতা গোলরক্ষক বুঝে উঠতে পারেননি ঠিকঠাক। প্রথমার্ধে কোনো শটই লক্ষ্যে রাখতে না পারা সেলতা হতাশ হয় ২০ মিনিটে। ইগো আসপাস জালে বল জড়িয়েছিলেন কিন্তু তার আগেই ফাউলের কারণে বাজে রেফারির বাঁশি। ৩৪ মিনিটে আলবার ক্রসে ডিপাইয়ের লাফিয়ে করা হেড আটকানোর কোনো সুযোগই পাননি গোলরক্ষক। ম্যাচের লাগাম মুঠোয় নেয় বার্সেলোনা, যা ছুটে যায় পরের ৪৫ মিনিটে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ফাতির বদলি নামেন বালদে মার্তিনেস। এরপর থেকে একটু একটু করে দৃশ্যপটে আসতে থাকে বদল। এরপর ৫২ মিনিটে ঘুরে দাঁড়ায় সেলতা। গালানের আড়াআড়ি ক্রস মার্ক-আন্ড্রে টের স্টেগেন ফেরালেও গøাভসে জমাতে পারেননি। সামনে থাকা আরাহো ক্লিয়ার করার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন ভারসাম্য হারিয়ে। ঘুরে দাঁড়ানো গোল পাওয়ার পর উজ্জীবিত ফুটবল খেলা সেলতা ম্যাচ জমিয়ে তোলে ৭৪ মিনিটে। সের্ভির ক্রসে হেডে লক্ষ্যভেদ করেন নলিতো। সেলতার এই ফরোয়ার্ডকে কড়া পাহারায় রাখতে পারেননি ক্লেমোঁ লংলে।
দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে গালানের ক্রস ধরে আরাহোর প্রতিরোধ ভেঙে দারুণ কোনাকুনি শটে জাল খুঁজে নেন আসপাস। উল্লাসে ফেটে পড়ে সেলতার গ্যালারি। তখন মাথায় হাত বার্সেলোনার খেলোয়াড়দের।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়