ভ্রমণ ভিসায় ৫০০ জনকে দুবাই পাচার, গ্রেপ্তার ৮

আগের সংবাদ

কপ-২৬ : জলবায়ু বিপর্যয় রোধ > গরিব দেশগুলোকে ২৯ কোটি পাউন্ড দেবে ব্রিটেন

পরের সংবাদ

বহদ্দারহাট ফ্লাইওভারে ফের যান চলাচল শুরু

প্রকাশিত: নভেম্বর ৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : ১২ দিন পর অবশেষে যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হলো চট্টগ্রাম নগরের বহদ্দারহাট এম এ মান্নান ফ্লাইওভার। র‌্যাম্পের পিলারে ফাটল বা স্ট্রাকচারালি (গঠনগত) কোনো সমস্যা না থাকায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার দুদিন পরেই যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়। তবে সর্বোচ্চ ৮ ফিট উচ্চতার হালকা যান এই র‌্যাম্পে চলাচল অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর আগে ভারী যান চলাচলরোধে ফ্লাইওভারের র‌্যাম্পের তিন প্রবেশপথে সেইফটি গেট বসিয়েছে চসিক।
চসিকের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক জানিয়েছেন, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে ফ্লাইওভারে কোনো ফাটল পাওয়া যায়নি। হালকা ও মাঝারি যান চলাচলের জন্য র‌্যাম্পটি খুলে দেয়া হয়েছে। তবে বেশি উচ্চতার ভারী যানবাহন চলাচল করতে পারবে না। বেশি উচ্চতার ও ওভারলোড যানবাহন যাতে চলাচল করতে না পারে, সেজন্য সেখানে বসানো হয়েছে সেইফটি গেট। ঠিকাদার আবুল কালাম বলেন, ওয়েল্ডিং মেশিন দিয়ে সাড়ে ৮ ফুট উচ্চতার মোট ৬টি সেইফটি লোহার পিলারের উপর ২৬ ফুট প্রস্থের উচ্চতা নিয়ন্ত্রক বার বসানো হয়েছে। ভারী যান চলাচলরোধে এ সেইফটি গেট বসানো হয়।
সিটি করপোরেশন গঠিত তদন্ত কমিটি বৃহস্পতিবার রাতে প্রতিবেদন জমা দেয়। এতে বলা হয়, ফ্লাইওভারের র‌্যাম্পের পিলারে কোনো ফাটল বা স্ট্রাকচারাল ক্রাক পাওয়া যায়নি। পিলার ২টির ওই অংশটুকুতে বিদ্যমান ফোম সরিয়ে যথাযথভাবে পরিষ্কার করে সে অংশটুকু ‘হাই স্ট্রেংথ থিন কংক্রিট’ ব্যবহার করে ফিনিশিং দিতে বলা হয়েছে। এতে আরো বলা হয়, ফ্লাইওভারের ওই অংশে লাইট ট্রাফিক (হালকা যানবাহন) চলাচল করতে পারবে। তাছাড়া সার্বক্ষণিক মনিটরিং সম্ভব না হলেও সময়ে সময়ে ফ্লাইওভারের গুরুত্বপূর্ণ অংশে মনিটরিং করতে বলা হয়েছে।
গত ২৫ অক্টোবর রাতে নগরীর বহদ্দারহাট মোড়ে এম এ মান্নান ফ্লাইওভারের র‌্যাম্পের পিলারে ফাটল দেখা দেয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ে। রাতেই ওই র‌্যাম্পে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। ২৬ অক্টোবর দুপুরে ফ্লাইওভারটি পরিদর্শনে গিয়ে সিটি মেয়র এম রেজাউল করিম ফাটল দেখে র‌্যাম্পের নির্মাণ ত্রæটি অথবা নকশাগত ত্রæটি থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেন। তবে ফ্লাইওভারটির নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান সিডিএর প্রকল্প পরিচালক মাহফুজুর রহমান হালকা যানের জন্য তৈরি র‌্যাম্পে ভারী যান চলায় ফাটল হয়েছে বলে জানান। পরদিন ২৭ অক্টোবর নকশা প্রণয়নকারী প্রতিষ্ঠান ডিজাইন প্ল্যানিং এন্ড ম্যানেজমেন্ট (ডিপিএম) কনসালটেন্ট লিমিটেড এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স গ্রুপের বিশেষজ্ঞরা পরিদর্শন শেষে দাবি করেন, ফ্লাইওভারের পিলারে কোনো ফাটল নেই, যা দেখা যাচ্ছে তা হলো ‘কনস্ট্রাকশন জয়েন্ট’। তবে র‌্যাম্পটি হালকা যানবাহন চলাচলের জন্য নকশা করা হলেও সেটিতে ভারী যানবাহন চলাচল করার বিষয়টি স্বীকার করেন উভয় সংস্থা।
প্রসঙ্গত, যানজট নিরসনে নগরের শুল্কবহর থেকে বহদ্দারহাট এক কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত এম এ মান্নান ফ্লাইওভার নির্মাণের উদ্যোগ নেয় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-সিডিএ। নির্মাণকাজ শেষে ২০১৩ সালের ১২ অক্টোবর ফ্লাইওভারটি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে উদ্বোধনের পর ফ্লাইওভারটি কার্যকর না হওয়ায় ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে আরাকান সড়কমুখী র‌্যাম্প নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সিডিএ। ৩২৬ মিটার দীর্ঘ এবং ৬ দশমিক ৭ মিটার চওড়া

র‌্যাম্পটি নির্মাণ শেষে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে হস্তান্তরের পর থেকে এর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নেয় চসিক। প্রথমে প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ছিল ৯১ কোটি টাকা। পরে সংশোধন করে ১০৬ কোটি টাকা করা হয়। ফের সংশোধন করে প্রকল্প ব্যয় ১২০ কোটি টাকা করা হয়। ১ হাজার ৩৩২ মিটার দৈর্ঘ্য ফ্লাইওভারটির প্রস্থ ১৪ মিটার। চার লেনের বহদ্দারহাট এ ফ্লাইওভারের দুই পিলারের দূরত্ব ১৩০ ফুট।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়