ভ্রমণ ভিসায় ৫০০ জনকে দুবাই পাচার, গ্রেপ্তার ৮

আগের সংবাদ

কপ-২৬ : জলবায়ু বিপর্যয় রোধ > গরিব দেশগুলোকে ২৯ কোটি পাউন্ড দেবে ব্রিটেন

পরের সংবাদ

ধর্মঘটে হয়নি পণ্য ডেলিভারি বন্দরে কন্টেইনার জটের শঙ্কা

প্রকাশিত: নভেম্বর ৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে পরিবহন ধর্মঘটে চট্টগ্রাম বন্দরে তৃতীয় দিনের মতো বন্ধ ছিল ডেলিভারি কার্যক্রম। হাতেগোনা দু-একটি ছাড়া গতকাল রবিবারও পণ্য ডেলিভারির কোনো গাড়ি প্রবেশ কিংবা বের হয়নি। এছাড়া ধর্মঘটের প্রথম দিকে বন্দর থেকে বিভিন্ন ডিপোতে আমদানি-রপ্তানি পণ্য আনা-নেয়া হলেও বর্তমানে শ্রমিকদের বাধায় সেটিও প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।
বন্দর-সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশের প্রায় ৯২ ভাগ আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের নিয়ন্ত্রক চট্টগ্রাম বন্দর। পরিবহন ধর্মঘটের কারণে এ বন্দরে শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে বন্ধ রয়েছে ডেলিভারি কার্যক্রম। ইয়ার্ডে বর্তমানে কন্টেইনার জমা রয়েছে ৩৮ হাজার টিইইউসেরও (২০ ফুট দৈর্ঘ্যরে একক) বেশি। দ্রুত এ সমস্যার সমাধান না হলে সংকটের আশঙ্কা করছেন বন্দর-সংশ্লিষ্টরা।
তারা বলছেন, পণ্য পরিবহন বন্ধ থাকায় চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। কন্টেইনার জট তৈরির শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বন্দরে জাহাজের অপেক্ষমাণ সময় বাড়ছে। এতে করে বাড়ছে পরিবহন ব্যয়ও। সব মিলিয়ে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। যার প্রভাব পড়বে জনগণের ওপর।
চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, হঠাৎ করে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোটা উচিত হয়নি, আবার ধর্মঘট আহ্বান করাটাও উচিত হয়নি। ব্যবসায়ী এবং জনগণের স্বার্থে দ্রুত এ ধর্মঘট প্রত্যাহার করা উচিত।
বন্দর সচিব ওমর ফারুক বলেন, ধর্মঘটের তৃতীয় দিনে হাতেগোনা কিছু পণ্য ডেলিভারি হয়েছে। এমনিতেই রবিবার ডেলিভারি হওয়ার কথা ছিল কয়েক হাজার কনটেইনার। কিন্তু শ্রমিকরা বন্দরে কোনো গাড়ি প্রবেশ কিংবা বের করতে না দেয়ায় সেগুলোও ডেলিভারি দেয়া সম্ভব হয়নি। এছাড়া ডিপো থেকে বন্দরে তেমন একটা মালামাল আনা-নেয়া হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, বন্দরে আর মাত্র কয়েক হাজার টিইইউস কনটেইনার রাখা যাবে। দ্রুত ধর্মঘট প্রত্যাহার না হলে জট তৈরি হতে পারে।
এদিকে চট্টগ্রাম মহানগরে গণপরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহারের পর গতকাল রবিবার সকাল থেকে গণপরিবহন চলাচল করেছে। তবে যাতায়াতের জন্য দ্বিগুণ-তিনগুণ ভাড়া গুনতে হয়েছে যাত্রীদের। নগরীর অক্সিজেন, মুরাদপুর, দুই নম্বর গেট, জিইসি, কাজির দেউড়ি, নিউমার্কেটসহ বেশকিছু এলাকা রবিবার সকালে ঘুরে দেখা যায় গণপরিবহন চলাচল করছে। তবে তা স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা কম। এসব গণপরিবহনে যাত্রীদের কাছ থেকে দ্বিগুণ, তিনগুণ এমনকি চারগুণ বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।
অন্যদিকে নগরের অভ্যন্তরে গণপরিবহন চলাচল করলেও দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। চট্টগ্রাম থেকে দূরপাল্লার সব বাস ছাড়ে নগরের দামপাড়া, বিআরটিসি মোড়, অলঙ্কার ও এ কে খান মোড় থেকে। শুক্রবার সকাল থেকে বাসের সব কাউন্টার বন্ধ। কাউন্টারের সামনে ও রাস্তায় যাত্রীদের ভিড়। যদিও রাতে দু-একটি গাড়ি চালালেও ভাড়া ছিল দ্বিগুণ। দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা যাত্রীরা।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম অঞ্চলের সভাপতি মো. মুছা বলেন, আমাদের দাবি ডিজেলের দাম কমানো। যদি গাড়ির ভাড়া বাড়ানো হয়, সেক্ষেত্রে শ্রমিক ও যাত্রীদের মধ্যে একটি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হবে। যার দায় সরকার বা মালিকপক্ষ কেউ নেবে না। তাই আমাদের একটাই দাবি, ডিজেলের দামে ভর্তুকি দেয়া হোক।
চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের মহাসচিব মঞ্জুরুল আলম মঞ্জু বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদের লস হচ্ছে বলে আমরা গাড়ি চলাচল বন্ধ রেখেছি। কেউ গাড়ি চালাতে চাইলে বাধা দেয়া যাবে না। কোনো ধরনের পিকেটিং করা যাবে না। সংগঠনের পক্ষ থেকে বলে দেয়া হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়