এএসপি আনিসুল হত্যা মামলার আসামির মৃত্যু

আগের সংবাদ

ভাড়া বাড়ানো কতটা যৌক্তিক

পরের সংবাদ

হাতিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স : ডাক্তার ও নার্সের ৪৩ পদ খালি সেবা ব্যাহত

প্রকাশিত: নভেম্বর ৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মোহাম্মদ সোহেল, নোয়াখালী থেকে : হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গুরুত্বপূর্ণ পদে দীর্ঘদিন ধরে ডাক্তার-নার্স সংকট রয়েছে। বর্তমানে এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৫৫ জন ডাক্তার-নার্সের মধ্যে ৪৩টি পদ খালি রয়েছে। এতে হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তথ্য সূত্রে জানা গেছে, সৃজনকৃত ২১ জন ডাক্তারের পদের মধ্যে ১৪টি পদে ডাক্তার শূন্য রয়েছে। ৩০ জন সিনিয়র স্টাফ নার্সের পদ থাকলেও আছেন ৪ জন, শূন্য পদ রয়েছে ২৬টি। ৪ জন মিডওয়াইফ পদের মধ্যে ৩টি পদই শূন্য। হাতেগোনা ৩-৪ জন ডাক্তার ও নার্স দিয়ে চিকিৎসা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হিমশিম খাচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট কার্ডিওলজি, গাইনি, মেডিসিন, সার্জারি, চক্ষু, চর্ম ও যৌন, নাক-কান-গলা, অর্থোপেডিক্স, মেডিকেল অফিসার হোমিও, ইএমও, আইএমও, এনেসথেসিস্ট, এমও প্যাথলজিস্ট, সহকারী ডেন্টাল সার্জনপদে কোনো ডাক্তার নেই।
মাত্র ২ জন মেডিকেল অফিসার (স্যাকমো), ১ জন জুনিয়র কলসালটেন্ট (শিশু), ১ জন মেডিকেল অফিসার ও উপজেলা স্বাস্থ্য পঃ পঃ কর্মকর্তা দিয়ে চলছে স্বাস্থ্যসেবার কার্যক্রম। স্যাকমো যারা আছেন তারা জরুরি বিভাগ দেখেন, বাকিরা হাসপাতাল চলাকালীন সময়ে বেশির ভাগ সময় প্রাইভেট ক্লিনিকে রোগী দেখেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এতে রোগীদের ভোগান্তি চরমে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, ৫০ শয্যার হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি দ্বীপের ৬ লাখ মানুষের চিকিৎসার একমাত্র প্রধান কেন্দ্র হলেও প্রসূতি মা, শিশুরোগসহ সাধারণ চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা না পাচ্ছেন ডাক্তার, না পাচ্ছেন বিছানা। প্রায় হাসপাতালের অলি-গলিতে, করিডোরে রোগীদের পড়ে থাকতে দেখা যায় রোগীদের। চিকিৎসকের অভাবে চিকিৎসা পেতে রোগীদের অমানবিকভাবে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। অন্যদিকে হাসপাতালের চিকিৎসা সেবায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চালিকা শক্তি হলেন নার্স। হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩০ জন সিনিয়র স্টাফ নার্সের পদ থাকলেও সেখানে মাত্র ৪ জন সিনিয়র স্টাফ নার্স থাকার কথা থাকলেও সেখানে মাত্র ১ জন দিয়ে স্বাস্থ্যসেবা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বাকি সব পদে জনবল শূন্য রয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. নাজিম উদ্দিন বলেন, নার্সিং এন্ড মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর থেকে নার্স ও মিডওয়াইফ পদে উপজেলা পর্যায়ে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে আসলেও কিছুদিনের মধ্যে কীভাবে যেন তারা আবার চলে যায়। আমরা তা জানিও না কিংবা আমাদের কাছে কোনো যোগ জিজ্ঞাসারও প্রয়োজন বোধ করেন না তারা। তাদেরকে অফিসিয়ালি ধরে রাখার ব্যাপারে আমাদের কোনো সুযোগ নেই। এতে স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে কিছুটা হিমশিম খেতে হচ্ছে।
হাতিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহকারী ডেন্টাল সার্জন এবং এমও প্যাথলজিস্ট দীর্ঘদিন ধরে অন্য প্রতিষ্ঠানে প্রেষণে কাজ করছেন। কিন্তু বেতন নিচ্ছেন হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে।
অপরদিকে হাতিয়া উপজেলার মাঠ পর্যায়ের ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতেও চিকিৎসাসেবা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। হরনী ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ছাড়া ডাক্তারবিহীন রয়েছে চানন্দী ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র, নলচিরা উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র, বুড়িরচর ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র, সোনাদিয়া ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র, আফাজিয়া ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র, ওছখালি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র। একমাত্র উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (স্যাকমো) দ্বারা স্বাস্থ্যসেবা চলছে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নাজিম উদ্দিন বলেন, আমরা হাতিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডা. সংকটের কথা সিভিল সার্জন অফিসে বার বার জানিয়েছি। ইতোমধ্যে ৩ জন এমবিবিএস ডেপুটেশনে পাঠিয়েছেন। হাতিয়া দ্বীপের ৬ লাখ মানুষের একমাত্র প্রধান স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রটিতে সব সময় রোগীদের চাপ অত্যন্ত বেশি। তাই দ্বীপবাসীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সৃজনকৃত পদগুলোতে ডাক্তার সংখ্যা পূরণ খুবই জরুরি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়