এএসপি আনিসুল হত্যা মামলার আসামির মৃত্যু

আগের সংবাদ

ভাড়া বাড়ানো কতটা যৌক্তিক

পরের সংবাদ

সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদ : ১২ নভেম্বর ধিক্কার মিছিলের ডাক

প্রকাশিত: নভেম্বর ৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : সাম্প্রতিক সহিংসতার প্রতিবাদে আগামী ১২ নভেম্বর সারাদেশে ‘ধিক্কার মিছিলের’ ডাক দিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। ওই দিন বিকাল ৪টায় সারাদেশে এ কর্মসূচি পালিত হবে। ঢাকার শাহবাগ চত্বরে ও চট্টগ্রামে প্রেস ক্লাব চত্বরেও এই কর্মসূচি পালিত হবে।
গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট রানা দাশগুপ্ত এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার, ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক প্রমুখ।
রানা দাশগুপ্ত বলেন, অতীতে আমাদের দেশের কোনো রাজনৈতিক দল স্বীকার করতে চাননি যে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ওপর নির্বিচারে সাম্প্রদায়িক হামলা হচ্ছে। অনেকেই এ ঘটনাগুলোকে অতীতে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে উড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছেন। এবার দেশের প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো সাম্প্রদায়িক হামলার বিষয়ে দোষারোপের রাজনীতি করে চলেছে এবং এর মাধ্যমে প্রকারান্তরে স্বীকার করে নিয়েছে যে সাম্প্রদায়িক হামলা অতীতেও ছিল, বর্তমানেও আছে এবং দায়মুক্তির সংস্কৃতির কারণে তা চলছে।
সম্প্রতি দুর্গাপূজা ঘিরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সাম্প্রদায়িক হামলার সময় সরকারের একাধিক মন্ত্রীর ভূমিকার সমালোচনা করেন রানা দাশগুপ্ত। তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িক হামলা চলাকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের ভূমিকা আমাদের ভীষণভাবে ক্ষুব্ধ ও ব্যথিত করেছে। সম্প্রতি সাম্প্রদায়িক সহিংসতা নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বিবৃতি আমাদের ভীষণভাবে ক্ষুব্ধ ও ব্যথিত করেছে। সামগ্রিক ঘটনাকে তার লঘু করে দেখার প্রবণতা বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আন্তর্জাতিক মহলে ক্ষুণ্ন করেছে। তিনি বিবৃতিতে কুমিল্লার পূজামণ্ডপে হনুমানের মূর্তিতে পবিত্র কুরআন শরিফ রাখা ব্যক্তিকে ‘মানসিক ভারসাম্যহীন ও ভবঘুরে’ বলে মূল ঘটনাকে আড়াল করার চেষ্টা করেছেন। তদন্তকালীন সিআইডির ভাষায় ‘সে ভবঘুরেও নয় মানসিক ভারসাম্যহীনও নয়, সে চতুর’। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এ দায়িত্ব ও কাণ্ডজ্ঞানহীন বিবৃতির জন্য আজকের এ সংবাদ সম্মেলন থেকে আমরা তাকে ধিক্কার জানাই।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সমালোচনা করে রানা দাশগুপ্ত বলেন, আইনমন্ত্রীর ‘ইউটার্ন’ আমাদের হতবাক ও বিস্মিত

করেছে। এরই মধ্যে এক সেমিনারে তিনি বলেছিলেন, সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন ও জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন আইন প্রণয়ন করা হচ্ছে এবং দ্রুততম সময়ে তা সংসদে উত্থাপন করা হবে। এরপর চারদিন যেতে না যেতেই আইনমন্ত্রী বললেন, সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন নয়, তিনি সাক্ষী সুরক্ষা আইনের কথা বলেছেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে ধন্যবাদ জানিয়ে ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বলেন, গত ২ নভেম্বর ভার্চুয়াল ভাষণে সত্য কথা তুলে ধরার জন্য আমরা তাকে ধন্যবাদ জানাই। আমরা মনে করি, ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘুদের রক্ষায় শুধু কথায় নয়, কাজের মধ্য দিয়ে তা দৃশ্যমান করা আজ যথার্থ অর্থেই প্রয়োজন।
তিনি বলেন, আমরা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, ২০১৮ সালের নির্বাচনের প্রাক্কালে ঘোষিত সরকারি দলের নির্বাচনী ইশতেহারে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন, বৈষম্য বিলোপ আইন প্রণয়ন, অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন, পার্বত্য শান্তিচুক্তি ও পার্বত্য ভূমি কমিশনের বাস্তবায়ন, সমতলের আদিবাসীদের জন্য ভূমি কমিশন গঠনের যে অঙ্গীকার করা হয়েছিল, অনতিবিলম্বে তা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নিতে হবে। অন্যথায় ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী তা কোনোভাবেই মেনে নেবে না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়