এএসপি আনিসুল হত্যা মামলার আসামির মৃত্যু

আগের সংবাদ

ভাড়া বাড়ানো কতটা যৌক্তিক

পরের সংবাদ

সাঁওতাল হত্যা দিবসে সমাবেশ : রক্তভেজা জমিতে ইপিজেড নির্মাণ বন্ধের দাবি

প্রকাশিত: নভেম্বর ৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

গাইবান্ধা প্রতিনিধি : গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে তিন সাঁওতাল হত্যার বিচার, অবিলম্বে আসামিদের গ্রেপ্তারসহ সাঁওতালদের রক্তভেজা তিন ফসলি জমিতে ইপিজেড নির্মাণ বন্ধের দাবি জানানো হয়েছে। ‘সাঁওতাল হত্যা দিবস’ উপলক্ষে গতকাল শনিবার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম কাটামোড় এলাকায় আয়োজিত এক সমাবেশে সাঁওতালরা এ দাবি জানায়।
এর আগে সাঁওতাল পল্লীর জয়পুর মাদারপুরে বসতি উচ্ছেদের জায়গায় স্থাপিত অস্থায়ী শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে ও মোমবাতি জ্বালিয়ে নিহত মঙ্গল মার্ডি, রমেশ টুডু ও শ্যামল হেমব্রম স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন ও শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। পরে দাবি দাওয়াসংবলিত ব্যানার-ফেস্টুন ও কালো পতাকা হাতে পাঁচ শতাধিক সাঁওতাল-বাঙালি শোক র‌্যালিতে অংশ নেয়।
র‌্যালি শেষে ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে তীর-ধনুক ও বাদ্যযন্ত্র নিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আদিবাসী সাঁওতালরা তাদের ঐতিহ্য-সংস্কৃতি তুলে ধরে। সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ, বাংলাদেশ আদিবাসী ইউনিয়ন, আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদ, উত্তরবঙ্গ আদিবাসী ফোরাম, এএলআরডি, কাপেং ফাউন্ডেশন, সিডিএ দিনাজপুর ও জনউদ্যোগ গাইবান্ধা যৌথভাবে এসব কর্মসূচির আয়োজন করে।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ডা. ফিলিমন বাক্সে। বক্তব্য দেন, মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল, ভূমি অধিকারকর্মী ও এএলআরডির

নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, গাইবান্ধা জেলা বার সাধারণ সম্পাদক এড. সিরাজুল ইসলাম বাবু, প্রাণ-বৈচিত্র্য গবেষক পাভেল পার্থ, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সবিন চন্দ্র মুন্ডা, নাগরিক উদ্যোগের নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন, জেলা জাসদ সভাপতি গোলাম মারুফ মনা, জনউদ্যোগ গাইবান্ধার সদস্য সচিব প্রবীর চক্রবর্তী, জাতীয় আদিবাসী ফোরাম নেতা হরেন্দ্রনাথ সিং, দীপায়ন খীসা, কাপেং ফাউন্ডেশনের সমন্বয়ক খোকন সুইটেন মুরমু, জাহাঙ্গীর কবির তনু প্রমুখ।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- আদিবাসী নেতা প্রিসিলা মুরমু, থমাস হেমব্রম, সুফল হেমব্রম, সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক স্বপন শেখ, গোলাম রব্বানী মুসা, আব্দুল খালেক, অঞ্জলী রানী দেবী, মৃণাল কান্তি বর্মণ, সুজন প্রসাদ।
২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর গোবিন্দগঞ্জে তিন সাঁওতালকে হত্যা, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, নির্যাতনের বিচার-ক্ষতিপূরণ ও বাপ-দাদার জমিতে পূর্ণ অধিকারসহ সাত দফা দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে বক্তারা বলেন, সাহেবগঞ্জ এলাকায় তিনজন সাঁওতাল হত্যা, ঘরে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনার পাঁচ বছর অতিবাহিত হলেও আদিবাসীরা আজও প্রকৃত বিচার পায়নি। উপরন্তু পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ বা ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি) কর্তৃক তদন্তকৃত চার্জশিটে বাদ পড়েছে মামলার প্রধান আসামি এবং সাঁওতালদের বাড়িতে আগুন দেয়াসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নাম।
বক্তারা সাঁওতাল হত্যার বিচার, আসামিদের গ্রেপ্তার ও সাঁওতালদের রক্তভেজা তিন ফসলি জমিতে ইপিজেড নির্মাণ বন্ধের দাবি জানিয়ে বলেন, যে কোনো এলাকার উন্নয়নে ইপিজেড স্থাপন সেই এলাকার মানুষের জন্য অবশ্যই সুখের খবর। কিন্তু সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্মের আদিবাসী ও বাঙালিদের বাপ-দাদার জমিতে সেখানকার ওয়ারিশদের সঙ্গে কোনো ধরনের সম্মতি ছাড়াই ইপিজেড স্থাপনের ঘোষণা আদিবাসী-বাঙালি জনগণকে হতাশ করেছে। তারা অবিলম্বে তিন ফসলি জমিতে ইপিজেড স্থাপনের প্রক্রিয়া বন্ধ, সমতলের আদিবাসীদের ভূমি সংকট নিরসনে পৃথক ও স্বাধীন ভূমি কমিশন গঠনসহ সাত দফা বাস্তবায়নের দাবি করেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়