এএসপি আনিসুল হত্যা মামলার আসামির মৃত্যু

আগের সংবাদ

ভাড়া বাড়ানো কতটা যৌক্তিক

পরের সংবাদ

ভোটের দিন দৌলতখানের ৭ ইউপিতেই সহিংসতার শঙ্কা

প্রকাশিত: নভেম্বর ৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

এইচ এম নাহিদ, ভোলা থেকে : দৌলতখান উপজেলায় ১১ নভেম্বর দ্বিতীয় ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রার্থীরা সকাল থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত ছুটে চলেছেন ইউনিয়নের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। পুরোদমে প্রচার-প্রচারণা চললেও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা কোণঠাসা হয়ে আছেন। নৌকার প্রার্থীদের বিরুদ্ধে বহিরাগত ক্যাডার, লাঠিয়াল বাহিনী, প্রশাসনিক সুবিধা, বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের ভয়-ভীতি প্রদর্শনসহ বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। উপজেলার সাত ইউপিতে ৭ জন প্রার্থী নৌকার মনোনীত হলেও বাকি ৯ জন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী, ১ জন জাতীয় পার্টি (বিজেপি) থেকে মনোনীত। অভিযোগ আছে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের মধ্যে কয়েকজন প্রার্থী হাইব্রিড হয়েও নৌকার প্রতীক পেয়েছেন। এ নিয়ে সরকারি দলের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে, তাদেরকে মনোনয়ন বঞ্চিতদের পক্ষে ভোট চাইতে দেখা যায়। এদিকে প্রার্থীরা একে অন্যকে দোষারোপসহ বিভিন্ন জায়গায় সহিংসতার অভিযোগ আসছে। এ বিষয়ে বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচন অফিসে সহিংসতার অভিযোগ করেন। সাধারণ ভোটাররা বড় ধরনের সহিংসতার আশঙ্কা করছেন। ভোটকেন্দ্রে যাওয়া নিয়ে রয়েছে তাদের মাঝে শঙ্কা। শনিবার নির্বাচনী আচরণ লঙ্ঘনের দায়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সবুজকে আটক করছে পুলিশ।
ভবানীপুর ইউপির স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ও ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা মো. আওয়াল (চশমা প্রতীক), আব্দুল মান্নান (আনারস প্রতীক) নৌকার মনোনীত প্রার্থী নবিউল্লাহ নবুর (বর্তমান চেয়ারম্যান) বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, ভবানীপুর ইউনিয়নে ৭নং ওয়ার্ড দুর্লবপুর স. প্রা. বিদ্যালয়, ৮নং ওয়ার্ড আবু মেম্বার বাড়ির দরজার অস্থায়ী কেন্দ্র, ৯নং রাধাবল্লভ স. প্রা. বিদ্যালয়, ৮নং ওয়ার্ড বামনপুর স. প্রা. বিদ্যালয় ও ভবানীপুর ইউনিয়ন পরিষদ কেন্দ্র অত্যাধিক ঝুঁকিপূর্ণ। বহিরাগত ক্যাডার জড়ো করে নির্বাচন বানচাল করার পাঁয়তারা করছে। তার অনুসারীরা মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা করে ত্রাস সৃষ্টি করছে। আমি নির্বাচনের দিন ভবানীপুরে বড় ধরনের সহিংসতার আবাস পাচ্ছি। এসব কেন্দ্রে অতিরিক্ত পুলিশ, প্রশাসন ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের দাবি করছি।
নৌকার মনোনীত প্রার্থী নবিউল্লাহ নবু তার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, চেয়ারম্যানি নির্বাচন এত সহজ নয়। যে কেউ দাঁড়ালেই নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ নেই। ইনশাল্লাহ আমিই তৃতীয়বারের মতো আবারো নির্বাচিত হব।
উপজেলার মদনপুর ইউনিয়নে ২৩ অক্টোবরে নির্বাচনী প্রচারকালে বিজেপির চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মীদের পথে পথে বাধা দিয়ে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই দিন ২০টি মোটরসাইকেল ও বাড়ি-ঘরে হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অন্তত ২০ জন আহত হন। এ বিষয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী জামালউদ্দিন চকেট (আনারস প্রতীক) অভিযোগ করে বলেন, আমার নিকটতম নৌকার প্রার্থী সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমার নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর ও আমার কর্মীদের ঘরে হামলার ঘটনা ঘটায়। নৌকার প্রার্থীর সমর্থন জনশূন্য হওয়ায় দিশাহারা হয়ে আমার আমার প্রচার-প্রচারণায় বারবার হামলা চালাচ্ছে, পিটিয়ে আমার কর্র্মীদের আহত করছে। এই ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনায় সাধারণ ভোটাররা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে আছে। ১১ তারিখের নির্বাচনে মদনপুর ইউপির সব কটি কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছেন তিনি।
নৌকার সমর্থিত প্রার্থী নাসির উদ্দিন নান্নু বলেন, প্রতিপক্ষ আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা রটনা রটাচ্ছে। এই ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি বা ঘটবেও না। ১১ তারিখের নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হলে আমি আবারো নির্বাচিত হব।
উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায় দৌলতখান উপজেলায় মোট ভোটার ১ লাখ ১৩৯ জন। আসছে ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্রসহ চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন ১৭ জন। তার মধ্যে চর খলিফা ইউনিয়নে বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় অমি চৌধুরী (নৌকা) বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া সাধারণ সদস্য পদে ১৯৬ ও সংরক্ষিত আসনে ৫৬ জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।
নির্বাচনে সহিংসতার প্রশ্নে উপজেলা নির্বাচন কমিশনার আব্দুস সালাম খাঁন বলেন, দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এই বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা হয়েছে, সেখানে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও জেলা নির্বাচন অফিসার ছিলেন। এবারের নির্বাচনে যে প্রার্থী বা তার সমর্থকরা যদি নির্বাচনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করে তাহলে কঠোর হস্তে তাদের দমন করা হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়