এএসপি আনিসুল হত্যা মামলার আসামির মৃত্যু

আগের সংবাদ

ভাড়া বাড়ানো কতটা যৌক্তিক

পরের সংবাদ

বাবরদের প্রতিপক্ষ দুর্বল স্কটল্যান্ড

প্রকাশিত: নভেম্বর ৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দুই হট ফেবারিট ভারত ও নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে এখন আসরের বড় পরাশক্তি পাকিস্তান। চার ম্যাচের সবকটিতে জিতে ইতোমধ্যে আসরে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছেন বাবর আজমরা। নিজেদের শেষ ম্যাচে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে জয় পেলে অপরাজিত থেকে সেমিতে যাবেন তারা। এদিকে প্রায় এক যুগ পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এসে ভালোই বাজিমাত করেছে স্কটল্যান্ড। বাছাইপর্বে বাংলাদেশ, ওমান, পাপুয়া নিউগিনিকে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে তারা খেলছে মূলপর্বে। তবে মূলপর্বে কোনো জয়ের দেখা পায়নি ইউরোপের দেশটি। তাই অন্তত শেষ ম্যাচে একটি জয় নিয়ে দেশে ফিরতে চাইবে স্কটিশরা। শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামবে উড়ন্ত পাকিস্তান।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তান ও স্কটল্যান্ড গতকাল পর্যন্ত মুখোমুখি হয়েছিল একবার। ২০০৭ সালে টি-টোয়েন্টির বিশ্বকাপের প্রথম আসরে দক্ষিণ আফ্রিকার ডার্বানে সেদিন জয় তুলে নিয়েছিল পাকিস্তানিরা। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ওভার শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৭১ রান তুলে নেয় শহিদ আফ্রিদিরা। জবাবে ব্যাট করতে নেমে স্কটিশদের ইনিংস গুঁড়িয়ে যায় মাত্র ১২০ রানে। উমর গুল ও শহিদ আফ্রিদি ৪ উইকেট করে ৮ উইকেট শিকার করে তাদের ব্যাটিং লাইন আপ ধসে দেন। সব মিলিয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে দুদলের দেখা হয়েছে তিনবার। সবকটি ম্যাচেই জয় তুলে নিয়েছে পাকিস্তান। ২০০৭ সালের পর ২০১৮ সালে দ্বিতীয় দেখায় ৪৮ রানের বড় জয় পায় পাকিস্তান। এরপর একই বছর সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ৮৪ রানের বড় জয় তুলে নেয় পাকিস্তান।
এদিকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তানের অর্জনের খাতায় ট্রফির সংখ্যা এক, ২০১০ সালে। তবে বিশ্বকাপের প্রথম আসর থেকেই দুর্দান্ত পাকিস্তান। তাদের অর্জনের খাতায় ট্রফির সংখ্যা হতে পারত দুই। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে প্রথম আসরের ফাইনালে চিরপ্রতিদ্ব›দ্বী ভারতের বিপক্ষে হেরে ট্রফি হাতছাড়া করে তারা। পরের আসরে অবশ্য আর ভুল করেনি পাকিস্তান। ইংল্যান্ডের লর্ডসে দ্বিতীয় বিশ্বকাপ আসরের ফাইনালে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে আক্ষেপ ঘুচিয়ে ঘরে ট্রফি তোলে পাকিস্তান বাহিনী। এরপর অবশ্য পরপর চার আসরে নিজেদের তুলে ধরতে পারেনি পাকিস্তান। তবে চলতি আসরটা দুর্দান্ত শুরু করেছে বাবর আজমের নেতৃত্বাধীন দলটি। আইসিসি টি-টোয়েন্টি র‌্যাঙ্কিংয়ে পাকিস্তানের বর্তমানে অবস্থান দুইয়ে। র‌্যাঙ্কিং পরিসংখ্যান, পারফরম্যান্স, অভিজ্ঞতা সব দিক দিয়ে স্কটল্যান্ডের চেয়ে বেশ এগিয়ে পাকিস্তান। তবে স্বল্প বলের খেলায় যে কেউই চমক দেখিয়ে জয় তুলে নিতে পারে। তাই স্কটিশদের ছোট করে দেখার সুযোগ নেই বাবরদের।
এদিকে চলতি বিশ্বকাপের যাত্রাটা দারুণভাবেই শুরু করেছিল স্কটল্যান্ড। ২০১০ সালের পর প্রথমবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূলপর্বে খেলছে তারা। অথচ ব্যাটিং, বোলিংয়ে যেন অজ্ঞিতায় পরিপূর্ণ একটি দল। বাছাইপর্বের প্রথম ম্যাচেই তারা হারিয়েছে শক্তিশালী বাংলাদেশকে। এরপর একে একে ওমান ও পাপুয়া নিউগিনিকে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে তারা মূলপর্বের লড়াইয়ে নেমেছে। অবশ্য মূলপর্বে তারা আর কোনো আলোর মশাল জ¦ালাতে পারেনি। মূলপর্বে তারা টানা চার ম্যাচে হেরে স্বদেশে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছে। দেশে যাওয়ার আগে অন্তত একটি জয় নিয়ে মাঠে ফিরতে চায় তারা। কিন্তু চলতি আসরের হট ফেবারিট পাকিস্তানের বিপক্ষে জয় পাওয়া কি সহজ ব্যাপার?
টি-টোয়েন্টি র‌্যাঙ্কিংয়েও বেশ ভালো অবস্থানে আছে পাকিস্তান। ২৬৫ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে আইসিসি টি-টোয়েন্টি র‌্যাঙ্কিংয়ে পাকিস্তানের অবস্থান দুইয়ে। অন্যদিকে ১৮৭ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে র‌্যাঙ্কিংয়ে তাদের অবস্থান ১৪তম। র‌্যাঙ্কিং, পরিসংখ্যান সব কিছুতেই এগিয়ে পাকিস্তান। তার ওপর বাবর, রিজওয়ানদের দায়িত্বশীল ব্যাটিং প্রতিপক্ষের বোলারদের হতাশার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। আর শাহিন আফ্রিদির বোলিং কারিশমায় প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানরা ঘায়েল হয়ে যেতে পারেন মুহূর্তে। হারিস রউফের গতির কাছে দিশাহারা হবে বিপক্ষ দলের ব্যাটসম্যানরা তাতেও নেই সন্দেহ। তবে ক্রিকেটে অঘটনের ঘটনাও কম না। জশ ড্যাবেই, ব্রাড হুইল, সাফিয়ান শরিফ, মার্ক ওয়াটরা বোলিংয়ে অঘটন ঘটাতে পারেন যে কোনো মুহূর্তে।
চলতি বিশ্বকাপ আসরে পাকিস্তান নিজেদের চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে সাফল্য পেয়ে যাচ্ছেন। সংযুক্ত আরব আমিরাতে তাদের লক্ষ্য ছিল চিরপ্রতিদ্ব›দ্বী ভারতকে হারানো এবং সিরিজ নিয়ে টালবাহনা করা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয় তুলে প্রতিশোধ আদায় করা। সে মিশনে যাত্রা করে প্রথমে ভারতকে ১০ উইকেটের ব্যবধানে পরাজিত করে পাকিস্তান। যেটি এখনো পর্যন্ত টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ব্যবধানের জয় পাকিস্তানের। তাছাড়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এবং ওয়ানডে বিশ্বকাপে এটাই ভারতের বিপক্ষে প্রথম জয় পাকিস্তানের। এরপর আসরে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে ৫ উইকেটে পরাজিত করে পাকিস্তান। এই গ্রুপের যে ২টি দল সবচেয়ে শক্তিশালী ছিল সেই ২টি দলকে পরাস্ত করেছে পাকিস্তান। তৃতীয় ম্যাচে তারা আফগানিস্তানকে হারায় ৫ উইকেটের বড় ব্যবধানে। আসরের চতুর্থ ম্যাচে নামিবিয়ার বিপক্ষে ৪৫ রানের জয় পায় পাকিস্তান। টানা ৪ ম্যাচে জয় তুলে নিয়ে এখন আসরে শিরোপা জয়ের সবচেয়ে সম্ভাবনাময়ী দল পাকিস্তান। তাছাড়া ভারত ও নিউজিল্যান্ডের মতো শক্তিশালী দলকে হারিয়ে বিশ্বকাপে এখন হট ফেবারিটের তালিকায় সবার উপরে পাকিস্তান। সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিশ্বকাপের চলতি আসরে তাই চ্যাম্পিয়নের জোর দাবিদার বাবর আজমরা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়