এএসপি আনিসুল হত্যা মামলার আসামির মৃত্যু

আগের সংবাদ

ভাড়া বাড়ানো কতটা যৌক্তিক

পরের সংবাদ

প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা : প্রশাসনে থাকা সাম্প্রদায়িক শক্তিকে চিহ্নিত করতে হবে

প্রকাশিত: নভেম্বর ৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : দেশজুড়ে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের প্রতিবাদে আয়োজিত চট্টগ্রামের সর্বস্তরের সংস্কৃতিকর্মী ও সচেতন নাগরিক সমাজের গণসমাবেশে বক্তারা বলেন, অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়ার চেতনায় ধর্ম-বর্ণ নির্বিশিষে সব শ্রেণিপেশার মানুষের অংশগ্রহণে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। কিন্তু সেই অসাম্প্রদায়িক চেতনা আজ কোথায়? ’৭৫-এর পর দেশের সংবিধান থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা সরে গেছে। রাষ্ট্রের কোনো ধর্ম থাকতে পারে না। সংবিধান থেকে রাষ্ট্র ধর্ম বাদ দিয়ে সর্বস্তরে ধর্ম নিরপেক্ষতা কার্যকর করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়ে তুলতে হবে। সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। বক্তারা বলেন, প্রশাসনের অভ্যন্তরে এবং সরকারি দলের ভেতরে ঘাপটি মেরে থাকা সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে চিহ্নিত করে অপসারণ করতে হবে। সাংস্কৃতিক চর্চার ক্ষেত্র বিস্তৃত এবং শিক্ষাব্যবস্থায় প্রগতিশীলতার ধারা, অসাম্প্রদায়িকতা ফিরিয়ে আনতে হবে।
গতকাল শনিবার বিকালে নগরের ডিসি হিল মুক্তাঙ্গনে এই গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। কবি ও সাংবাদিক আবুল মোমেনের সভাপতিত্বে গণসমাবেশে বক্তব্য রাখেন শহীদ জায়া মুক্তিযোদ্ধা বেগম মুশতারি শফি, মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাহফুজুর রহমান, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতা অধ্যাপক রণজিৎ দে, অধ্যক্ষ আনোয়ারা আলম, বাংলাদেশ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মো. জাহাঙ্গীর, প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন আবৃত্তিকার রাশেদ হাসান। গণসমাবেশে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল সংগঠক, কবি-সাহিত্যিক, শিল্পী, সংস্কৃতিকর্মী, পেশাজীবী, ছাত্র-যুব সংগঠকসহ সর্বস্তরের জনতা অংশগ্রহণ করেন। সমাবেশ শেষে সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড-ফেস্টুন সংবলিত একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
বেগম মুশতারি শফি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি সাম্প্রদায়িক দেশের জন্য নয়। এই সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে সর্বস্তরে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। আবুল মোমেন বলেন, মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে রাষ্ট্রধর্ম থাকতে পারে না। আনোয়ারা আলম বলেন, সাম্প্রদায়িক হামলা-নির্যাতনের বিচার হয়নি। বিচার ব্যবস্থার দীর্ঘ সূত্রিতার কারণে এসব ঘটনা বারবার ঘটছে। যতদিন সংবিধানে ধর্ম নিরপেক্ষতা ফিরিয়ে আনা যাবে না, ততদিন মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক চেতনা বাস্তবায়ন করা যাবে না। মো. জাহাঙ্গীর বলেন, ক্ষমতা, ভোট ও লুটপাটের জন্য এদেশে বারবার সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা ঘটছে। রাজনৈতিক দলগুলো সাম্প্রদায়িক অপশক্তির সঙ্গে আপস করছে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য।
অধ্যাপক রণজিৎ দে বলেন, রাষ্ট্রধর্ম মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থি। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে শক্তি দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকার পরও রাষ্ট্র ধর্ম কেন তুলতে পারেনি? দেলোয়ার মজুমদার বলেন, ’৭৫-এর পর দেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার উল্টো ধারায় চলতে শুরু করে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর আশা ছিল, সত্যিকার অর্থে মুক্তিযুদ্ধের ধারায় অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়ে তোলা সম্ভব হবে। কিন্তু এই দলটিও সাম্প্রদায়িক অপশক্তির সঙ্গে আপস করেছে। নানাভাবে পৃষ্ঠপোষকতা দেয়া হয়েছে।
তিনি আওয়ামী লীগকে পরিশুদ্ধ করে বঙ্গবন্ধুর ধারায় ফিরিয়ে আনার জন্য নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান। ডা. মাহফুজুর রহমান প্রশাসনের অভ্যন্তরে থাকা সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে পৃষ্ঠপোষকতা ও উসকানি দানকারীদের অপসারণের আহ্বান জানান।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়