এএসপি আনিসুল হত্যা মামলার আসামির মৃত্যু

আগের সংবাদ

ভাড়া বাড়ানো কতটা যৌক্তিক

পরের সংবাদ

নাব্য ও শ্রমিক সংকট : নোয়াপাড়া নৌবন্দরে ডিজিটাল ছোঁয়া

প্রকাশিত: নভেম্বর ৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

তানভীর আহমেদ : দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর মংলা হলেও যশোরের অভয়নগর উপজেলার নোয়াপাড়া নৌবন্দর দিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সময়মতো পৌঁছানো হয় সরকারি-বেসরকারি মালামাল। ভৈরব নদের কারণে এই বন্দরে ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার দিন দিন বেড়েই চলেছে। তবে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী ও ঘাট মালিক নাব্য সংকটের অজুহাত দেখিয়ে প্রতিনিয়ত দখলের প্রতিযোগিতা করছে। নদের পাড়ে কৃত্রিম চর বানিয়ে গড়ে তোলা হচ্ছে অবৈধ ঘাট। ফলে নদের বাঁক পরিবর্তন হয়ে গেছে। ভাঙনের কবলে পড়ে বিলীন হয়েছে শত শত বিঘা ফসলি জমি। তারপরও নাব্য ও শ্রমিক সংকট সত্ত্বেও ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহার করে সারাদেশে সঠিক সময়ে মালামাল পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।
যশোরের অভয়নগর উপজেলার নোয়াপাড়ার ওপর দিয়ে বয়ে চলেছে ভৈরব নদ। নোয়াপাড়া বাজারে সার, সিমেন্ট আর কয়লা ব্যবসার বেচাকেনা বেশ জমজমাট। প্রতিদিন হাজার হাজার ট্রাক থেকে মালামাল লোড-আনলোড হয়ে থাকে এখানে। কোটি কোটি টাকা কেনাবেচা হয়। এই নদ দিয়ে প্রতিদিন শত শত জাহাজ, বার্জ ও কার্গো বোঝাই করে মালামাল আনা নেয়া করা হয়ে থাকে।
সরকারি-বেসরকারি আমদানিকৃত সার বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়ে থাকে এই বন্দর থেকে। পরিমাণের তুলনায় শ্রমিক সংকটের কারণে এই সরবরাহ প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে। বর্তমান ডিজিটাল সিস্টেম ফলো করে কিছু জায়গায় অল্প সময়ে বেশি সেবা দেয়ার লক্ষ্যে এবং কৃষি কাজে সহযোগিতার জন্য এখানে গড়ে উঠেছে মিনি বন্দর। যেখানে স্থাপন করা হয়েছে অত্যাধুনিক প্যাকার মেশিন। এর মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টা লোড-আনলোড করে সারাদেশে সঠিক সময়ে সরকারি-বেসরকারি মালামাল পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। ফলে বন্দরে লেগেছে ডিজিটালের ছোঁয়া। একই সঙ্গে কর্মসংস্থান হয়েছে হাজারো মানুষের।
স্থানীয় বাসিন্দরা জানান, রাস্তার উন্নয়ন এবং নদীকে ঘিরে তৈরি হয়েছে এই বন্দরনগরী। দক্ষিণাঞ্চলের সবাই এটিকে বাঁচিয়ে রাখতে চায়। তাই সরকারের কাছে আমাদের দাবি এই নদীর নাব্যকে ধরে রাখা এবং ধারাবাহিকভাবে ড্রেজিং করা হোক। যাতে এর ধারা অব্যাহত থাকে।
নোয়াপাড়া সার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহজালাল হোসেন বলেন, দখলের বিষয়ে নোয়াপাড়া বন্দর কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী সবাই এক সঙ্গে কাজ করতে হবে। নদীরক্ষায় বন্দর কর্তৃপক্ষকে সার্বিক সহযোগিতা করতে হবে।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ অভয়নগর নোয়াপাড়া নদী বন্দরে দায়িত্বরত সহকারী পরিচালক মো. মাসুদ পারভেজ বলেন, বারবার ঘাট মালিকদের নোটিশ দেয়া হয়েছে। দখল অপসারণে মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দ চেয়ে আবেদনও করা হয়েছে। নতুন করে যারা নদী দখলের চেষ্টা করছে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি আরো বলেন, ভৈরব নদ বাঁচিয়ে রাখতে এ অঞ্চলের মানুষের এগিয়ে আসা উচিত। ঘাট মালিকরা স্ব স্ব উদ্যোগে দখলকৃত অংশ অপসারণ না করলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে বলে তিনি জানান।
প্যাকার মেশিন ব্যবহার করে সারাদেশে মালামাল পৌঁছে দেয়া আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান নোয়াপাড়া গ্রুপের চেয়ারম্যান ফাইজুর রহমান বকুল ভোরের কাগজকে বলেন, নোয়াপাড়া বন্দরের মাধ্যমে সরকারি মালামালের ৭০ ভাগ সারাদেশে পৌঁছানো হয়।
ইতোপূর্বে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে লোড-আনলোড করে গন্তব্যে পৌঁছানোর কাজ করা হতো। এতে অনেক বেশি সময় লাগার কারণে কৃষকের কাছে সময়মতো সার পৌঁছানো সম্ভব হতো না। এতে কৃষকের পাশাপাশি আমদানিকারকদেরও হাজার হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হতো। এই অবস্থায় প্যাকার মেশিন ব্যবহারের উদ্যোগ নেয়া হয়। এই মেশিন ব্যবহার করে লাইটার জাহাজ থেকে মালামাল আনলোড করে অল্প সময়ের মধ্যে প্যাকিং হয়ে ট্রাকে লোড দেয়া হয়। ফলে দ্রুত ও সঠিক সময়ে সরকারি মালামাল কৃষকের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়