বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি : জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে গতকাল শনিবার দ্বিতীয় দিনের মতো বেনাপোলেও চলেছে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট। বন্ধ ছিল আন্তঃজেলার বাস চলাচল। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
অঘোষিত গণপরিবহন ধর্মঘটে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন ভারতফেরত পাসপোর্ট যাত্রীরা। শুক্রবার সকাল থেকে যাত্রীরা তাদের গন্তব্যে পৌঁছাতে না পেরে ভিড় করেছেন পরিবহন কাউন্টারসহ হোটেলে। আবার অনেকে আত্মীয়স্বজনের বাড়িতেও যাচ্ছেন। সবচেয়ে বেশি অসুবিধায় পড়েছেন দূর-দূরান্তের যাত্রীরা।
বেনাপোল বাসস্ট্যান্ডের যাত্রী সোহেল রানা জানান, তিনি যশোর যাবেন ডাক্তার দেখাতে। সকালে স্ট্যান্ডে এসে জানতে পারেন পরিবহন ধর্মঘট। কোনো বাস চলছে না। বেনাপোল থেকে যশোর পর্যন্ত বাস ভাড়া ৫০ টাকা। বাস বন্ধ থাকায় ইজিবাইকে ভাড়া দাবি করেছে দেড়শ টাকা। উপায় না থাকায় ওই টাকা দিয়েই তাকে গন্তব্যে যেতে হয়েছে।
বেনাপোল থেকে কোনো পরিবহন ও বেনাপোল-যশোর সড়কে কোনো বাস চলছে না। এই সুযোগটি কাজে লাগাচ্ছে অটোরিকশা, ভ্যান ও ইজিবাইক চালকরা। যেখানে ভাড়া সাধারণ সময়ে ১৫ টাকা ছিল সেই জায়গায় গতকাল তারা ২৫ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত নিয়েছেন।
ইজিবাইক চালক বাবুল হোসেন জানান, পরিবহন বন্ধ থাকায় তাদের আয় একটু বেশি হচ্ছে। তবে, খরচও বেড়ছে। তাই জীবনের ঝুঁকি
নিয়ে বেশি ভাড়ায় যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছে দিচ্ছেন।
ভারত থেকে আসা ঢাকার পাসপোর্ট যাত্রী আহসান হাবিব ইমন বলেন, চিকিৎসা শেষে বেনাপোল এসে চরম দুর্ভোগে পড়েছি। আমি আর আমার ভাই দুইজন মিলে চেন্নাই থেকে ফিরে পরিবহন ধর্মঘট থাকায় বাড়ি যেতে পারছি না।
এদিকে দেশের বাইরে প্রায় ১৫ দিন থাকায় টাকা পয়সাও ফুরিয়ে গেছে। এভাবে ধর্মঘট চললে চরম সমস্যা হবে।
বেনাপোল কুয়াকাটা এক্সপ্রেস কাউন্টারের ম্যানেজার জসিম উদ্দিন জানান, তাদের দাবি তেলের মূল্য যখন বেড়েছে তখন ভাড়াও বাড়বে। নয়তো তেলের মূল্য কমাতে হবে। সরকার এই সিদ্ধান্তে না আসা পর্যন্ত দেশের সব জেলায় চলবে পরিবহন ধর্মঘট।
শ্রমিক নেতারা বলেন, করোনা মহামারি সাধারণ মানুষের আয় ও জীবনযাপনে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। করোনার প্রকোপ কমে এলেও সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা এখনো স্বাভাবিক হয়নি। অধিকাংশ মানুষের আয় কমে গেছে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়ানোয় সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বেড়ে যাবে।
যশোর জেলা পরিবহন সংস্থা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আজিজুল আলম মিন্টু জানান, করোনায় সবচেয়ে ক্ষতি হয়েছে পরিবহন খাতের। তেলের দাম এক লাফে ১৫ টাকা বৃদ্ধি এক রকম জুলুম।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।